ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

শব্দঘরের জন্মদিনে লেখক-শিল্পীদের আনন্দ আড্ডা

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২১
শব্দঘরের জন্মদিনে লেখক-শিল্পীদের আনন্দ আড্ডা ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: ‘শুদ্ধ শব্দের নান্দনিক গৃহ’ প্রতিপাদ্যে প্রকাশিত মাসিক সাহিত্য পত্রিকা শব্দঘর পদার্পণ করলো আট বছরে। মোহিত কামাল সম্পাদিত পত্রিকাটি সময়ের পরিক্রমায় নজর কেড়েছে দেশি-বিদেশি সাহিত্যপ্রেমীদের।

দেশের গণ্ডি পেরিয়ে পৌঁছেছে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে।

শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শব্দঘরের অষ্টম জন্মদিন উদযাপনের আয়োজনে নতুন সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। প্রখ্যাত কথাশিল্পী হাসনাত আবদুল হাইকে উৎসর্গ করে প্রকাশিত হয়েছে এই বিশেষ সংখ্যা।

শাহবাগের পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রে শব্দঘরের জন্মদিন ও সাহিত্য আড্ডার আয়োজনে অংশ নেন খ্যাতিমান কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন, কথাসাহিত্যিক হাসনাত আবদুল হাই, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক হোসেন আবদুল মান্নান, আজিজুল ইসলাম, শব্দঘরের সম্পাদক ও বিশিষ্ট লেখক মোহিত কামাল প্রমুখ। অনুষ্ঠানে শব্দঘরের জন্মদিনের কেক কাটেন অতিথিরা।

আয়োজনে সেলিনা হোসেন বলেন, দেশে একটি ভিন্ন ধারার সাহিত্য পরিমন্ডণ্ডল তৈরি করেছে শব্দঘর। সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি আমি ৩৪ বছর বাংলা একাডেমিতে চাকরি করেছি। এই দীর্ঘ সময়ে শব্দঘরের মতো মানসম্পন্ন সাহিত্য পত্রিকা আমার চোখে পড়েনি। এই পত্রিকায় নবীনের সঙ্গে প্রবীণ লেখকের সমন্বয় ঘটেছে। যেটা অন্য কোনো সাহিত্য পত্রিকায় ঘটেনি। এছাড়াও নবীন লেখককদের লেখার পরিসর বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে পত্রিকাটি। সব মিলিয়ে সাহিত্য ভুবনে একটি গৌরবের অধ্যায় সৃষ্টি করেছে শব্দঘর।

তিনি বলেন, পত্রিকাটির সম্পাদকের কাছে আমার অনুরোধ, তারা যেন দেশের শক্তিমান লেখকদের সমৃদ্ধ সাহিত্যকে ইংরেজিতে অনুবাদের ব্যবস্থা করেন। তাহলে এদেশের সাহিত্যিকদের সাহিত্যকর্মগুলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌঁছানোর সুযোগ পাবে।

রামেন্দু মজমুদার বলেন, আমিও নিজেও থিয়েটার নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করি। কিন্তু সাহিত্য পত্রিকা শব্দঘর সব সময় আমাকে বিস্মিত করে। মোহিত কামালের মতো একজন মানুষ কীভাবে প্রতি মাসে নিয়মিতভাবে পত্রিকাটি প্রকাশ করেন, সেটা আমার কাছে এক বিস্ময়। হাসনাত আবদুল হাইকে নিয়ে প্রকাশিত এবারের সংখ্যাটি অসাধারণ। একজন লেখকের সর্বাঙ্গীন পরিচয় মিলেছে এই সংখ্যার মাধ্যমে। তার সাহিত্যজীবনকে নানাভাবে বিশ্লেষণ করেছেন অন্য লেখকরা।

প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, জীবনীনির্ভর উপন্যাস কিংবা ভ্রমণকাহিনী রচনায় সিদ্ধহস্ত এক সাহিত্যিক হাসনাত আবদুল হাই। তার লেখা ‘নভেরা’সহ অনেক বই পড়েই মুগ্ধ হয়েছি। অব্যাহত থাকুক তার এই সৃজনশীল জীবন।

আয়োজনে হাসনাত আবদুল হাই বলেন, আমাকে নিয়ে শব্দঘরের যে আয়োজন, তাতে আমি সম্মানিত বোধ করছি। শব্দঘর শুধু সাহিত্য পত্রিকা নয়, এটি একটি প্রতিষ্ঠান। সাহিত্য পত্রিকার ভূমিকা হলো প্রবীণ লেখকদের বাঁচিয়ে রাখা এবং নবীন লেখকদের জন্ম দেওয়া। দু’টি কাজই যথার্থভাবেই করে যাচ্ছে শব্দঘর।

অনুভূতি প্রকাশে মোহিত কামাল বলেন, শৈশব থেকেই পত্রিকা সম্পাদনার স্বপ্ন দেখতাম। রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই সম্পাদিত ‘কচি ও কাঁচা’ কিংবা নজরুল সম্পাদিত ‘ধূমকেতু’ দেখে সম্পাদনার সেই স্বপ্নটা জেগে উঠেছিল। তাই সম্পাদকের সেই সত্তাটা লুকায়িত ছিল। ইচ্ছে ছিল এমন একটি পত্রিকা প্রকাশ করবো যেটি পাঠককে আকৃষ্ট করার পাশাপাশি একসময় গবেষণারও বিষয়বস্তু হবে। এরপর শব্দঘর প্রকাশনার মাধ্যমে পূরণ হলো সেই স্বপ্ন।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে এই পত্রিকার পাঠক। সব মিলিয়ে পত্রিকাটির অষ্টম বর্ষে এসে অসাধারণ এক ভালোলাগা অনুভব করছি।

আয়োজনে অন্য বক্তারা বলেন, দেশের সাহিত্য বিকাশে ভূমিকা রেখেছে শব্দঘর। সেই সঙ্গে সৃষ্টি করেছে নতুন লেখক।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২১
এইচএমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।