ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বিদ্যুতের ছেঁড়া তারে প্রাণ গেল মা ও দুই সন্তানের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
বিদ্যুতের ছেঁড়া তারে প্রাণ গেল মা ও দুই সন্তানের প্রতীকী ছবি।

বরিশাল: বরিশালের বাকেরগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের ছিঁড়ে পড়ে থাকা তারে স্পৃষ্ট হয়ে দুই শিশু সন্তানসহ মায়ের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।

নিহত নারী উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের ঢালমারা গ্রামের রিয়াজ মোল্লার স্ত্রী সনিয়া বেগম (২৫), তার নয় বছর বয়সী ছেলে সালমান ও ১২ বছর বয়সী মেয়ে রেজবীনা।

বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, ছিঁড়ে পড়া বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে মা ও তার দুই শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে রয়েছি। বিস্তারিত জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাকেরগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া পল্লী বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পানির মধ্যে পড়ে রয়েছে। পাশে লেবু গাছ রয়েছে। প্রথমে ছেলে শিশুটি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তাকে রক্ষা করতে মা ও বোন গিয়ে তারাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে।  

ইউএনও আরও বলেন, ঘটনাস্থলে তিনিসহ পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএমও রয়েছেন। তারা ঘটনার তদন্ত করছেন। দায়িত্ব অবহেলায় এ ঘটনা ঘটলে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

ইউপির চার নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোস্তফা কামাল হাওলাদারের স্ত্রী মমতাজ বেগম জানান, বাড়ির পাশে বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া পল্লী বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে ডোবায় পড়েছিল। দুই শিশু লেবু ছিঁড়ে খেল ছিল। এ সময় লেবু ডোবায় পড়ে যায়। ওই লেবু আনতে ছেলে নেমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তখন মেয়ের চিৎকারে মা এসে তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে স্পৃষ্ট হয়। তখন মেয়ে গিয়ে মাকে ধরে সেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছে।

তার কীভাবে ছিঁড়ে পড়েছিল তা কেউ জানাতে পারেনি জানিয়ে মমতাজ বেগম বলেন, বিদ্যুতের লোকদের বলা হয়েছিল বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া তার যে কোনো সময় ছিঁড়ে পড়তে পারে। কিন্তু তারা গুরুত্ব দেয়নি।

স্থানীয়রা বলছেন, তার ছিঁড়ে পড়ার খবরটিও বিদ্যুৎ অফিসে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা আসতে বিলম্ব করায় দুর্ঘটনাটি ঘটেই গেল। যেই পল্লী বিদ্যুতের লোকজন মৃত্যুর দুর্ঘটনার খবর পেয়েছে, তারা ঘটনাস্থলে না এসে মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুতগতিতে পালিয়ে গেছে। তারা এলে হয়তো কাউকে বাঁচানো যেতো।  

পল্লী বিদ্যুত সমিতি-১ বাকেরগঞ্জ জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার সুবাস চন্দ্র দাস বলেন, ঘটনা তদন্তে পৃথক দুইটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তাদের রোববারের (২৮ এপ্রিল) মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়ে সহকারী জেনারেল ম্যানেজার বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন না পেলে বিষয়টি বলতে পারবো না।

এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আর পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত তারা নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছেন। তবে নিহতদের পরিবার মামলা দিলে তা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।