ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

গেজেট নয়, জাতীয় কবি হিসেবে নজরুলকে ধারণই গুরুত্বপূর্ণ

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৯
গেজেট নয়, জাতীয় কবি হিসেবে নজরুলকে ধারণই গুরুত্বপূর্ণ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: জাতীয় কবি হিসেবে গেজেটের মাধ্যমে স্বীকৃতির চেয়ে বাস্তবে কর্মের মাধ্যমে কাজী নজরুল ইসলামকে ধারণ করাই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে নজরুলের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন। নজরুলের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল থেকে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ।

জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন আয়োজনে কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি হিসেবে লেখা হয়। তবে তাকে জাতীয় কবি ঘোষণা করা সংক্রান্ত সরকারি কোনো প্রজ্ঞাপন বা দলিল নেই। লোকমুখে প্রচারিত তথ্যের ভিত্তিতে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি, কাগজে-কলমে প্রাতিষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে নন বিধায় বহুদিন ধরে নজরুলকে গেজেটের মাধ্যমে এ স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন নজরুলের পরিবারের সদস্য ও বিশিষ্টজনেরা। নেতাদের সঙ্গে নিয়ে নজরুলের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।  ছবি: শাকিল আহমেদএ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় কবি হিসেবে তিনি গ্রহণযোগ্য ও সমাদৃত। এবং সবার মুখের কথা নয়, এটা আমাদের বিশ্বাসে, আমাদের প্রতিটি কর্মেই আমরা প্রমাণ করছি। আমরা প্রত্যেকে কর্মে জাতীয় কবি হিসেবে তার চেতনাকে ধারণ করছি। তার স্বপ্নকে ধারণ করছি এটাই বড় কথা। জাতীয় কবি হিসেবে তাকে সম্মান করছি শ্রদ্ধা করছি এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

মন্ত্রী বলেন, একজন বিদ্রোহী কবি, যৌবনের কবি, মানবতার কবি, প্রেমের কবি, প্রতিবাদের কবি, অগ্নিবীণার কবি, আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমাদের নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করতে এসেছি। কবির আদর্শটাই আজকে বড়। তিনি ছিলেন অসম্প্রদায়িক, মানবতাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ। তার প্রতিটি লেখায়, প্রতিটি কবিতায় অসাম্প্রদায়িক মানবতার ধ্বনি উচ্চারিত হয়েছে বারবার। আমরা আজ কবির এ সমাধির পাশে দাঁড়িয়ে অসাম্প্রদায়িক, মানবতাবোধের চেতনায় সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবৃক্ষ ছড়িয়ে পড়েছে সেটিকে উৎপাটন করে কবির স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার শপথ নেবো আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।  

এসময় ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম।

এর আগে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তার সঙ্গে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মাদ সামাদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল প্রমুখ। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিতে সর্বস্তরের মানুষের ফুলেল শ্রদ্ধা।  ছবি: শাকিল আহমেদঢাবি উপাচার্য বলেন, নজরুল অসাম্প্রদায়িকতা, সাম্য, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির কথা বলেছিলেন। এইমূল্যবোধগুলোর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল বলেই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তার কবিতা-সাহিত্যকর্ম অসাধারণ প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছিল। কবিকে আমরা স্মরণ করি সমাজের বিভিন্ন অসংগতির সময়ে। কবির প্রাসঙ্গিকতাসবসময় সমকালীন।  

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও নজরুল ইনস্টিটিউটে নজরুলকে নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা ও হানাহানি থেকে মুক্তির জন্য অনুবাদকর্মের মাধ্যমে নজরুলের সাহিত্য বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, হল সংসদ, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় কবিতা পরিষদ, নজরুলসংগীতশিল্পী পরিষদ, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস), বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা কবির সমাধিতে ইতোমধ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। দলে দলে কবিকে শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন বিভিন্ন স্তরের মানুষ।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৯/আপডেট ১০৪০ ঘণ্টা
এসকেবি/এইচএ/

** নজরুলসাহিত্য বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিতে হবে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।