ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

সরকার পুলিশ দিয়ে আন্দোলন দমন করতে চায়: ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১০ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০২২
সরকার পুলিশ দিয়ে আন্দোলন দমন করতে চায়: ফখরুল

ঢাকা: সরকার পুলিশ দিয়ে আন্দোলন দমনোর পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (১ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ভোলায় পুলিশের গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নিহত আব্দুর রহিমের স্মরণে গায়েবানা জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার পুলিশ দিয়ে গুলি বর্ষণ করে জানান দিয়ে দিয়েছে যে, তারা পুলিশ দিয়ে নির্যাতন করে এই আন্দোলনকে দমন করতে চায়। কিন্তু ভোলার মানু্ষের রক্ত দানের মধ্য দিয়ে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, এদেশের মানুষ কখনো ফ্যাসিবাদী সরকার, আওয়ামী লীগ সরকারের দমননীতিকে মেনে নেবে না। তারা দেশকে মুক্তি করবার জন্য, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবার জন্য জীবন দিয়ে হলেও, রক্ত দিয়ে হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে। আমরা আব্দুর রহিমের রক্তকে বৃথা যেতে দিতে পারি না। তাই এই শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে হবে। তার এই রক্ত যাওয়া, তার এই আত্মাত্যাগকে আমাদের ধারন করে আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে আরো গতিশীল হয়ে, আরো দূর্বার হয়ে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে পরাজিত করতে হবে।

বিদ্যুতের লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে রোববার (৩১ আগস্ট) জেলায় জেলায় সমাবেশ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভোলার নির্ধারিত কর্মসূচিতে পুলিশ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় ও গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুর রহিম নিহত ও ৫০ এর অধিক নেতাকর্মী আহত হয়। বিএনপি এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার সারাদেশে গায়েবানা জানাজা এবং আগামীকাল বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে। গায়েবানা জানাজার পর আব্দুর রহিমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
 
জানাজায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আবদুস সালাম আজাদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, হারুনুর রশীদ, আমিরুজ্জামান শিমুল, আকরামুল হাসান মিন্টু, শায়রুল কবির খান, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি, মহানগর বিএনপির আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, হাবিবুর রশীদ হাবিব, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, যুব দলের মামুন হাসান, মোনায়েম মুন্না, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির বাইরে নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, জাগপার খন্দকার লুতফর রহমান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা এই গায়েবানা জানাজায় অংশ নেন এবং মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।

গায়েবানা জানাজার আগে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে আজকে গুম-খুন-হত্যার রাজনীতির মাধ্যমে এরা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় থাকতে চায়, যেতে চায় এবং অব্যাহতভাবে থাকার আর কোনো সুযোগ নাই। দেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে, ঘুরে দাঁড়াবে। এদেশের মানুষ অতীতে স্বৈরাচারমুক্ত করেছে, এবারো স্বৈরাচার মুক্ত করবে।

দলের ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ভোলা একটি শান্তিপূর্ণ জেলা। কিন্তু গতকাল বিনা উস্কানিতে পুলিশ নিরীহ শান্তিপূর্ণ কর্মীদের ওপরে আক্রমণ চালিয়েছে। পার্টি অফিস থেকে বেরুনো মাত্রই যে মিছিল শুরু করেনি তখন তারা অতর্কিতে গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। এভাবে গুলি বর্ষণ অনাকাঙ্ক্ষিত এবং এটিই কেবলমাত্র নির্লজ্জ পেশিশক্তি প্রদর্শনের জন্যে, জনতার কন্ঠ স্বরকে দাবিয়ে রাখার জন্য ন্যক্কারজনকভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০২২
এমএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।