বরগুনা: আমার লেখাপড়ার খরচ এখন কে দেবে? আমার আর লেখাপড়া করা হবে না। আমাদের সংসার চলবে কেমন করে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন ইউক্রেনের জলসীমায় বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’তে রকেট হামলায় নিহত নাবিক হাদিসুর রহমান আরিফের (২৮) ছোটভাই তারেক হোসাইন।
বৃহস্পতিবার (০৩ মার্চ) বিকেলে বেতাগী উপজেলার কদমতলা গ্রামের নিজ বাড়িতে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে এমনই বিলাপ করছিলেন তারেক।
নিহত নাবিক হাদিসুরের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের ছেলে। তিনি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত ছিলেন।
নিহত হাদিসুরের স্বজনরা জানান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে নোঙর করা অবস্থায় ২৯ জন ক্রুসহ আটকা পরে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধি। ওইদিনই বাড়িতে আটকে পরার খবর জানান নাবিক হাদিসুর। গত ০২ মার্চ রাতে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার জন্য নেটওয়ার্কের সিগন্যাল পেতে জাহাজের কেবিন থেকে ব্রিজে আসেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পরেই জাহাজটি লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালায় রাশিয়ান সেনারা। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন হাদিসুর।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে ২৯ জন নাবিক নিয়ে আটকা পড়েছিল 'বাংলার সমৃদ্ধি'। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের এই জাহাজটি গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছায়। জাহাজটি ইউক্রেন থেকে সিরামিকের কাঁচামাল নিয়ে ইতালিতে যাওয়ার কথা ছিল। তবে যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার পর আর ফিরতে পারেনি। বুধবার (০২ মার্চ) স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টা) পণ্যবাহী ওই জাহাজটিতে রকেট হামলা চালায় রাশিয়ান সেনারা। এতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত হন জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান। জাহাজটিতে থাকা বাকি ২৮ জন নিরাপদ আছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট সাজিদ হুসাইন।
আরও পড়ুন...
>>> ইউক্রেনে আটকে পড়া বাংলাদেশি জাহাজে রকেট হামলা, নিহত ১
>>> ইউক্রেনে নিহত নাবিকের বাড়িতে শোকের মাতম
>>> নাবিকের ফোনে ছিলেন ছোট ভাই, রকেট এসে কেড়ে নিল প্রাণ!
>>> ‘নাবিক হাদিসুরের মরদেহ জাহাজেই সংরক্ষণ করা হয়েছে’
>>> ‘আমার ছেলের লাশটা তোরা আইন্না দে’
>>> বাঁচার জন্য স্বজনদের কাছে নাবিকদের আকুতি
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২২
এসআরএস