ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

গ্রন্থমেলার প্রথম দিনে বইয়ের ঘ্রাণে উদ্দীপনা

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৮
গ্রন্থমেলার প্রথম দিনে বইয়ের ঘ্রাণে উদ্দীপনা মেলার প্রথম দিনে স্টলে অটোগ্রাফ দিচ্ছেন কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন/ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: একুশের গ্রন্থমেলা নানাদিক থেকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। একদিক থেকে তা যেমন বইবান্ধব সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখে, অন্যদিকে সাহিত্যের উৎকর্ষ সাধনে সহায়ক হয়। সঙ্গে নতুন বইয়ের মন মাতানো ঘ্রাণ। সে ঘ্রাণে মুগ্ধ হয় বইপ্রেমীরা। 

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী মেলা উদ্বোধন করার পর বিকেলে মেলার প্রথম দিনেই বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছিল জনমানুষের সমাগম। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর মেলার প্রথম দিন হিসেবে বইপ্রেমীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

লেখক, পাঠক, কবি, প্রকাশক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিশু-কিশোরসহ প্রায় সব শ্রেণী-পেশার মানুষেরই সমাগম ছিল এদিন। সবাই বইয়ের মলাটে মুখ ডুবিয়ে ঘ্রাণ নিয়েছেন নতুন বইয়ের। প্রথম দিনে বই কিনেছেনও অনেকেই।

মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা হয় বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় লেখক ইমদাদুল হক মিলনের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রথম দিন মেলায় এসে মনে হচ্ছে এবারের মেলা বিগত বছরের তুলনায় আরও ভালো হবে। এবারে মেলার পরিসর বড় হয়েছে, দোকানগুলো সুবিন্যস্ত, পরিবেশও সুন্দর। প্রথম দিনে তো তেমন কিছু বোঝা যায় না, তবে আগামীকাল শুক্রবার থেকে জনসমাগম আরো বাড়বে বলে আশা করছি।

তার পাশেই কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবিবা রিসির সঙ্গে। বইয়ের মলাটে ডুবিয়ে রাখা মুখ তুলে তিনি বলেন, নতুন বইয়ের একটা আলাদা ঘ্রাণ থাকে। এ এলাকা এখন সেই ঘ্রাণেই মানুষকে টেনে আনছে। মেলার প্রথম দিন আসতে পেরে ভালো লাগছে ভীষণ। সঙ্গে প্রিয় লেখকের অটোগ্রাফসহ বই কিনতে পেরে উচ্ছ্বসিত।

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, প্রায় ৫০টি স্টল এখনও পরিপূর্ণভাবে চালু করতে পারেননি স্টল মালিকরা। অনেকগুলো স্টলেই এখনও চলছে রঙের কাজ। সে সঙ্গে মেলা প্রাঙ্গণে ছড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে স্টলের সজ্জার ব্যবহৃত সরঞ্জাম। মেলার দর্শনার্থীদের জন্য এখনও চালু হয়নি টয়লেট ব্যবস্থা।

বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের বহেরাতলায় অবস্থিত লিটলম্যাগ চত্বরটিতেও এখনো চালু হয়নি কোনো স্টল। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলানিউজের কথা হয় মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. জালাল আহমেদের সঙ্গে।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, মেলার নীতিমালা অনুযায়ী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে মেলার স্টল সজ্জার কাজ সম্পন্ন করার কথা। যারা করেনি আশা করি তারা শুক্রবারের মধ্যে স্টল চালু করবেন। না করলে নীতিমালা অনুযায়ী স্টল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

লিটলম্যাগ চত্বরের বিষয়ে তিনি বলেন, এ চত্বরটি প্রথমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে লিটলম্যাগের সত্ত্বাধিকারীদের দাবির মুখে সেটি বহেরাতলায় স্থানান্তর করা হয়। সেজন্য কিছু কাজ এখনও বাকি। শুক্রবারের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা করছি।

মেলার সার্বিক বিষয় নিয়ে বাংলানিউজের কথা হয় বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে। প্রথম দিনের মেলা নিয়ে তিনি বলেন, এখনো কিছুটা অগোছালো রয়েছে মেলা। তবে স্টলের বিন্যাস ও আলোর ব্যবস্থা সুন্দর হয়েছে। আশা করছি, সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।

মেলা প্রসঙ্গে কথা হয় ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এবারের গ্রন্থমেলার পরিসর বেড়েছে। আশা করা যায় গুণগত মানের দিক থেকে আমরা এবার আরও অগ্রসর হবো।  

তিনি বলেন, মুদ্রিত বইয়ের ভবিষ্যৎ যে অনিশ্চিত নয়, একুশের গ্রন্থমেলা ঘিরে মানুষের বিপুল উদ্দীপনা তারই প্রমাণ।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৮
এইচএমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।