ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রবাসে বাংলাদেশ

বর্ষসেরা অনাবাসী বাংলাদেশি এনাম আলী

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০১৫
বর্ষসেরা অনাবাসী বাংলাদেশি এনাম আলী

পাঠকের ভোটে এবং বিচারকদের বাছাইয়ে ২০১৪ সালের বর্ষসেরা অনাবাসী বাংলাদেশির স্বীকৃতি পেয়েছেন ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডের প্রবর্তক এনাম আলী এমবিই।

রোববার (৫ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ইস্টলন্ডনের মন্টিফিউরি সেন্টারে বর্ষসেরা অনাবাসী হিসেবে এনাম আলী এমবিই’র নাম ঘোষণা করেন লন্ডনস্থ বাংলাদেশ মিশনের ফাস্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম কবীর।



যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত দ্বিভাষিক ম্যাগাজিন ‘মিলেনিয়াম’র চলতি সংখ্যায় বর্ষসেরা নির্বাচনের পাশাপাশি ২০১৪ সালের সেরা দশ অনাবাসী বাংলাদেশির তালিকাও প্রকাশ করা হয়।

এনআরবি সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ মিশনের ফাষ্ট সেক্রেটারি মনিরুল ইসলাম কবীর ও চ্যানেল আই ইউরোপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী শোয়েব।

মিলেনিয়াম সম্পাদক এম মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাংস্কৃতিক কর্মী শামীমা বেগম মিতার পরিচালনায় মোড়ক উন্মোচন অনষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক গবেষক মতিয়ার চৌধুরী, প্রবীণ সাংবাদিক ইসহাক কাজল,  সাংবাদিক সায়েম চৌধুরী, জামাল খান, মানবাধিকার কর্মী আনসার আহমেদ উল্লাহ, সাংবাদিক মোসলেহ উদ্দিন আহমদ প্রমুখ।

এনাম আলী এমবিইকে ‘এনআরবি পার্সন অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করে বক্তারা বলেন, কারি শিল্প এখন ব্রিটেনে বাঙালির এক গৌরবময় পরিচয়। সে পরিচয়কে বিশ্ব দরবারে সম্মানের সাথে তুলে ধরে এনাম আলী বাংলাদেশকে, বিশ্ববাঙালিকে গৌরবান্বিত করেছেন।

২০১৪ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া জরিপের মাধ্যমে মিলেনিয়াম’র পক্ষ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বাংলাদেশিদের কাছে বর্ষসেরা অনাবাসী বাংলাদেশির জন্য মনোনয়ন চাওয়া হয়। শতাধিক মনোনয়নের মাঝ থেকে ১৬ সদস্যের একটি কমিটি চূড়ান্ত লড়াইয়ের জন্য ১০ জনকে বাছাই করে। কীর্তি বিবেচনায় তাদের মাঝ থেকে সেরা হন এনাম আলী এমবিই।

২০১৪ সালের সেরা অনাবাসী তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় কমিটির উপদেষ্টা ড. এন নীনা আহমেদ।

শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্য অনাবাসীরা হলেন, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক জিয়া হায়দার রহমান। অনেক সমালোচকই তাকে বিবেচনা করছেন একবিংশ শতাব্দীর প্রথম ক্লাসিক লেখক হিসেবে। সে বিবেচনাতেই তিনি মিলেনিয়ামের দৃষ্টিতে সেরা অনাবাসীর তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছেন।

চতুর্থ স্থানে রয়েছেন জাপানিজ মডেল রোলা। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এ মডেলকে ভালোবেসে অনেকেই ডাকেন ‘ফেস অব জাপান বা জাপানের মুখ’ নামে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার নরফোকের ওল্ড ডোমিনিয়ান ইউনিভার্সিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট (গবেষণা) ড. আতাউল করিম ভাসমান প্লেন আবিষ্কারের ভাবনা দিয়ে চমকে দিয়েছেন বিশ্বকে। তার অবস্থান তালিকার পাঁচ নাম্বার স্থানে।

হলিউডের অ্যানিমেশন ফিল্ম ফ্রোজেন-এর নেপথ্য কুশীলব হিসেবে অস্কারজয়ী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন গ্রাফিকস ডিজাইনার নাশিত জামান মিলেনিয়ামের বিচারে বছরের ৬ষ্ঠ সেরা অনাবাসী বাংলাদেশি। সাত শতাধিক প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে ২০১৪ সালে আয়ারল্যান্ডের সুন্দরীশ্রেষ্ঠ হয়েছিলেন মাকসুদা প্রিয়তি। সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে মিজ আয়ারল্যান্ড মাকসুদা প্রিয়তি অনাবাসী বাংলাদেশীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন ৭-এ।

বাংলাদেশের ঘ্রাণ বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়ে ব্রিটেনের হিমায়িত খাদ্য ব্যবসায়ী ইকবাল আহমদ তালিকার ৮ নম্বর জায়গাটি দখল করেছেন। স্ট্যান্ড আপ কমেডি দিয়ে আমেরিকা মাতানো আলাদ্দিন উল্লাহ নিজের সাফল্যের জ্যোতিতে সেরা অনাবাসীদের মধ্যে নবম হয়েছেন। সেরা দশের শেষ স্থানটি নিয়েছেন গ্রেটার লন্ডন এসেম্লি মেম্বার মুরাদ কোরেশী।

মিলেনিয়াম সম্পাদক মাহবুব হোসেন বলেন, বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশিদের অবদান ও সাফল্যের বার্তা ছড়িয়ে দিতেই মিলেনিয়াম এনআরবি পার্সন অব দ্য ইয়ার নির্বাচন করে আসছে। এবারের পার্সন অব দ্য ইয়ার এনাম আলী এমবিই নিজের কর্মকান্ডের মাধ্যমে ব্যক্তির পরিচয় পেরিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলেছেন এবং মন্ত্র হয়েছেন বাঙালিদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণার।

বর্ষসেরা অনাবাসী ২০১৪ নির্বাচনে এবার বিচারক প্যানেলে যুক্তরাজ্য থেকে মিলেনিয়াম সম্পাদক মাহবুব হোসেন ছাড়াও রয়েছেন আনসার আহমদ উল্লাহ, মতিয়ার চৌধুরী, মোসলেহ উদ্দিন আহমদ, ফরিদা বেগ, সাঈম চৌধুরী, সৈয়দ মাহাথির পাশা, যুক্তরাষ্ট্র থেকে রয়েছেন তহুর আহমদ চৌধুরী, শামসাদ হুসাম, আবু লিয়াকত হোসেন, জার্মানি থেকে সাকি হোসেন, স্পেন থেকে রূপচাঁদ দাস রূপক, সৌদি আরব থেকে আবুল বাশার বুলবুল, দুবাই থেকে ফাহমিদা ইসলাম চৌধুরী এবং বাংলাদেশ থেকে আতাউল্লা সাকের ও সাঈদ চৌধুরী টিপু।  

প্রসঙ্গত, দেশের বাইরে থাকা বাংলাদেশী রক্তের যে উত্তরাধিকাররা নিজেদের কীর্তি ও অর্জনের মাধ্যমে বংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছেন তাদের অর্জন ও কীর্তিকে সম্মান জানাতে ও বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে ২০১২ সাল থেকে মিলেনিয়াম ‘এনআরবি পার্সন অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত করে আসছে।

প্রথমবার এ স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন ব্রিটিশ এমপি রোশনারা আলী। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে জায়গা করে নেওয়ার স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ‘এনআরবি পার্সন অব দ্য ইয়ার ২০১১’ নির্বাচিত হন। পরের বছর এ সম্মান পান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আকরাম খান। লন্ডন অলিম্পিক ২০১২-এর কোরিওগ্রাফার আকরাম খান তার কাজের মাধ্যমে সে বছর বাংলাদেশকে বিশ্বের মাঝে অনন্য উচ্চতায় তুলে ধরেছিলেন। ২০১৩ সালের জন্য ‘এনআরবি পার্সন অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হন যুক্তরাজ্যের টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান। টানা দু’ বার ভিনদেশের জনপ্রতিনিধিত্বের সম্মান পেয়ে তিনি সম্মানিত করেন বাংলাদেশকেও। তারই স্বীকৃতি হিসেবেই তাকে ‘এনআরবি পার্সন অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম কবীর বলেন, মিলেনিয়াম একটি ব্যতিক্রমধর্মী ম্যাগাজিন। মুক্তচিন্তার লেখকদের দ্বারা পরিচালিত এই ম্যাগাজিনের কয়েকটি সংখ্যা আমি ব্রিটেনে আসার পূর্বেও পড়েছি। এই পত্রিকাটি তার ব্যাতিক্রমী কর্মকান্ডের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী রুচিশীল পাঠকের ম্যাগাজিন হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৫
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।