ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

মিরপুরে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১১ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০২২
মিরপুরে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া বেতন বাড়ানোর দাবিতে মিরপুর-১০ নম্বরে পোশাক শ্রমকিদরে বিক্ষোভ -ছবি : জিএম মুজিবুর

ঢাকা: নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে মিরপুরে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ শেষ পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া পর্যন্ত গড়িয়েছে।

রোববার (৫ জুন) সকাল থেকেই মিরপুর-১০ ও এর আশে-পাশের সড়কগুলোতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন শ্রমিকরা।

এরমধ্যে বেশকিছু গাড়ি ও আশে-পাশের ভবনে ভাঙচুর চালায় তারা। দুপুরের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অ্যাকশনে যায় পুলিশ। শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করা হয়।

এ সময় শ্রমিকরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকলে দু-পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুপুর ২টার দিকে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে চারপাশে ছড়িয়ে গেলে সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

এর আগে মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্ত্বরে শ্রমিকদের বিক্ষোভে আটকা পড়ড়েন নির্বাচন কমিশনার (ইসি)  মো.আলমগীর হোসেন। এ সময় শ্রমিকরা তার গাড়ি ঘিরে ধরলে তিনি গোলচত্বরের পুলিশ বক্সে অবস্থান নেন। পরে পুলিশ তার গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করলেও শ্রমিকরা রাজি হননি। এভাবে প্রায় আড়াইঘণ্টা অপেক্ষার পর দুপুর ১টার দিকে শ্রমিকদের হাত থেকে তার গাড়ি ছাড়াতে সক্ষম হয় পুলিশ। এরপর তিনি গাড়িতে উঠে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

মূলত, এরপরই অ্যাকশনে যায় পুলিশ। জলকামানসহ পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে যেতে থাকলে শ্রমিকরাও তাদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকেন। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।

এ বিষয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো.মাহবুব জানান, সকাল থেকেই পুলিশ আন্দোলনরত শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু শ্রমিকরা দুপুরের দিকে বিভিন্ন স্থাপনা ও গাড়ি ভাঙচুরের করলে তাদের থামানোর চেষ্টা করা হয়। পরে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করা হয়। শ্রমিকরা সরে গেলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।

এদিন সকাল থেকেই মিরপুর-১০, ১১, ১২ ও ১৪ নম্বর এলাকার আশপাশের সড়কে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন তারা। এতে রাজধানীর প্রায় সব এলাকা জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

এর আগে শনিবার (৪ জুন) বিকেলে বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে চলা বিক্ষোভে মিরপুরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) একটি গাড়ি ভাঙচুর করেন পোশাক শ্রমিকরা। এ সময় পুলিশের দুটি মোটরসাইকেলেও আগুন দেওয়া হয়।

রোববার (৫ জুন) শ্রম ভবনে আয়োজিত এ বিষয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, মিরপুরের ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে রাজনীতি। মাহমুদুর রহমান মান্না, ড. কামাল, আ স ম আব্দুর রবদের মতো কিছু পথহারা রাজনীতিবিদ মিরপুরের ঘটনায় উস্কানি দিয়ে শ্রমিকদের রাস্তায় নামিয়ে এনেছেন।

তারা বিএনপির হাত শক্তিশালী করে সরকারকে উৎখাত করতে চান। তারা চান এখানে গুলি চলুক, পরিস্থিতি ঘোলাটে হবে। কিন্তু শেখ হাসিনা শ্রমিকদের রক্ত চান না।

তিনি বলেন, আমরা শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত দাবির পক্ষে আছি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বৈশ্বিকভাবে সব জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন শ্রমিকরা। যেহেতু তাদের আয় কম, তাই আমরা শ্রমিকদের দাবি তাদের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরব। শেখ হাসিনা সরকার শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকায় উন্নীত করেছেন।  

শ্রমিকদের কারখানায় ফেরত যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে শাজাহান খান বলেন, আজকের এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকরা লাভবান হবেন না।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২২
পিএম/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।