ইউরোপের পূর্বদিকের রাষ্ট্র চেক রিপাবলিকের সাধারণ নির্বাচনে জয় পেয়েছেন অভিবাসনবিরোধী নেতা বিলিয়নিয়ার আন্দ্রেজ বাবিস। তার নেতৃত্বাধীন আনো দল সর্বাধিক আসন পেয়ে সংসদে প্রথম অবস্থানে রয়েছে।
এ ফলাফল দেশটির ইউরোপমুখী রাজনৈতিক ধারায় বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় গণমাধ্যমগুলো। গণমাধ্যমগুলোর সংবাদে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ইউক্রেনপন্থী শক্তিগুলোর মধ্যে চেক রিপাবলিকে ডানপন্থীদের জয়ে উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
গত শুক্রবার ও শনিবার ( ৪ ও ৫ অক্টোবর) এ নির্বাচন হয়। বিজয়ের পর চেক রিপাবলিকের রাজধানী প্রাগে সমর্থকদের উদ্দেশে বাবিস বলেছেন, আমরা চাই চেক রিপাবলিক ইউরোপের সবচেয়ে ভালো ও সুন্দর বসবাসযোগ্য দেশ হয়ে উঠুক। আমরা সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সবকিছু করব।
উল্লেখ্য, গত চার বছর চেক রিপাবলিক পরিচালিত হয়েছে মধ্য-ডানপন্থী জোট স্পোলুর নেতৃত্বে। জোটের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন পেত্র ফিয়ালা। ফিয়ালার সরকার ইউরোপ ও ইউক্রেনের অন্যতম বড় সমর্থক। ফলাফল ঘোষণার পর ফিয়ালা তার পরাজয় স্বীকার করে বলেন, ফলাফল স্পষ্ট, এবং একজন গণতন্ত্রপন্থী হিসেবে আমাদের তা মেনে নিতে হবে।
ইউক্রেন নীতিতে পরিবর্তনের বার্তা
বাবিস নির্বাচনী প্রচারণায় ইউরোপ ও চেক রিপাবলিকের ইউক্রেন নীতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, যদি আমাদের ওষুধ ও সামাজিক খাতে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকে, তাহলে আগে নিজেদের নাগরিকদের দেখাশোনা করতে হবে। তারপর ইউক্রেনকে টাকা দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনে অস্ত্র ও চেক গোলাবারুদ সরবরাহ স্থগিত করা হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্বেগ
বাবিসের আনো পার্টি এককভাবে সরকার গঠনের ইচ্ছা প্রকাশ করলেও সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে দলটিকে জোট গঠন করতে হবে। তিনি চরম ডানপন্থী টোমিও ওকামুরার ফ্রিডম অ্যান্ড ডাইরেক্ট ডেমোক্রেসি- এসপিডি ও মোটরিস্ট পার্টির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। এ দুই দলই ইউক্রেন সহায়তা বন্ধ ও ইউরোপবিরোধী হিসেবে পরিচিত। ওকামুরা নির্বাচনের আগে ইইউ থেকে চেক রিপাবলিকের বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে গণভোটের দাবি তুলেছিলেন। এ সম্ভাব্য জোট নিয়ে ব্রাসেলস ও কিয়েভে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এ জোট চেক রিপাবলিককে হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার মতো রাশিয়াপন্থী অবস্থানের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, রাজনৈতিকভাবে বাবিস এখন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান ও স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোর ঘনিষ্ঠ। তাদের মতো তিনিও জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে পারেন।
তবে বাবিস বলেন, ইউরোপের সমালোচনা করবো কিন্তু পুরো নীতি উল্টে দেবো না।
হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডসেও অভিবাসনবিরোধী ডানপন্থীরা ক্ষমতায় ও ক্ষমতায় যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন।
এসআই