ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

দ্বিতীয় দিনেই পাঠক-দর্শনার্থীতে সরগরম বইমেলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৪
দ্বিতীয় দিনেই পাঠক-দর্শনার্থীতে সরগরম বইমেলা

ঢাকা: একদিন আগেই পর্দা উঠেছে অমর একুশে বইমেলার। সাধারণত বইমেলার শুরু দিকে তেমন ভিড় না থাকে না।

 

তবে শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) ছুটির দিন হওয়ায় বইমেলার দ্বিতীয় দিনই পাঠক-দর্শনার্থীসহ বইপ্রেমীদের ভিড়ে সরগরম হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ।

এদিন বইমেলার বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশ ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে দর্শনার্থীরা আসতে থাকেন মেলা প্রাঙ্গণে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভিড়ও। বিকাল ও সন্ধ্যায় ক্রমেই বইপ্রেমীদের ভিড়ে সরগরম হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।

শুক্রবার বইমেলায় আসা পাঠক-দর্শনার্থীদের মধ্যে তরুণদের সংখ্যাই বেশি দেখা যায়। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে আসতে থাকেন মেলায়। যুবক ও বয়স্কদের সংখ্যাও কম ছিল না। কেউ একা এসেছেন, তো কেউ পরিবার নিয়ে। তারা হেঁটে হেঁটে মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন বইয়ের স্টল ঘুরে দেখছেন। কেউ কেউ পছন্দের বই কিনছেন। কেউবা ছবি তুলছেন।

বন্ধুদের সঙ্গে বইমেলায় এসেছেন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রায়হান উদ্দিন। তিনি বলেন, প্রতি বছর বেশ কয়েকবার বইমেলায় আসা হয়। আজ সময় হওয়ায় বন্ধুদের নিয়ে চলে এসেছেন। আজ শুধু বই দেখার উদ্দেশে এসেছেন। তবে কোনো বই পছন্দ হলে কিনবেনও তিনি।

বোনের সঙ্গে বইমেলায় এসেছেন শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান। তিনি বলেন, বই পড়তে ভালো লাগে। সারা বছরই সাধারণ দোকান থেকে বই কেনা হয়। তবে সবচেয়ে বেশি বই কেনা হয় বইমেলায়। কারণ এখানে অনেক ধরনের, অনেক লেখকের বই একসঙ্গে পাওয়া যায়। বই দেখেছি, এখনো কোনো বই কেনা হয়নি। তবে কিনব।

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মিরপুর থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী ফাহিম। তিনি বলেন, প্রতি বছরই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মেলায় আসা হয়। আজ ছুটির দিন হওয়ায় পরিবার নিয়ে চলে এসেছি। মেট্রোরেল চালু থাকলে আসতে সুবিধা হতো। তবে এমনিতেও কোনো অসুবিধা হয়নি।

এদিকে বইমেলার শুরুর দ্বিতীয় দিনেই পাঠক-দর্শনার্থীদের এমন সাড়ায় অভিভূত বিক্রয়কর্মী ও প্রকাশকরা। বই দেখার পাশাপাশি পাঠকরা বই কিনছেন বলেও জানিয়েছেন তারা। তাই এবার বই মেলায় গত বছরগুলোর তুলনায় ভালো বিক্রি হবে বলে প্রত্যাশা করেন তারা।

মাছরাঙ্গা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী ইসমিতা আলম বলেন, গতকালকের থেকে আজকে ভিড় বেশি৷ কেউ কেউ বই কিনছেন৷ কেউ আবার দেখছেন৷ সবাই তো বই কিনতে আসে না, অনেকে দেখতে আসছে৷ সামনে বিক্রি আরও বাড়বে মনে হয়৷  

প্রিয় প্রকাশের বিক্রয়কর্মী রুহান ইসলাম বলেন, মেলায় লোকজনের ভিড় অনেক৷ অনেক ক্রেতা আসছে৷ বিক্রিও ভালো৷ আশা করছি এবার মেলায় ভালো বই বিক্রি হবে৷

প্রতিবছরের মতো এবার বইমেলায় শিশুদের জন্য শিশুপ্রহরের আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে শিশুপ্রহরের প্রথম দিনে শিশুদের পদচারণার মুখোরিত হয়ে উঠে শিশু চত্বর। বই পড়ায় শিশুদের আগ্রহী করে তুলতে প্রতি বছরই বই মেলায় শিশু প্রহরের আয়োজন করা হয়।

অভিভাবকরা ছুটির দিনে তাদের সন্তানদের নিয়ে মেলায় ঘুরতে আসেন। ছোট ছোট শিশুরাও মেলায় ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন ধরনের বই দেখে। কেউ কেউ তাদের পছন্দের গল্প, কবিতা, ছাড়া বা কার্টুনের বই কিনে।

এবার বইমেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থাও বেশ জোরদার দেখা যায়। মেলায় প্রবেশের গেইটগুলোতে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে আগতদের তল্লাশি করেন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা।

বইমেলায় দায়িত্বে থাকা নিউমার্কেট থানার অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন) অর্পিত হালদার ঠাকুর বলেন, মেলায় যেন কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সেজন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য রয়েছে৷ মেলার নিরাপত্তায় কোনো ত্রুটি নেই, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৪
এসসি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।