ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

পিবিআই পরিদর্শক মাসুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৯ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২২
পিবিআই পরিদর্শক মাসুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

খুলনা: খুলনা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মঞ্জুরুল হাসান মাসুদের বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন এক কলেজছাত্রী।

পিবিআই পরিদর্শক মাসুদ ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৩১ মে) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন এ অভিযোগ করেছেন কলেজছাত্রী।

সংবাদ সম্মেলন কলেজছাত্রী দাবি করেন, পরিদর্শক মাসুদ তাকে জোর করে ধর্ষণ করেছেন এবং মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিরানসহ তাকে জড়িয়ে বিভিন্ন কুৎসা রটনা করছেন মাসুদ।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে ওই ছাত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পিবিআই পরিদর্শক মাসুদ ইউটিউব চ্যানেলে গান-বাজনা করেন। সেখান থেকে মাসুদের নম্বর সংগ্রহ করেন তিনি। ১০ মে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মোবাইল ফোনের সমস্যার কথা বলে মাসুদ তাকে পিবিআই অফিসে দেখা করতে বলেন। সেখানে গেলে মাসুদ তার ফোনের সবকিছু দেখে ব্যস্ত আছেন বলে পরে দেখা করতে বলেন। এরপর মাসুদ তাকে ফোন কল করে একটি ইমো অ্যাকাউন্ট খুলতে বলেন। পরে ইমোতে তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হতো। গত ১৩ মে ফোন কল দিয়ে তাকে মাসুদ জানান তিনি ঢাকা যাচ্ছেন। ১৪ মে ফোন কল দিয়ে মাসুদ তাকে পরের দিন দেখা করতে বলেন। তখন তিনি মাসুদকে বলেন, পিবিআই অফিসে? মাসুদ প্রতি উত্তরে বলেন না। ১৫ মে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইমোতে কল দিয়ে মাসুদ তাকে ধর্মসভা মন্দিরের সামনে যেতে বলেন। পরে তিনি রিকশায় করে সেখানে গেলে তাকে বলা হয় সাইবার ক্রাইম অফিসে যেতে হবে। এরপর ধর্মসভা মন্দির থেকে মোটরসাইকেলযোগে তাকে ছোট মির্জাপুরের এক‌টি অফিসে নিয়ে যান মাসুদ। রুমের ভেতর যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অপরিচিত এক ব্যক্তি অফিসের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেন। এরপর মাসুদ আমাকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানালে তাকে হত্যার হুমকি দেন মাসুদ। এর আগে তাকে মারধর করাও হয়। ওই অফিস থেকে বের হওয়ার পর তিনি রিকশায় ওঠে সরাসরি থানায় চলে আসেন। মাসুদও মোটরসাইকেল নিয়ে তার রিকশার পিছু নিয়ে থানার গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। এরপর খুলনা থানার একজন পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুনের নম্বর সংগ্রহ করে বিষয়টি তাকে জানাই। পরে খুলনা থানার পুলিশ তাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে আলমত সংগ্রহ করার চেষ্টা করেন। সেখানে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর আমাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।

ওই ছাত্রী অভিযোগ করে বলেন, খুলনা থানার এএসআই মিরান শেখ ও আমাকে নিয়ে মাসুদ বিভ্রান্তিমূলক কথা ছড়াচ্ছেন। আমি মিরান শেখকে চিনি না বলে সংবাদ সম্মেলনে জোর দাবি করেছেন। সোমবার (৩০ মে) মামলাটি আপস করার জন্য মাসুদ সোহেল নামে এক ব্যক্তিকে তার কাছে পাঠিয়েছেন।

এর আগে সোমবার (৩০ মে) দুপুরে মাসুদ সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, তিনি ওই কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করেননি। খুলনা সদর থানার এএসআই মিরান শেখ ওই ছাত্রীকে দিয়ে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মিথ্যা মামলা দিয়েছেন।

তিনি আরও দাবি করেন, মিরানের কাছে তিনি ১৬ লাখ টাকা পাবেন। সেই টাকা না দেওয়ার জন্য মিরান এ ষড়যন্ত্র করেছেন।

তিনি জানান, গত ২৬ মে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। আগামী দুই সপ্তাহ পর খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ তাকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সংবাদ সম্মেলনে মাসুদ দাবি করেন, এক কলেজছাত্রী গত ১০ মে তাকে ফোন কল করে জানান, কয়েকটি ছেলে তার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে কিছু অপ্রীতিকর ছবি আপলোড করেছেন। সেই ছেলেদের শনাক্ত করার জন্য গত ১৫ মে তিনি ওই মেয়ের সঙ্গে নগরীর ছোট মির্জাপুর এলাকায় যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে কাউকে পাইনি। পরে জানতে পারি আমার নামে ধর্ষণের মামলা হয়েছে।

মাসুদ আরও দাবি করেন, খুলনা থানার এএসআই মিরান তার কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা ধার নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা ফেরত না দিয়ে টালবাহানা করছেন। অভিযোগকারী কলেজছাত্র মিরানের পরিচিত এবং তাকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করানো হয়েছে। যাতে টাকা ফেরত দিতে না হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৯ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২২
এমআরএম/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।