এবারের মেলায় লেখক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব তুষার আবদুল্লাহর মোট তিনটি বই। এরমধ্যে গণমাধ্যম ভিত্তিক ‘দলবাজি সাংবাদিকতা’ ও ‘বিজ্ঞাপন ব্যবচ্ছেদ’ বই দুটি ইতোমধ্যেই প্রকাশিত এবং অপর বইটি—শিশুতোষ ‘চল বড় হই’ ফেব্রুয়ারির ২০ তারিখে মেলায় আসবে।
১৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার বইমেলা প্রাঙ্গণে—নতুন প্রকাশিত বই ও বইমেলা আয়োজনসহ নানা বিষয়ে তুষার আবদুল্লাহর সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের।
মেলায় আজকে-সহ কয়দিন এলেন, কেমন লাগছে মেলায় এসে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সোমবারের মেলা দেখে আনন্দ পেয়েছি। অন্যদিনের চেয়ে পাঠক উপস্থিত বেশি ছিল। সোমবার কমবেশি সব স্টলের সামনেই ভিড় ছিল। সবার হাতে বই ছিল। ’
বিশেষ কোনও পর্যবেক্ষণ আছে মেলা নিয়ে, যা অন্যবারের তুলনায় এবারের মেলাকে আলাদা করে?
তুষার আবদুল্লাহ বলেন, আলাদা যে বিষয়টি সেটি হলো বিচ্ছিন্নতা—বাংলা একাডেমির সঙ্গে বইমেলার বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছে। মূল অঙ্গনের সঙ্গে আত্মিক যোগাযোগটা কমে গেছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যদি কেউ সরাসরি চলে আসেন, তাহলে তার ভাবনায় বাংলা একাডেমির চত্বরটি থাকছে না। ’
এবং তিনি অভিযোগ করেন, ‘শিশুদের সঙ্গেও একধরনের প্রতারণা করা হচ্ছে। ’
বলেন, শিশুচত্বরে যাদের জায়গা দেয়া হয়েছে, তাদের চেয়ে অনেক বেশি গুণগত মানসম্পন্ন বই প্রকাশ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রকাশকরা। এটা অনেক অভিভাবক জানেন না। তারা বাংলা একাডেমির শিশু চত্বরে গিয়ে শিশুদের বই খোঁজ করছেন। কিন্তু সেখানকার বইগুলো কতটা ভালো বই, এনিয়ে আমার সংশয় রয়েছে। ’
আপনি কি শিশু চত্বরটিকে মূল মেলার সঙ্গে যুক্ত করার পক্ষে?
‘অবশ্যই। এবার মেলা যতটা বড় করা হয়েছে তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। খোলামেলা। পাঠকরা সহজেই বই দেখতে পারছেন। এরসঙ্গে অনায়াসেই শিশু কর্নারটিও থাকতে পারত। ’
এবার প্রকাশিত বইগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে তুষার আবদুল্লাহ বলেন, ‘বিজ্ঞাপণ ব্যবচ্ছেদ’-এ বাংলাদেশের প্রথম টিভি বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে এখনকার বিজ্ঞাপন পর্যন্ত প্রায় ৫০টি বিজ্ঞাপনের ব্যবচ্ছেদ করেছি। বেতার, পত্রিকা ও বিলবোর্ডের বিজ্ঞাপন আলোচনায় এসেছে। রবীন্দ্রনাথের—বিজ্ঞাপনের মডেল হওয়া নিয়েও আলোচনা করেছি। বিজ্ঞাপন সমাজকে কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, মানুষকে কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে এবং কিভাবে ভুল তথ্য দেয় এই বিষয়গুলো উঠে এসেছে।
লেখাগুলো কি একেবারেই নতুন, নাকি আগে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত?
‘কোথাও প্রকাশ করিনি। নতুন পুরোটাই। আর অন্য বইটি ‘দলবাজির সাংবাদিকতা’ সাংবাদিকরা যে রাজনৈতিকভাবে বিভাজিত হয়ে পড়ছে—সে বিষয়গুলো নিয়ে। দলবাজির পর্যায়ক্রমিক বিবর্তন ও বর্তমান অবস্থটা উঠে এসেছে বইটিতে। এখানকার দুটি লেখা আগে বাংলানিউজে প্রকাশ হয়েছে, বাকি সব নতুন। ’
বইমেলা নিয়ে মজার বা উল্লেখ করার মত কোনও অভিজ্ঞতা?
‘মেলায়ে গিয়ে স্টল থেকে বই মেরে দিতে ইচ্ছে হয়। আগে যেমন ঢাকার বিখ্যাত লাইব্রেরিগুলো থেকে মারতাম। কষ্ট করে লোভ সামলিয়ে রাখার চেষ্টা করছি!’
আপনার চুরি করা সবশেষ বই কোনটি?—জানতে চাইলে তুষার আবদুল্লাহ বলেন, মাহমুদুল হকের উপন্যাস ‘কালো বরফ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৫