ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

উত্তরের পথে সাড়ে ১৩ কিলোমিটারের আতঙ্ক!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২২
উত্তরের পথে সাড়ে ১৩ কিলোমিটারের আতঙ্ক!

টাঙ্গাইল: ঈদে ঢাকা থেকে ঘরে ফিরতে এবারও ভয়াবহ যানজটের মুখে পড়তে পারেন উত্তরবঙ্গের মানুষ। এলেঙ্গা-বঙ্গবন্ধু সেতু দুই লেনের সাড়ে ১৩ কিলোমিটার সড়কের কারণে এ যানজট সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন যানবাহনের চালক ও সংশ্লিষ্টরা।

বঙ্গবন্ধু সেতু টোল প্লাজা সূত্র জানায়, উত্তরবঙ্গসহ ২৪ জেলার যান সেতু পার হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন যানবাহনের সংখ্যা থাকে ১২/১৩ হাজার। কিন্তু ঈদের আগে ৬০/৬৫ হাজারে পৌঁছে। ফলে এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার সড়ক দুই লেনের হওয়ায় যানজট লেগে যায়। এছাড়া সিরাজগঞ্জ অংশেও সড়কের কাজ চলমান। সেখানে কয়েকটি সরু সেতু রয়েছে। এ কারণে পশ্চিম প্রান্তে স্বাভাবিকভাবে যানবাহন টানতে না পারায় পূর্বপ্রান্তের সাড়ে ১৩ কিলোমটিার সড়ক অতিক্রিম করে এলেঙ্গা থেকে মির্জাপুরের গোড়াই পর্যন্ত চার লেনের সড়কও যানজটের কারণে থেমে যায়।

শুক্রবার দুপুরে সরেজমিন মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মির্জাপুরের গোড়াই উড়াল সেতুর কাজ চলমান রয়েছে। তবে এই সেতুটি ঈদের আগেই উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। গোড়াই থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত যানবাহনের চালকরা চার লেনের সুবিধা পেলেও এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত দুই লেনে যানবাহন চালাতে হবে তাদের।  

এদিকে এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত দুই লেনের সড়কের অবস্থাও বেহাল। সড়কের মাঝে মাঝে ফুলে গিয়ে ‘টিউমারের’ মতো সৃষ্টি হয়েছে। আর এ কারণে ওইসব স্থানগুলোতে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। দীর্ঘদিন ধরেই এ অবস্থার সৃষ্টি হলেও এটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।

বগুড়াগামী ট্রাকের চালক আব্দুল আলীম মিয়া জানান, এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত দুই লেনের সড়কে যানবাহন খুবই সতর্কতার সাথে চালাতে হয়। কারণ সড়কে মাঝে মাঝে ‘পাহাড়ের’ মতো সৃষ্টি হয়েছে। অনেক সময় চালকের অজান্তেই ওই উঁচু স্থানে চাকা উঠে গেলে যানবাহন উল্টে গিয়ে বড় বড় দুর্ঘটনাও ঘটে।

যানবাহন চালকদের দাবি, এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত দুই লেন। ফলে চার লেনের গাড়ি যখন দুই লেনে প্রবেশ করবে তখনই ধীর গতিতে চলা যানবাহনগুলো যানজটে রূপ নেবে। এতে করে ঈদের আগে ঘরমুখো মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে।

উত্তরবঙ্গগামী হানিফ পরিবহনের যাত্রী সোলায়মান হাসান জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চার লেনের যানবাহন যখন এলেঙ্গা থেকে সেতুর দিকে দুই লেনে প্রবেশ করে তখনই যানজট সৃষ্টি হয়। ঈদের মধ্যে স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি যানবাহন চলাচল করবে। আর এ কারণে ভয়াবহ যানজটে মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে।

অপরদিকে যানজট নিরসনে পুলিশ লাইনে পরিবহন মালিক, শ্রমিক, থানার কর্মকর্তা, হাইওয়ে পুলিশ, সেতু কর্তৃপক্ষ ও চারলেনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা এবং ঠিকাদাদের সাথে সমন্বয় সভা করেছে জেলা পুলিশ। ঈদের আগে মহাসড়ক স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার।  

ট্রাক চালক জোব্বার মিয়া জানান, সড়কে পুলিশকে দেখে চালকরা ভয় পেয়ে নিয়ম মেনে গাড়ি চালায়। তাই রাস্তায় পুলিশ থাকলে যানজট কম হবে। এছাড়া চালকদের প্রতিযোগিতা বন্ধ করলে দুর্ঘটনার পাশাপাশি যানজটও কমে আসবে।

বঙ্গবন্ধু সেতুর প্রকৌশলী আহসান মাসুদ বাপ্পী বাংলানিউজকে জানান, স্বাভাবিক সময়ে সেতুতে ৬/৭টি লেনে টোল আদায় করা হয়। ঈদের আগে যানজট নিরসনের জন্য সেতুর উভয় পাশে ১৮টি লেনে টোল আদায় করা হবে।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বাংলানিউজকে জানান, যাত্রীরা যানজটে আটকা পড়লে মহাসড়কের পাশে পেট্রোল পাম্প, হোটেল রেস্তোরাঁগুলোতে যাতে শৌচাগার ব্যবহার করতে পারে সে জন্য তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার সড়কের পাশে পাম্প, রেস্তোরাঁ নেই। তাই ওই অংশে ২৫টি অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিরা এগুলো নির্মাণ করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা,  এপ্রিল ২২, ২০২২
নিউজ ডেস্ক 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।