ঢাকা: ই-কমার্স সাইট আলেশামার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদারকে বিচারের আওতায় আনার পাশাপাশি তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে গ্রাহকরা। শুক্রবার (২৯ জুলাই) বিকেল ৩টায় ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তোলেন আলেশামার্ট কাস্টমার অ্যাসোসিয়েশন।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের এ সংগঠনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা আর কারও করুণা ভিক্ষা চাই না। আমরা আমাদের ন্যায্য ও কষ্টের টাকা ফেরত চাই। আমরা আর কারও মিথ্যা আশ্বাসে বিশ্বাসী নই। আলেশামার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদারকে বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে।
তিনি বলেন, অনতিবিলম্বে গ্রাহকের বকেয়া টাকা পরিশোধ করার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, সংশ্লিষ্ট মহল ও সাংবাদিকদের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অন্যথায় মালেশমার্ট কাস্টমার অ্যাসোসিয়েশন পাওনা টাকা আদায়ে পরবর্তীতে কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচির ঘোষণা করবে। এসময় তিনি ৭ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
মামুন বলেন, ই- কমার্সে অর্ডারকারী ৯০ শতাংশ গ্রাহক ছাত্রজনতা। আলেশামার্টের চেয়ারম্যান খুবই সুনিপুণভাবে এসব গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে তাদের কষ্টের টাকাগুলো আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছেন। ৩৪ বার ফেইসবুক লাইভে এসে তিনি কেবল মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সময়ক্ষেপন করেছেন। কিন্তু গ্রাহকের কোনো লাভ হয় নি। আলেশামার্ট চেয়ারম্যান ১ বছর সময় পেয়েও গ্রাহকদের মিথ্যা আশ্বাস ছাড়া কিছুই দিতে পারেন নি। ইতোমধ্যে, আমরা বিভিন্ন সময় গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েরও নিষ্ক্রিয়তাও পর্যবেক্ষণ করেছি।
তিনি আরও বলেন, আলেশামার্টে বিগত ১৩ মাসে অগ্রীম টাকা জমা দিয়ে পণ্য বা রিফান্ড কোনটাই না পেয়ে চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদারকে আইনের আওতায় আনা ও বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞাসহ ভুক্তভোগী গ্রাহকদের বকেয়া পরিশোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বানিজ্য মন্ত্রনালয় ও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপন করা ৭ দফা দাবিগুলো হলো—
• অনতিবিলম্বে আমরা আমাদের মূল টাকা ফেরৎ চাই।
• অনতিবিলম্বে আলেশামার্টের চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিদেশ গমন নিষিদ্ধ করতে হবে।
• অন্যথায় তারা যদি বিদেশ পালিয়ে যায় সেক্ষেত্রে গ্রাহকদের সব দায় দায়িত্ব বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট মহলকে নিতে হবে।
• যতদ্রুত সম্ভব মেয়াদ উত্তীর্ণ চেক রিপ্লেস করতে হবে।
• বন্ধ কল সেন্টার চালু করে গ্রাহকদের সেবার মান নিশ্চিত করতে হবে।
• বর্তমান করুণ অবস্থা বিবেচনা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট মহল এক হয়ে একটি কমিটি করুক। যে কমিটি চাপ প্রয়োগ করে মঞ্জুর আলম শিকদারকে বাধ্য করবেন গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করতে। আর যদি চাপ প্রয়োগে কাজ না হয় সেক্ষেত্রে উক্ত কমিটি চেয়ারম্যানের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে গ্রাহকের দেনা পরিশোধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবে। কারণ ইতোমধ্যে মঞ্জুর আলম শিকদার বিভিন্ন সময় লাইভে এসে বলেছেন তার দেনার চেয়ে বেশি সম্পদ আছে। তার সম্পদ থাকলে গ্রাহকের দেনা পরিশোধে গড়িমসি কেন?
• মঞ্জুর আলম শিকদার যদি সত্যি গ্রাহকের টাকা পরিশোধে ইচ্ছুক হন, তবে সেটি অবশ্যই গ্রাহক তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে হতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, ২৯ জুলাই, ২০২২
এমকে/এসএ