ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ৩ মাসের জেল-জরিমানা ও ভবন সিলগালা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২২
এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ৩ মাসের জেল-জরিমানা ও ভবন সিলগালা

ঢাকা: এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এক নম্বর ওয়ার্ডের খিলগাঁও এলাকার একটি বাড়ির তত্ত্বাবধায়ককে তিন মাসের জেল ও আরেকটি বাড়ি সিলগালা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া বাড়ির আঙিনা ও অভ্যন্তরে প্রচুর পরিমাণে এডিস মশার লার্ভা থাকায় একটি ভবন মালিককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

 

শনিবার (২৩ জুলাই) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সোয়ে মেন জো এর তত্ত্বাবধানে করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তায়েব-উর-রহমান আশিক খিলগাঁও এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করেন।  

অঞ্চল-২ এ অভিযানকালে আদালত মোট ৩৮টি ভবন পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে ৫০০/সি ও ৫০০/৪/সি হোল্ডিংস্থিত দুটি ভবনে এডিস মশার প্রচুর লার্ভা পাওয়া যায়। এ সময় আদালত দুটি ভবন মালিককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। পরে ৫০০/সি ভবনটির মালিককে জরিমানা করলেও ৫০০/৪/সি ভবনটির মালিক তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং আদালত পরিচালনাস্থলে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হন। এ সময় ভবন মালিকের ভাগ্নে ও ভবনটির তত্ত্বাবধায়ক সুলতানকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

এছাড়া অভিযানকালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে ৭০/সি হোল্ডিংস্থিত পার্শ্ববর্তী রোডে ‘বাতায়ন’ নামক একটি ডেভেলপার কোম্পানি কর্তৃক নির্মাণাধীন ভবনে প্রচুর লার্ভা থাকার খবর আসে। পরে আদালত সেখানে গিয়ে জানতে পারেন যে, ভবনটির কার্যক্রম ও তদারকির সঙ্গে সম্পৃক্ত লোকজন ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েক মিনিট আগে তড়িঘড়ি করে ভবনটির মূল ফটকে তালা লাগিয়ে চলে যান। এ সময় আদালত ভবনটি সিলগালা করে দেন।  

অভিযান প্রসঙ্গে অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সোয়ে মেন জো বলেন, জেল-জরিমানা করে মানুষকে এডিস মশার প্রকোপ থেকে রক্ষা করা যাবে না। আমরা কাউকে জেল-জরিমানা করতেও চাই না। কিন্তু কোনও মানুষ যখন ডেঙ্গু রোগের বিস্তার ঘটার সহায়ক ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করে, তখন আমরা বাধ্য হয়ে তাদের দণ্ড আরোপ করি।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নগরবাসীর সচেতনতা একান্ত জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা নগরবাসীকে নিজ বাড়ির অভ্যন্তরে, আঙিনায় এবং আশপাশে যাতে স্বচ্ছ পানির আধার সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে সচেতন হতে এবং সজাগ থাকতে অনুরোধ করছি। প্রয়োজনে প্রতিদিনকার জমা হওয়া স্বচ্ছ পানি ফেলে দিন এবং ডেঙ্গু রোগ থেকে নিজেও মুক্ত থাকুন, আশপাশের প্রতিবেশীদেরও ডেঙ্গু রোগ থেকে মুক্ত রাখুন।

পরে অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সোয়ে মেন জো রাজারবাগ পুলিশ লাইনে যান এবং সেখানে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ রোধে পুলিশ সদস্যদের কাছে লিফলেট বিতরণ করেন এবং তাদের আরও বেশি সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। এ সময় সেখানে পুলিশের অনেক সদস্য জড়ো হয়ে এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।  

এছাড়া দক্ষিণ সিটির অন্যান্য আঞ্চলেও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। সবমিলিয়ে আজ মোট ৮৩টি বাসাবাড়ি, নির্মাণাধীন ভবনে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ছয়টি বাসাবাড়ি ও ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ছয় মামলায় ৪৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।       

অভিযানকালে অন্যান্যের মধ্যে এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মাহবুবুল আলম, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. এনামুল হক, অঞ্চল-২ এর সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবু সাদাত মোহাম্মদ সালেহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ২০২৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২২               
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।