ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

মেলায় ৪৫ টাকায় মিলছে পোস্টাল কার্ড

সাজেদা সুইটি, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৬
মেলায় ৪৫ টাকায় মিলছে পোস্টাল কার্ড ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

অমর একুশে বইমেলা থেকে: অনেকেই এ কার্ড সম্পর্কে জানেন না, তবে জেনে আর দেরি করতেও চাচ্ছেন না। দ্রুত সময়ের সিদ্ধান্তে মালিক হচ্ছেন একটি পোস্টাল কার্ডের।

কম খরচে নিরাপদ ব্যাংকিংয়ের সুবিধা নিতে চান তারা।

মানুষের হাতের কাছেই এ সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার আগ্রহে বাংলাদেশ ডাকবিভাগ এ কার্ড এনেছে গ্রন্থমেলায়। বাংলা একাডেমির পুকুর পাড়ে তাদের স্টলে তাৎক্ষণিক নেওয়া যাবে কার্ডটি।

তিন কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি (রঙিন), জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নিয়ে এসে মাত্র ৪৫ টাকায় একটি কার্ডের মালিক হওয়া যাচ্ছে। কার্ডটি কাজ করবে কিনা সেটিও যাচাই করা যাবে স্টলে বসেই। যেকোনো অংকের টাকা এখানে রেখে কার্ড দিয়ে উঠিয়েও নেওয়া যাবে।

এভাবেই নিজের নতুন কার্ড চেক করলেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের অ্যাসিসট্যান্ট সিস্টেম অ্যানালিস্ট মো. আব্দুর রউফ খান।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, সরকারি চাকুরে হয়েও এ কার্ড সম্পর্কে সেভাবে জানতাম না। আজ জানলাম, যা যা লাগে, পকেটেই ছিল। তাই কার্ডটি নিয়েই নিলাম।

১০০ টাকা অ্যাকাউন্টে রেখে ৫০ টাকা তুলে নিলাম। তার মানে কার্ড কাজ করছে।

স্টলে এসব দায়িত্ব পালন করছেন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর উত্তম কুমার চন্দ্র। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এ কার্ড খুব সুবিধাজনক। সেভাবে এখনো প্রচার পায়নি। তবে যারাই এ সম্পর্কে যখন জানছেন, দেরি না করেই নিয়ে নেন। সারাদেশে ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ লাখের বেশি গ্রাহক রয়েছেন।

উত্তম বলেন, ৪৫ টাকা ব্যয়ে কার্ডটি নেওয়ার পর প্রক্রিয়ায় মাত্র ৩৫ টাকা খরচ হয়ে বাকি ১০ টাকা অ্যাকাউন্টেই থেকে যাবে। কম খরচে টাকা লেনদেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বেতন-ভাতা দেওয়ার কাজে এটি জনপ্রিয় হচ্ছে। টাঙ্গাইলে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতা, বিভিন্ন পল্লী উন্নয়নমূলক কাজে এ কার্ড ব্যবহার হচ্ছে।

যেকোনো উপজেলার ডাকঘরেই এটি পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি। এতে কোনো মাসিক বা বার্ষিক চার্জ নেই। সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা রাখা যাবে কার্ডভিত্তিক এ অ্যাকাউন্টে। দিনে অন্তত দু’বার টাকা তোলা যাবে যেকোনো ডাকঘর বা ২৪টি ব্যাংকের এটিএম কার্ড থেকে। প্রতিবারে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার করে মোট এক লাখ টাকা উত্তোলন করা যাবে।

যেকোনো ডাকঘরে টাকা জমা ও তোলা যাবে রোববার থেকে বৃহস্পতিবার। এটিএম কার্ড থেকে তোলা যাবে যেকোনো দিন, যেকোনো সময়। ডাকঘর থেকে যেকোনো অংকের টাকা তুলতে লাগবে মাত্র ৫ টাকা, যেকোনো এটিএম কার্ড থেকে তুলতে লাগবে ১০ টাকা।

উত্তম বলেন, প্রথম দু’দিন সেভাবে গ্রাহক পাইনি, তবে এরপর একজন অন্যজনের কাছ থেকে জেনে আসতে থাকলেন। যারাই এলেন, তারা নিজের ও আপনজনদের জন্য এ কার্ড করছেন। এমনকি উপহারও দিচ্ছেন এ কার্ড। এভাবে ৩০০টি কার্ড ইতোমধ্যে গ্রাহকের হাতে পৌঁছেছে মেলায়।

তিনি জানান, এর আগে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড মেলায় তিনদিনে ১৭শ কার্ড  নিয়েছেন গ্রাহকরা।

উত্তম বলেন, এ কার্ডটি করে রাখা ভালো। যেকোনো ডেবিট কার্ড খরচ সাপেক্ষ। কিন্তু এ কার্ড তা নয়। টাকার নিরাপদ আদান-প্রদানে সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এদিকে মনোযোগী হয়েছে।

এছাড়া নতুন প্রকল্প পোস্ট ই-সেন্টারও কার্যকর হচ্ছে। কম খরচে টাকা আদান-প্রদান সুবিধা দিচ্ছে এ বিভাগ। বিশ্বে সর্বপ্রথম বাংলাদেশের ডাকবিভাগই এ সুবিধা দিচ্ছে বলে দাবি উত্তমের। হাজার প্রতি মাত্র সাড়ে ১৮ টাকায় লেনদেন করা যায় এতে।

মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে বলেন,
এসব সুবিধা সবাই নিলে রাষ্ট্র লাভবান হবে। আমাদের রাজস্বে যোগ হবে এ আয়। বিশেষ করে সরকারি চাকুরেদের এ বিষয়ে দায়িত্ব নিয়ে এগোতে হবে। সবাই নিরাপদে ব্যাংকিং সুবিধা পাক- সরকারের এটাই চাওয়া। আর সেজন্যই এসব উদ্যোগ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৬
এসকেএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।