ঢাকা, শুক্রবার, ১০ আশ্বিন ১৪৩২, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিল্প-সাহিত্য

বাংলাদেশের নন্দিত শিল্পের স্মারক ‘নকশিকাঁথা’ প্রকাশিত

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:৫৬, নভেম্বর ৬, ২০১৮
বাংলাদেশের নন্দিত শিল্পের স্মারক ‘নকশিকাঁথা’ প্রকাশিত ‘নকশিকাঁথা’ গ্রন্থের মোড়ক উম্মোচন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: 'সীতার গুণের কথা কি কহিব আর/ কন্থায় আঁকিল কন্যা চান সুরুয, পাহাড়/ আরো যে, আঁকিল কন্যা হাঁসা আর হাঁসি।/ চাইরো পারে তাকে কন্যা পুষ্প রাশি রাশি’। ময়মনসিংহ গীতিকায় কবি চন্দ্রাবতীর রামায়ণ কাব্যে এভাবেই পাওয়া যায় নকশিকাঁথার উদ্ধৃতি। বহুপ্রাচীনকাল থেকে নকশিকাঁথা এদেশের অন্যতম সাংস্কৃতিক উপাদান হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। আর তা লোকশিল্পের একটি প্রাচীনতম অনুসঙ্গ, যার অনিন্দ্য শিল্পের রূপকার বাংলার নিভৃত পল্লির মেয়েরা।

নকশিকাঁথার ইতিহাসকে এবার এক মলাটে তুলে এনেছেন গবেষক ও সংগ্রাহক মালেকা খান। নকশিকাঁথার পুঙ্খানুপুঙ্খ ইতিহাস নিয়ে তিনি রচনা করেছেন ‘নকশিকাঁথা: বাংলাদেশের নন্দিত শিল্পের স্মারক’ শীর্ষক গ্রন্থ।

সোমবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।  

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, চিত্রশিল্পী হাশেম খান, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আক্তারী মমতাজ, জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক আব্দুল মান্নান ইলিয়াস।  

দৈনিক ইত্তেফাক ও পাক্ষিক অনন্যা সম্পাদক তাসমিমা হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বইটির লেখক মালেকা খান।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, নকশিকাঁথা একটি জীবন্ত শিল্প। কোনো না কোনোভাবে এটি এখনও টিকে আছে। এই শিল্প সকলের উৎসাহ ও প্রচেষ্টায় টিকে থাকবে। সত্যিকার নকশিকাঁথা বিকশিত হওয়ার জন্য এ ধরনের প্রকাশনার প্রয়োজন আছে।

চিত্রশিল্পী হাশেম খান বলেন, গ্রন্থটি নকশিকাঁথার উপর আকর গ্রন্থ হিসেবে থেকে যাবে। সচিত্র বইটি নিজেই একটি 'নকশিকাঁথা' হয়ে উঠেছে। নিজেদের সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখার জন্য আমাদের সাবধান হতে হবে। নকশিকাঁথা বাণিজ্যিক করতে গিয়ে এর প্রকৃত শিল্পমূল্য যেন অটুট থাকে সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।

‘নকশিকাঁথা: বাংলাদেশের নন্দিত শিল্পের স্মারক’ বইটিতে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিল্পী এবং একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ের নকশিকাঁথা বোনা নারীর অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়েছে। এসব বিষয়ের মধ্যে রয়েছে: ‘বাংলাদেশের নকশিকাঁথা: অতীত দিনের কথা’, ‘নকশিকাঁথা: পথিকৃৎজন’, ‘নারীর অবদান’, ‘কাঁথার সাংস্কৃতিক অবদান’, ‘নকশার শ্রেণিবিভাগ ও বৈশিষ্ট্য’, ‘নকশিকাঁথা: শিল্প ও শিল্পী’, ‘নকশার প্রতীক, কাঁথার মোটিফ, নকশিকাঁথার ঐতিহ্য, কথাসাহিত্যে কাঁথা, একাত্তরে কাঁথার ভূমিকাসহ মোট ৪০ বিষয়ভিত্তিক অধ্যায়।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের গবেষণা প্রকল্পের অংশ হিসেবে নকশিকাঁথার নিয়ে গবেষণা করেন মালেক খান। বইটি প্রকাশ করেছে নারী বিষয়ক পত্রিকা পাক্ষিক অনন্যা। আর্ট পেপারে মুদ্রিত সম্পূর্ণ রঙিন ২৮০ পৃষ্ঠার বইটির মূল্য এক হাজার ৫০০ টাকা।

আলোচনা পর্ব শেষে সংগীত পরিবেশন করেন লালন সম্রাজ্ঞী খ্যাত শিল্পী ফরিদা পারভীন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৮
এইচএমএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।