অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে: ছোট ছোট স্টলে একা একা সময় পার। একটি চেয়ার আর সামনের টুলে এক স্টল।
শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মেলার ১৯তম দিন সকাল থেকে সারামেলা (মেলার দুই প্রাঙ্গণ) ঘুরে দেখা যায় লোকে লোকারণ্য। বই কিনছেন আগতরা। হাতে হাতে প্যাকেট, মুখে হাসি। ঠিক তার বিপরীত চিত্রে লিটলম্যাগ চত্বরে! সেখানে নেই অগণিতের আনাগোনা। নেই ছোটাছুটি। আছে কবিদের আড্ডা এবং খানিক ছবি তোলার আনুষ্ঠানিক আয়োজন।
কথা হলো লিটলম্যাগ স্টল কবি’র বিক্রেতা এনামুল হকের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এবছর লোকজন এখানে কম। আগের মতো জৌলুস আর নেই বললেই চলে। আসলে লিটলম্যাগে পাঠকের আগ্রহ কমেছে, সেটাই প্রধান কারণ।
পাশে থাকা লিটলম্যাগ পর্ব’র কর্মী আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আগে শিশুচত্বর ছিল বাংলা একাডেমি অংশে। তখন এই প্রাঙ্গণে অনেক মানুষ আসতেন, এখন তো একাডেমি অংশেই মানুষজন কম আসেন, আর আমাদের চত্বর তো বাদই দিলাম। মেলা দুই ভাগ হওয়া (বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী), পাঠকের আগ্রহ কম, অনলাইন-ব্লগভিত্তিক লেখালেখির চর্চা- মূলত এসব কারণে এ চত্বরে আর ভিড় জমে না। আসে না গমগমে পরিবেশ।
সাহিত্য-দর্শন ও শিল্প-চেতনায় গতানুগতিক ধারার বিরোধীরাই মূলত লিটলম্যাগ আন্দোলনের পথিকৃৎ। নিজস্ব চিন্তাচেতনার বিকাশ-প্রকাশে তাদের হাতিয়ার ছোট কাগজ। যা তাদের সময়ের মুখপত্র।
লিটলম্যাগ লেখকরা সমাজে ততটা পরিচিত নন। কবিরা বলেন, সম্পাদক নিজেই প্রকাশকের ভূমিকায়, সেটাই লিটলম্যাগ। আবার সেই সম্পাদকই অন্য ম্যাগের সমালোচক বা পাঠক।
বরাবরের মতো এবারও শহীদুল্লাহ ভবনের পাশে বহেড়া তলায় লিটলম্যাগ চত্বর। এখানে মোট ৯২টি স্টল রয়েছে। এ স্টলগুলো মেলার অন্য স্টলের মতো বড় ও জাঁকজমক নয়, ঠিক তেমন ক্রেতায় জমজমাটও নয়।
এ বিষয়ে রাষ্ট্র লিটলম্যাগের সম্পাদক ফরহাদ নাইয়া বাংলানিউজকে বলেন, লিটলম্যাগ পড়তে হলে বা এখান থেকে প্রকাশিত বইগুলো নিতে হলে আমাদের মতো চিন্তাধারার হতে হবে। যে কোনো একজন পাঠক এসেই আমাদের এখান থেকে বই-ম্যাগ নিয়ে নিতে পারেন না বা নেন না। মোদ্দা কথা লিটলম্যাগ এখন টিকেই আছে এর লেখক যখন পাঠক আর পাঠক যখন লেখক এমন ভিত্তিতে।
নিজের আড়াই বছরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে অর্বাক লিটলম্যাগের বিক্রেতা রক্তিম রাজীব বাংলানিউজকে বলেন, এতো বছরে কখনও এমন লোকশূন্য পরিস্থিতি দেখিনি। এবার যে খরা যাচ্ছে এই চত্বরে তাতে আমাদের শঙ্কাই জাগছে।
তিনি আরও বলেন, তবে ভালো বই যে বিক্রি হচ্ছে না তা কিন্তু নয়। তবুও আমাদের আশানরূপ নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৬
আইএ/এএ