ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

আবারও আলোচনায় ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২
আবারও আলোচনায় ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক

ঢাকা: আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। কয়েক বছর আগে ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি ও সাধারণ সম্পদকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ওঠায় তাদের পদ থেকে সরিয়ে নতুনদের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের স্থলে যাদের দায়িত্বে আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও সংগঠনের ভেতর থেকেই সম্প্রতি বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে সংগঠনটির প্রায় একশ কেন্দ্রীয় নেতার স্বাক্ষর করা একটি অভিযোগপত্র আওয়ামী লীগের দপ্তরে জমা দিতে দলের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের দপ্তরে এ অভিযোগপত্র জমা নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।

জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজের টেন্ডারকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগের কারণে ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির তৎকালীন সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীকে তাদের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। শোভন-রব্বানীর ওই কর্মকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই শোভন-রব্বানীকে অব্যাহতি দিয়ে সিনিয়র সহ-সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়কে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়। পরবর্তীতে তাদের ‘ভারমুক্ত’ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

ওই সময় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির ঘটনা শুধু ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পদকের ক্ষেত্রেই থেমে থাকেনি। এই ঘটনার পর আওয়ামী লীগের কয়েকটি সহযোগী সংগঠনের ওপর দিয়েও ব্যাপক ঝড় বয়ে যায়। সেই সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী দিয়ে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকার শুদ্ধি অভিযান শুরু করে। এতে সংগঠনগুলোর প্রভাবশালী অনেক নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, অভিযোগ বেরিয়ে আসে। অনেকেই সংগঠনের পদ হারান এবং রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে বাধ্য হন। কেউ কেউ গ্রেফতার হয়ে জেলেও যান। কয়েক মাস ওই শুদ্ধি অভিযান চলে।

ছাত্রলীগের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক জয়-লেখকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ রয়েছে। যার কারণে দেশের ঐতিয্যবাহী এই ছাত্র সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। সংগঠনের ক্ষুব্ধ নেতাদের অভিযোগপত্রে এ বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।

সূত্রগুলো আরও জানায়, জয়-লেখকের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও রয়েছে। বেশ কিছু দিন ধরেই এ নিয়ে ছাত্রলীগের ভেতরে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অভিযোগের পাশাপাশি ক্ষোভও তৈরি হয়েছে।

তবে ছাত্রলীগের বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাচ্ছেন না আওয়ামী লীগের নেতারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা বাংলানিউজকে বলেন, যেহেতু অভিযোগ আওয়ামী লীগের দপ্তর গ্রহণ করেনি, নিশ্চয়ই দলের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশেই করা হয়নি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে এ বিষয়ে দলের উচ্চ পর্যায় থেকে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। তথ্য-প্রমাণ পেলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

২০১৮ সালের ১১ ও ১১ মে ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর প্রায় দুই মাস পর ৩১ জুলাই ছাত্রলীগের কমিটি দেওয়া হয়। তখন সভাপতি ও সাধারণ সম্পদক হন রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রব্বানী। পরে তাদের সরিয়ে জয-লেখকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুই বছর মেয়াদি ছাত্রলীগের এই কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এ কারণে বেশ কিছু দিন ধরে সম্মেলনের দাবিও উঠেছে ছাত্রলীগের মধ্য থেকে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।