ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ত্যাগের আদর্শে ছাত্রলীগকে মানুষের মন জয় করার আহ্বান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৯
ত্যাগের আদর্শে ছাত্রলীগকে মানুষের মন জয় করার আহ্বান বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

ঢাকা: বঙ্গবন্ধুর সত্যিকারের সৈনিক হিসেবে আদর্শ ও ত্যাগ দিয়ে মানুষের হৃদয় জয় করতে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে গণভবন প্রাঙ্গণে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, সব কিছু ত্যাগ করে ও আদর্শ নিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারলেই সবার ভালোবাসা ও আস্থা অর্জন করা যায়।

এগুলোই একজন রাজনৈতিক নেতার জীবনের অমূল্য সম্পদ। নিজেকে যদি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে গড়ে তুলতে হয়, তাহলে সত্যিকারে তার আদর্শ বুকে ধারণ করে তার মতো ত্যাগী কর্মী হিসেবে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে।

ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সব চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে উঠে ত্যাগের মনোভাব নিয়ে আদর্শের সঙ্গে, ছাত্রলীগের নীতি-আদর্শ নিয়ে নিজেকে গড়ে তুলবে। দেশের মানুষকে কিছু দিয়ে যাবে, যেন জাতির পিতার আত্মা শান্তি পায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ প্রতিজ্ঞা করতে হবে- জাতির পিতা তার সব কিছু ত্যাগ করে গেছেন মানুষের কল্যাণে। তাদের কল্যাণে কতটুকু কাজ করতে পারলাম, আমাদের সে হিসাব করতে হবে। কতটুকু দিতে পারলাম, সেটাই একজন রাজনৈতিক কর্মীর সবচেয়ে বড় সার্থকতা।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ছাত্রলীগ আমার বাবা হাতে গড়া। আমিও ছাত্রলীগের কর্মী ছিলাম। ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবেই আমার রাজনীতিতে হাতেখড়ি।

১৫ আগস্ট সব হারানোর কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বলবো, সেই শোক বুকে নিয়ে, সেই আর্দশ বুকে নিয়ে, সব ব্যথা-বেদনা বুকে চেপে দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে আমরা কাজ করেছি। ব্যক্তিগত জীবনের কোনো চাওয়া পাওয়া নেই, চাওয়া-পাওয়া রাখিনি। একটাই চাওয়া, মানুষকে কী দিতে পারলাম, মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম।

তিনি বলেন, যে জাতির জন্য আমরা বাবা জীবন দিয়ে গেছেন, কষ্ট করে গেছেন, তাদের জন্য কতটুকু করতে পেরেছি- সেটাই বিবেচনা করেছি। নিজে কী পাবো-না পাবো বা ছেলে-মেয়ে কী পাবে-না পাবে, সে চিন্তা আমাদের ছিল না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দু’টি বোন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য গড়ার জন্য সব কিছু ত্যাগ করে কাজ করে যাচ্ছি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমার বাবা বলতেন, তিনি বাংলার জনগণকে বেশি ভালোবাসেন। আমাদের কথা বলেননি, বলেছেন বাংলার সাধারণ মানুষের কথা। আর তিনি যাদের ভালোবাসতেন, তাদের কল্যাণ করা সন্তান হিসেবে আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করি।

ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি অর্জনের ইতিহাসের সঙ্গে ছাত্রলীগের নাম জড়িত। যদি শহীদের তালিকা বের করি, সেখানেও দেখবো- ছাত্রলীগের অগণিত নেতা-কর্মী আত্মাহুতি দিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আমাদের কত সঙ্গী দিনের পর দিন মিছিল করেছি, কতজন জীবন দিয়ে গেছে সে মহান মুক্তিযুদ্ধে। স্বাধীনতার পর কেউ কেউ বিভ্রান্তিতে পড়ে আদর্শচ্যুতও হয়েছে- এটাই সবচেয়ে দূর্ভাগ্যের।

তিনি বলেন, আদর্শ ও নীতি না থাকলে কখনো নেতা হওয়া যায় না। হয়তো হওয়া যায় সাময়িকভাবে, কিন্তু সে নেতৃত্ব দেশ বা জাতিকে কিছু দিতে পারে না।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

এতে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছেন সঞ্জিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মো. জোবায়ের আহমেদ।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৯
এমইউএম/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।