ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের ‘কয়লতলা ও অন্যান্য গল্প’

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৯
সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের ‘কয়লতলা ও অন্যান্য গল্প’ ‘কয়লাতলা ও অন্যান্য গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা/ছবি- শাকিল আহমেদ

ঢাকা: ব্যক্তি, সমাজ ও জনজীবনের বিভিন্ন সমস্যা, টানাপড়েন আর প্রেম-ভালোবাসার চালচিত্র নিবিড়ভাবে ফুটে উঠেছে কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের নতুন গল্পগ্রন্থ ‘কয়লাতলা ও অন্যান্য গল্প’ গ্রন্থে। লেখকের সাম্প্রতিক সময়ে লেখা দশটি গল্পের সংকলন নিয়ে এ গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে অন্যপ্রকাশ।

বুধবার (৩০ জানুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরে অনুষ্ঠিত হলো বইটির প্রকাশনা উৎসব।

বিকেলের এ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

গ্রন্থ বিষয়ে আলোচনা করেন গবেষক-প্রাবন্ধিক মফিদুল হক, দৈনিক কালের কণ্ঠ’র সম্পাদক ও কথাশিল্পী ইমদাদুল হক মিলন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ।

ড. আনিসুজ্জামান বলেন, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বাংলাদেশের বিশিষ্ট গল্পকার। তিনি মৌলিকতায় অনন্য। তার গল্পে পরাবাস্তবতার ঝোঁক আছে। এক ধরনের ভয়, ক্ষোভ, ত্রাস, শঙ্কায় তার চিত্রকল্পের দিকটি খুবই সমৃদ্ধ। যা পাঠককে গল্পের অন্যকিছু রেখে সেগুলোতেও ভাবাতে পারে।

মফিদুল হক বলেন, এক গভীর ব্যঞ্জনা থাকে তার লেখায়। বিশেষ করে গল্পের সমাপ্তিতে। সাধারণ মানুষের যে দুঃখ, বেদনা, কষ্ট তা তিনি গভীরভাবে অনুভব করেন। তিনি বিশ্বসাহিত্যের হালের খবরের ব্যাপারে বেশ ওয়াকিবহাল। কিন্তু তার গল্পে সেগুলোর প্রভাব পাওয়া যায় না।

ইমদাদুল হক মিলন বলেন, আমি পাঠক হিসেবে বলবো বাংলা সাহিত্যের সব ভালো গল্প আমি পড়েছি। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এই সময়ের শ্রেষ্ঠতম গল্পলেখক। তার লেখনভঙ্গটাই অন্যরকম। একবার গল্পের ভেতর ঢুকে গেলে আর বেরোনো যায় না। তিনি গল্পে অদ্ভুত শব্দ ও উপমা ব্যবহারে সিদ্ধহস্ত। আমরা ভীষণ ভাগ্যবান যে, মহৎ এই লেখক আমাদের সময়ে লিখছেন।

বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, অধ্যাপক মনজুরুল ইসলাম সাধারণ ভাষায় কথা বলেন এবং বলতে পারেন। এই বইয়ের ‘চাঁদের খাঁচা’ গল্পটি পড়েছি যেখানে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের নানা টানাপড়েন এক ভিন্নমাত্রা পেয়েছে। এই লেখকের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো তিনি সহজ করে বলতে পারেন।

অনুভূতি প্রকাশে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, আমি বাংলাদেশের কথ্যভাষায় লিখি। আমার প্রত্যেকটি গল্পের পেছনে একটি বাস্তবতা থাকে। আমাদের চারপাশে এত গল্প আছে যে একজীবনে লিখে তার ভগ্নাংশও শেষ করা যাবে না। আর আমাদেরকে গল্পবলার ঐতিহ্যে ফিরে যেতে হবে।

আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হবীবুল্লাহ সিরাজী ও প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. তাবারক হোসেন ভূঁঞা। আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন সম্প্রতি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক মোহিত কামাল ও কবি কাজী রোজী, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন এর চেয়ারম্যান কামরুল হাসান শায়খ প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অন্যপ্রকাশের পরিচালক আবদুল্লাহ নাসের।

এছাড়া গত ১৮ জানুয়ারি ছিল সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের ৬৯তম জন্মদিন। প্রকাশনা উৎসবের এ আয়োজনের পাশাপাশি অনেকেই এই শিক্ষাবিদ লেখককে জন্মদিনের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

‘কয়লাতলা ও অন্যান্য গল্প’ প্রকাশ করেছে অন্যপ্রকাশ। ১৬৮ পৃষ্ঠার বইটির মূল্য ৩৮০ টাকা। প্রচ্ছদশিল্পী সব্যসাচী হাজরা। বইটির গল্পগুলোতে একাত্তরের গৌরব আর মহিমা বাঙালিদের কীভাবে স্পর্শ করেছিল, তাদের জাগিয়েছিল এমনকি গ্রামেরও সেই চিত্রায়নের পাশাপাশি এই সময়ের শহরের জীবন আর কর্পোরেট দুনিয়ার লোভ ও নানা ফন্দিফিকিরের কথা উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৯
এইচএমএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।