ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

ঔপনিবেশিক ভারতের বিলাতি নারীরা | আদনান সৈয়দ (শেষ পর্ব)

ধারাবাহিক রচনা ~ শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৫
ঔপনিবেশিক ভারতের বিলাতি নারীরা | আদনান সৈয়দ (শেষ পর্ব)

পর্ব ২৯ পড়তে ক্লিক করুন


গুডবাই ইন্ডিয়া |
হাজার রকম স্বপ্ন আর সোনালি ভবিষ্যতের কথা ভেবে যে বিলাতি নারীরা ভারতে পাড়ি জমিয়েছিলেন, কখনো কি তারা ভেবেছিলেন ১৯৪৭ নামের কোনো অঘটন তাদের জীবনে ঘটতে পারে? যে দেশটির নাম ‘গ্রেট ব্রিটেন’, যার শাসনাঞ্চলে সূর্য কখনো অস্ত যায় না, অথচ কী আশ্চার্য—খোদ ভারত থেকেই তাদের বিদায় নিতে হচ্ছে! ততদিনে বিলাতি মেমদের ভারতবাস চার পুরুষেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত করেছে। ফলে বিলাতি মেমদের কাছে এ সিদ্ধান্ত ছিল বিস্ময়ের, বিহ্বলতার।

বিলাতি মেম একি উইলসনের কথা মনে আছে তো? ১৮৯০ সালে তিনি যখন প্রথম ভারত আসেন, ভারতগামী জাহাজের ছাদে উঠে কল্পনায় ভারতকে দেখেছিলেন এভাবে: “ভারত পৌঁছতে হাতে এখনো অনেক সময় বাকি। এদিকে ক্যাপটেন মশাই জানিয়ে দিলেন আর কয়েক ঘণ্টা পরই আমাদের জাহাজটি দক্ষিণ আটলান্টিকের সেন্ট হেলেনায় পৌঁছে যাবে। সেখান থেকে পানি আর কিছু শুকনো খাবার বোঝাই করে জাহাজ আবার সমুদ্রে ভাসবে ভারতের ঠিকানায়। আহা কী আনন্দ! বন্দরের দেখা মিলবে অবশেষে! ভারত! নামটা উচ্চারণ করলেই গায়ে শিহরণ জাগে! কেমন জানি দেশটা। কিন্তু এখন কী করি? হাতে তো সময় অনেক! জাহাজের ডেকে উঠলে কেমন হয়? আকাশের গায়ে তারাগুলো যেন ফুলের মতো ফুটে আছে আর যেন আমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। আহা! প্রকৃতি কতই না সুন্দর। খুব ইচ্ছে করছে এই জাহাজের ডেকে খোলা আকাশের নিচে একটু নাচতে। কিন্তু কে নাচবে আমার সাথে? কেউ কি আছে?”



ওরসুলা গ্রাহাম বিলেত এসে অন্যান্য বিলাতি মেমদের মতোই খুব দুঃখ পেলেন এবং বিলেত নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করলেন! “এই সেই বিলেত যে বিলেতকে আমরা প্রতিনিয়ত ‘হোম’ বলে বলে কান্না করেছি! সত্যি বলতে এই দেশ এখন আমার কাছে ‘বিদেশ’ ছাড়া আর কিছুই নয়। আমার হোম রয়ে গেছে ভারতের সেই আসামের পাহাড়ের চূড়ায়। যে পাহাড়ের চূড়ায় আমার আত্মা আজীবনের জন্য আটকে আছে। হায়, আমার বাকি জীবন বিলেতের এই রুক্ষ শহরে বন্দি হয়ে গেল। ”



হায়! বাস্তব বুঝি এমনই। যে আকাঙ্ক্ষা আর স্বপ্ন নিয়ে বিলাতি নারীরা ভারতে এসেছিলেন, কখনো কি কল্পনা করতে পেরেছিলেন এ দেশটি ছেড়ে তাদের আবার চলে যেতে হবে? পারুক আর না পারুক, বিলাতি নারীদের এবার সবকিছু গুছিয়ে ‘ঘরে ফেরা’র সময় হলো। ততদিনে ভারত একটি স্বাধীন দেশ। বিলাতি মেম মারিয়া গ্রাহাম অন্যান্য বিলাতি নারীর মতোই ভারত ত্যাগ করবার সবরকম আয়োজনে ব্যস্ত। মন তার ভালো নেই। মারিয়া গ্রাহামের পূর্বপুরুষরা ভারতে এসেছিল ১৮১১ সালে। স্বাভাবিকভাবেই ভারতের মাটিতে বেড়ে ওঠা এই নারীর মন ভালো থাকার কথা নয়। ভারতের মাটির সাথে তিনি আত্মিক সম্পর্ক টের পান। বিলেতে অবস্থানরত এক বন্ধুকে লেখা চিঠিতে তিনি জানাচ্ছেন, “বিলেত আমার নিজের হোম কিন্তু তারপরও এই ভারতকে ছেড়ে চলে যেতে প্রাণটা কেমন জানি করছে। আহা! কী সুন্দর দেশ! সুন্দর পাহাড়ী ঢাল, তার নিচে সবুজ ফসলের ক্ষেত, আর রয়েছে দিগন্তজোড়া ঝকঝকে আকাশ। যে আকাশের নিচে আমরা বিপদে, আপদে, সুখে, দুখে সব কিছু আঁকড়ে ধরে কত সুন্দরভাবেই না বেঁচে ছিলাম। ভারত ছেড়ে চলে যাব এটা ভাবতেই পারছি না। ”

দীর্ঘদিন ভারতে বসবাস করলেও নিজের ‘বাড়ি’ বলতে তারা বিলেতকেই মনে করত। আর সে করণেই আদর করে বিলেতকে ডাকত ‘হোম’। এই ‘হোম’ ভারত থেকে হাজার মাইল দূরে অবস্থান করলেও বিলাতি আত্মায় ‘হোম’ ছিল নিজের বাড়ির আঙিনার মতোই কাছাকাছি কিছু। কিন্তু সমস্যা শুরু হলো অন্য জায়গায়। ভারতে বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত বিলাতি মেমরা তাদের প্রিয় ‘হোম’ বিলেতে গিয়ে বড় রকমের এক ধাক্কা খেল। ততদিনে বিলেতের সবকিছুই তাদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আর যাই হোক, ভারতের মতো কুড়ি-পঞ্চাশজন করে দাসী-বান্দি রাখা কিছুতেই সম্ভব না। এদিকে বাড়িঘরও খুব ছোট ছোট। ভারতে বিলাতি মেমরা যে ধরনের বাড়িতে থেকে অভ্যস্ত, সে তুলনায় বিলেতের বাড়িঘর যেন একেকটি ছোট কুটির। বিলাতি মেম এলিজাবেথের জীবন কেটেছে কাশ্মিরের নয়নাভিরাম উপত্যকায়। সেখানে তার ছিল গোটা বিশেক ভারতীয় গৃহকর্মী এবং বিশাল রাজবাড়ির মতো এক বাংলো। এলিজাবেথ লন্ডনে এসে অনেকটাই মুষড়ে পড়লেন। এক দিনলিপিতে তিনি লিখলেন, “হায় ঈশ্বর! এ কোন হাজত বাস! বাড়ি তো নয়, মনে হয় যেন একটি কুটির। ” স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি লিখলেন, “হায়! ভারতের জঙ্গলে বাঘ শিকার করতে যেতাম, তারপর কত রকম পার্টি, কত আনন্দ! আর এখন!” বিলাতি নারী ইরিস পোট্রালের কথাই ধরুন না। এই বিলাতি মেম ভারতকেই তার নিজের বাড়ি বলে দাবি করতে চান। চলুন কথাটি তার মুখ থেকেই শুনি, “পেছনে যখন ঘাড় ফিরিয়ে তাকাই, তখন দেখি একচিলতে ভারত আমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। ” রোমন্থনে জুলিয়া কর্টিস যেন আরো এক কাঠি উপরে। নস্টালজিতে ভরা এক স্মৃতিচারণে তিনি জানাচ্ছেন, “ডিসেম্বরের শীতের ভেতর দেখতে পাই হালকা কুয়াশা ভেদ করে এক চিলতে রোদ্দুর। সামনেই বিস্তৃত সবুজ ধান ক্ষেত, তার ওপর যেন বেগুনি রশ্মি চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছে। সেই ধান ক্ষেত থেকে বাতাসের সাথে সুবাস নাকে এসে ধাক্কা দিচ্ছে। কিভাবে ভুলব সেই গ্রামের কোনো বাড়ির চুলা থেকে ধোঁয়া ওঠার দৃশ্য। সেই ধোঁয়ায় চারদিক সাদা। গাছে কত হাজার রকমের পাখির কিঁচিরমিচির শব্দ। সেই সাথে ভারতের বৈচিত্র্যপূর্ণ রঙ আর শব্দের অবাক মিশ্রণ! আর বৃষ্টির শব্দ! এই শব্দ কান থেকে কি তুলে ফেলা যায়! বিশেষ করে মৌসুমি ঝড়ের সময় বৃষ্টির দাপাদাপির সাথে জীবনের ছন্দ আর কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে?”

এমনকি, ’৪৭ সালে দেশ ভাগের পরও অনেক বিলাতি নারী ভারত ত্যাগ করতে চান নি। তাদের অনেকেই যেতে বাধ্য হয়েছিলেন বা তাদের যেতে হয়েছে। ওরসুলা গ্রাহাম বাওয়ার তাদেরই একজন। মনের দুঃখে এক চিঠিতে বন্ধুকে জানালেন কথাটি: “আমি জানি ভারত আর আমাদের চায় না। আমাদের চলে যেতে হচ্ছে। ভারতে বসবাসের সময় আমাদের শেষ। ভারতকে পেছনে ফেলে আসতেই হবে। যদিও এটি হবে আমার জন্য সবচেয়ে কঠিন এক কাজ। ” ওরসুলা গ্রাহাম বিলেত এসে অন্যান্য বিলাতি মেমদের মতোই খুব দুঃখ পেলেন এবং বিলেত নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করলেন! “এই সেই বিলেত যে বিলেতকে আমরা প্রতিনিয়ত ‘হোম’ বলে বলে কান্না করেছি! সত্যি বলতে এই দেশ এখন আমার কাছে ‘বিদেশ’ ছাড়া আর কিছুই নয়। আমার হোম রয়ে গেছে ভারতের সেই আসামের পাহাড়ের চূড়ায়। যে পাহাড়ের চূড়ায় আমার আত্মা আজীবনের জন্য আটকে আছে। হায়, আমার বাকি জীবন বিলেতের এই রুক্ষ শহরে বন্দি হয়ে গেল। ”

আরেকজন বিলাতি নারীর কথা না বললে ঔপনিবেশিক ভারতে বিলাতি নারীদের এই আখ্যান অনেকটুকুই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। তিনি ভারতের শেষ ভাইসরয় লর্ড মাউন্ট ব্যাটনের স্ত্রী এডুইনা ব্যাটন। সেই সময় কথাটা অনেকের কানে কানেই ঘুরছিল এবং বিষয়টা নিয়ে লেখালেখিও কম হয়নি। নেহরু এবং এডুইনা ব্যাটন, একজন আরেকজনকে ভালোবাসেন। ভালোবাসায় মাখা চিঠি চালাচালি করতেন তারা। কেউ কেউ আবার মুখ টিপে বিষয়টাকে হেসে উড়িয়ে দিতেন। “আরে বন্ধুত্ব তো হতেই পারে। তাই বলে প্রেমের সম্পর্ক! তাও আবার ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর সাথে?” তবে এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন মাউন্ট ব্যাটনের কন্যা পামেলা মাউন্ট ব্যাটন। ততদিনে মাউন্ট ব্যাটন ভারতের দায় দায়িত্ব নেহরুকে বুঝিয়ে পরিবার পরিজনসহ লন্ডনে ফিরে গেছেন। কিন্তু রক্তক্ষরণ হচ্ছে এডুইনা ব্যাটনের কোমল প্রাণে। ভারতে তিনি কী যেন রেখে এলেন। কী যেন নেই! এক অসীম শূন্যতা।

ব্যাটন কন্যা পামেলা জওহরলাল নেহরুকে ‘মামু’ বলে সম্বোধন করতেন। তাকে ইঙ্গিত করে তিনি লিখলেন, “ইতোমধ্যেই আমার মা’র একজন প্রেমিক জুটেছিল। প্রথম প্রথম বিষয়টি নিয়ে বাবা প্রচণ্ড দুঃখ পেলেও পরে তিনিও তা মেনে নেন। ”  ১৯৪৮ সালে পামেলার বড়বোনকে লেখা মাউন্ট ব্যাটনের চিঠির একটি অংশ হুবহু তুলে ধরছেন পামেলা। “তার (এডুইনা) এবং জওহরলালের মধ্যে খুব সুন্দর সম্পর্ক রয়েছে। তারা একে অপরের জন্য নিহিত। ” ১৯৫৭ সালের মার্চ মাসে নেহরু বিভিন্ন কোটেশনসহ সুন্দর একটি চিঠি লেখেন এডুইনা ব্যাটনকে। চলুন দেখা যাক কী আছে সেই চিঠিতে: “হঠাৎ আমি অনুভব করলাম(সম্ভবত তুমিও তাই করবে) একটি গভীর সম্পর্কে আমরা পরস্পর আবদ্ধ। অদম্য এক শক্তি আমাদের পরস্পরকে আকর্ষণ করেছিল। আমি যেন তা আবার হঠাৎ করে আবিষ্কার করলাম। ” ১৯৪৭ সালে স্বামী লর্ড মাউন্ট ব্যাটনের সাথে ভারত আসেন যখন, এডুইনার বয়স তখন ৪৪। কন্যা পামেলা ব্যাটন জানাচ্ছেন, “আমার বাবা আমার মাকে খুব বিশ্বাস করতেন এবং অবশ্যই পণ্ডিত নেহরুর সাথে তার সম্পর্ক থাকায় স্বাধীনতার প্রাককালে ভারতের কাশ্মিরের অনেক জটিল বিষয়ের সমাধান হয়েছিল। ” (সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া)

এলেক্স ভন টেনজেলমান লিখিত Indian Summer বইয়ে এ বিষয়ে বিস্তৃত বর্ণনা রয়েছে। অবশ্য এই বিষয়টি নিয়ে লেখক টেনজেলমানের আক্ষেপও রয়েছে। তিনি বলেছেন, “নেহরু এবং এডুইনার শত শত চিঠির মধ্যথেকে মাত্র কয়েকটি চিঠি প্রকাশিত হয়েছে। ভারত সরকার তাদের চিঠিগুলো সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করেনি। যদি তা কখনো করে আমি এ বিষয় নিয়ে আরেকটি বই লিখতে চাই। ”

নেহরু বিভিন্ন সময়ে এউ‍ুউইনাকে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে উপহার পাঠাতেন। গ্রন্থটি জানাচ্ছে, “তাদের ভালোবাসা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, নেহরু বিভিন্ন সময়ে এডুইনাকে উপহার সামগ্রী পাঠাতেন। আমেরিকা থেকে চিনি, ইজিপ্ট থেকে সিগার, সিকিম থেকে ফার্ন, ওরিষ্যার মন্দিরের বিভিন্ন যৌন আবেদপূর্ন ভাস্কর্যের ছবির বই তিন উপহার পাঠিয়েছিলেন। সেই সাথে নেহরু লিখেছিলেন, ‘I must say they took my breath away for an instant. There was no shame or of hiding anything’.
এডুইনার উত্তর:
‘I am not interested in sex as sex, There must be much more to it, beauty of spirit and form and in its conception. But I think you and I are in the minority! Yet another treasured bond’.”

যদি বলি বিলাতি নারী এডুইনা ব্যাটন শুধু নেহরুকেই ভালোবাসেননি, তিনি গোটা ভারতবর্ষের প্রেমেই পড়েছিলেন, তাহলে মিথ্যে বলা হবে না।

ঔপনিবেশিক ভারতের বিলাতি নারীদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষকথা বলার কোনো প্রয়োজন আছে কি? তারা সবাই আমার আপনার মতোই স্বপ্নচারী ছিলেন। রক্তমাংসের মানুষ। কখনো অতি লোভে নিজেদের জীবন বিপন্ন করেছিলেন, কেউ কেউ আবার সুন্দর জীবনের আশায় বৈষয়িক উন্নতির পেছনে নিজেদের গোটা জীবন ঢেলে দিয়েছিলেন। হাসি, কান্না, আনন্দ, দুঃখ নিয়ে সবার মতো তারাও কেউ ছিলেন একজন মা, একজন বোন বা প্রেমিকা। তাদের কেউ কেউ যেমন সাফল্যের চূড়ায় যেতে পেরেছিলেন, কেউ কেউ আবার অন্ধকার গর্তে পড়ে জীবন থেকে ছিটকেও পড়েছিলেন।

একটা বিষয় আমাদের ভাবতে হবে, এই বিলাতি নারীরা তাদের জীবনের নোঙরটি ফেলেছিলেন সম্পূর্ণ ভীনদেশি এক আলো হাওয়ায়। যে দেশটি হয়ত তাদের আত্মায় কোনোদিন ভালোবাসার কড়া নাড়ে নি অথবা যে দেশটিতে বাস করতে হয়েছে প্রতিনিয়ত শাসকের পাখায় ভর করে। তারপরও সে দেশটির প্রতি তাদের ভালোবাসার অন্ত নেই। ভারতের আলো হাওয়া, সমাজ, রাষ্ট্র কোনো কিছু থেকেই বিলাতি নারীদের আলাদা করার কোনো সুযোগ নেই। ভারতের আকাশে স্বপ্নের এই জোনাকিরা অন্যান্য নারীর মতোই তাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। আর সে কারণেই ভারতের ধুলোমাটিতে কান পাতলে এখনো যেন বিলাতি নারীদের গল্পগুলো শুনতে পাওয়া যায়। মনের পর্দায় নিত্যই যেন তারা দোলা দেয়। চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পাওয়া যায় এনি উইলসন, ইমিলি ইডেন, মনিকা ক্যাম্বেল, জুলিয়া কার্টিস, ইথেল সেবি, মার্গারেট স্মিথ, লেডি ডুফেরিন, মিনি ব্লেনসহ আরো হাজার নাম না জানা বিলাতি নারীদের—যারা জোনাকি পোকার মতোই যেন আমাদের চারপাশে সারাক্ষণ ঘুরে বেড়ায়। তাদের শতাব্দীকাল আগের উচ্ছ্বসিত কোনো বিকেলবেলা যেন এখনো মিটমিট করে হেসে ওঠে বাতাসে। সত্যি বলতে, তাদের মনের ভেতরকার গল্পগুলোর কতটুকুই বা আমরা জানি? সব সত্য তো জানা সম্ভব না। আর সে কারণেই বিলাতি নারীদের ভারতীয় জীবনযাপন এখনো আমাদের কাছে রহস্যে ঢাকা এক মায়াপূরী।



বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।