ঢাকা: এ বছর অমর একুশে বইমেলায় বঙ্গবন্ধু প্যাভেলিয়ন ও শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে রচিত বই রাখা হবে কিনা বিষয়ে বাংলা একাডেমির কোনো নির্দেশনা নেই বলে জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘অমর একুশে বইমেলা-২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে একাডেমির সচিব ড. সেলিম রেজাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অমর একুশে বইমেলা পরিচালনা কমিটি সদস্য সচিব ড. সরকার আমিন।
এবারের বইমেলায় বঙ্গবন্ধু প্যাভেলিয়ন ও বই প্রকাশ নিয়ে কোনো ধরনের বিধিনিষেধ থাকবে কি না বা বাংলা একাডেমি কোনো নির্দেশনা দেবে কি না - এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, আমাদের কিছু নীতিমালা আছে সেসব নীতিমালা মানা হবে। সেখানে দেশদ্রোহী, জাতিদ্রোহী, ইতিহাস দ্রোহী যেগুলো নীতি বিরুদ্ধ যে পুস্তক সেসব বিষয়ে নীতিমালা রয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত বই প্রকাশিত হবে কি না, মেলায় থাকবে কিনা সে বিষয়ে বাংলা একাডেমির কোনো নির্দেশনা নেই। কিন্তু কোনো প্রকাশক যদি সে বিষয়ে নিজে থেকেই নির্ধারণ করে সেখানে বাংলা একাডেমি থেকে করতে বা না করতে বাধ্য করবে না।
এ বিষয় নিয়ে যদি প্রকাশকদের মধ্যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় তখন বাংলা একাডেমি কী ব্যবস্থা নেবে জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, বাংলা একাডেমি কারো নিরাপত্তা বা সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিষ্ঠান নয়। আমাদের কর্তব্য যারা সুরক্ষা দেবে তাদেরকে এসব বিষয়ে অবগত করা। মেলাতে যেসকল সংকট তৈরি হতে পারে সেসব বিষয় নিয়ে একাধিক মিটিং করে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার যে দায়িত্ব কর্তব্য সে সেটা করবে। এরপরও যদি আমাদের কিছু করার থাকে সেসব বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বইমেলার প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, আমরা অমর একুশে বইমেলার কার্যক্রম যথাসময়ের আগেই সম্পন্ন করে ফলতে পারব। আজকে আমি মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেছি। বিগত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি এবছর আমরা কোনো দিক দিয়ে পিছিয়ে নেই। আমরা অসম্ভব পরিশ্রম করেছি, তবে এতে নানারকমের ত্রুটি বিচ্যুতি আছে, সীমাবদ্ধতা আছে। সেসব বিষয় মোকাবিলা করে আমাদের এ প্রস্তুতি নিতে পেরেছি।
পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, এবারের মেলা নিয়ে আমাদের যথেষ্ট পরিমাণ ও পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। বইমেলার প্রবেশ ও বাহিরপথে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, আনসার ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য মেলায় এলাকাজুড়ে তিন শতাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বইমেলা পলিথিন ও ধূমপানমুক্ত থাকবে। সব দিক বিবেচনা করে আমাদের নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের পরিকল্পনা সাজিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাচ্ছে অমর একুশে বইমেলা ২০২৫। শনিবার বিকেল ৩টায় বইমেলা উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত (৮ ফেব্রুয়ারি ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ব্যতীত)। ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা শুরু হবে সকাল ৮টায় এবং চলবে রাত ৯ টা পর্যন্ত।
আগের নিউজ লিংক>> বইমেলা শুরু ১ ফেব্রুয়ারি, পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৫
জিসিজি/এসএএইচ