ঢাকা: প্রতিদিনই অমর একুশে বইমেলায় শামিল হতে হাজারো পাঠক-দর্শক অপেক্ষায় থাকে প্রবেশপথে। ঠিক ৩টা বাজে দুয়ার খুলতেই তারা সদলবলে ঢুকে পড়লেন মেলা প্রাঙ্গণে।
এছাড়া মেট্রোরেলের কারণে এবার জনসমাগম আরও বেড়েছে। যারা অন্যান্যবার দূর থেকে আসতে পারতেন না, তারাও এবার আসছেন খুব সহজেই।
ঢাকার মিরপুর থেকে বইমেলায় এসেছিলেন রুবাইয়াৎ শরীফ, সঙ্গে তার মেয়ে আনাইকা। রুবাইয়াৎ বললেন, মেয়েটা কত দিন ধরে বায়না করছে সে বইমেলায় যাবে। আজ তাই চলে এলাম। পছন্দের বইয়ের তালিকা করাই আছে। বই কিনতে খুব বেগ পেতে হবে না।
দারুস সালাম এলাকা থেকে আসা জামিলুল হকের সঙ্গে কথা হয় বইমেলায়। তিনি এ সময় কেনেন কথাসাহিত্যিক মোস্তফা কামালের নতুন উপন্যাস ‘কারবালা উপাখ্যান’। তিনি বললেন, আমি ইসলামের আদর্শ ও ঐতিহ্যের বই খুঁজছি। শুধু নিজেই পড়ছি না, আমার পরিবারের তরুণদের সেই সব বই পড়তে উৎসাহ দিচ্ছি। শরৎচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বইয়ের পাশাপাশি ইসলামের সমৃদ্ধ ইতিহাস নিয়ে বই খুঁজতে গিয়ে আজ ‘কারবালা উপাখ্যান’ পেয়ে গেলাম। বইটার মুখবন্ধ পড়ে ভালো লেগেছে।
বইমেলায় প্রচুর দর্শক সমাগম দেখা গেলেও তাদের অধিকাংশের হাতে বই দেখা যায়নি। দল বেঁধে বা প্রিয়জনের হাত ধরে বইমেলা প্রাঙ্গণে বিস্তর ঘোরাঘুরি করলেও ফেরার সময় হাত ছিল শূন্য। এমন কজন তরুণের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তারা কেবল ঘুরতে এসেছেন।
রাজধানীর বংশাল থেকে আসা এক তরুণী বললেন, ‘বইমেলা এত বড় একটা ইভেন্ট। এখানে এসেছি জাস্ট দেখতে। বইটই পড়তে আমার ভালো লাগে না। ’
আরেক তরুণ বললেন, ‘বইমেলায় অনেক সেলিব্রেটি আসেন। যদি কারও সঙ্গে সেলফি তোলার সুযোগ হয়, সে জন্য এলাম মেলায়। ’
তবে মেলায় বিক্রি নিয়ে প্রকাশকেরা বেশ সন্তুষ্ট। অ্যাডর্ন পাবলিকেশনের প্রকাশক সৈয়দ জাকির হোসাইন বললেন, গত কয়েকদিনের মেলার পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছে, এই ধারাটা এবার শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। শুরু থেকে বিক্রি বেশ ভালো হয়েছে। লোকসমাগম বৃদ্ধিতে মেট্রোরেলের একটা প্রভাব রয়েছে। আর যারা আসছেন, একটা সময় তারা ঘুরতে আসলেও একটা-দুটো বই কিনছেন। বইয়ের সঙ্গে একটা সখ্যতা হচ্ছে, এটাও তো একটা প্রাপ্তি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪
এইচএমএস/এমএম