ঢাকা: জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় নাইজেরিয়া, ইরানের মতো সমৃদ্ধ দেশগুলোর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে ডি-এইট চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডি-৮ সিসিআই)।
সোমবার (২৫ জুলাই) ডি-৮ সিসিআই প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ডি-৮ ভূক্ত দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ একটি ভালো অবস্থানে রয়েছে। জ্বালানি সংকট থেকে উত্তরণে আমাদের ভাবনা হচ্ছে এতদিন হয়তো আমরা একটি নির্দিষ্ট অপশনের ওপর নির্ভর ছিলাম। এখন আমরা যেটি চাচ্ছি, যারা জ্বালানি বিষয়ে ভালো অবস্থায় আছে যেমন নাইজেরিয়া, ইরানের মতো দেশগুলোর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে চুক্তি করতে। যাতে ভবিষ্যতে সংকটকালীন আমরা তাদের থেকে সুবিধাভোগী হতে পারি। মোটের ওপর, যে দেশ যে সেক্টরে ভালো অবস্থায় আছে, তাদের সঙ্গে পারস্পরিক সুযোগ-সুবিধা আদান-প্রদানের লক্ষ্যে আমরা কাজ করবো।
এ বছরের ফোরামে বাংলাদেশ ও অন্যান্য সাতটি সদস্য দেশ মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান এবং তুরস্কের মধ্যকার ছয়টি ক্ষেত্রের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
ক্ষেত্রগুলো হচ্ছে- খনিজ ও শক্তি, বস্ত্র-পোশাক, হালকা প্রকৌশল ও চামড়াজাত পণ্য, পরিবহন, কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন, কৃষি, জলজ সম্পদ, পশু সম্পদ, ইলেক্ট্রনিক্স উপাদান, সেমিকন, সাইবার নিরাপত্তা সরঞ্জাম উপাদান, লজিস্টিকস ও পরিবহন সরঞ্জাম, আইসিটিতে পেশাদার সেবা, অর্থনৈতিক খাতে প্রযুক্তি সক্ষম করা, ৪১ আর, রোবোটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধি বা এআই, আইওটি, সাইবার সিকিউরিটিজ দক্ষতা, গবেষণা ও উন্নয়ন।
শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, ডি-৮ এর ২৫ বছর পূর্তিতে আমি আশা করি, এবারের এক্সপোর মাধ্যমে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে ও ব্যবসার নতুন সুযোগ উন্মোচনে সুযোগ সৃষ্টি করবে। কোভিড ১৯ মহামারির ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ঝুঁকি মোকাবিলায় এবং বৈশ্বিক উন্নয়নে সাড়া প্রদানের অংশ হিসেবে কৃষি খাত, উৎপাদন খাত, টারশিয়ারি খাত, কোয়াটার্নারি খাতজুড়ে ভ্যালু চেইন ইন্টিগ্রেশনের ক্ষেত্রে পিটিএ অনুমোদন ও সম্পৃক্ততার জন্য ডি-এইট সিসিআই একটি কৌশলগত রোডম্যাপ গঠনে কাজ করছে।
তিনি বলেন, অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে সাধারণ পরিষদে সম্ভাব্য রোডম্যাপ ও এর কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হবে। পরদিন এটি ডি-এইট এর মিনিস্ট্রিয়াল পর্যায়ে উপস্থাপন করা হবে। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব দেওয়া হবে।
দ্বিতীয় দিনব্যাপী অনুষ্ঠেয় এই আয়োজনে বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্কের চেম্বারস অব কমার্সের সভাপতিরা, প্রতিনিধি দল, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং ব্যবসায়ী নেতারা অংশগ্রহণ করবেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডি-৮ মিনিস্ট্রিয়াল এর চেয়ারম্যান এ কে আব্দুল মোমেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং ডি-৮ এর মহাসচিব ও রাষ্ট্রদূত ইসিয়াকা আব্দুল কাদির ইমাম।
এছাড়া ৮টি সদস্য দেশের ৪০ জনেরও অধিক প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে। আগত দর্শনার্থীদের জন্য এক্সপো জোন-এ ‘বিল্ড ইন বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন’-এ বাংলাদেশের স্থানীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের স্টল থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে ডি-৮ সিসিআই এর সেক্রেটারি জেনারেল আশরাফুল হক চৌধুরী এবং এফবিসিসিআই এর পরিচালক সুবীর রঞ্জন দাশ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২২
এমকে/আরআইএস