বাঙলার ইতিহাস একটি গৌরবময় রাজনীতির ইতিহাস। পরাধীনতার শৃঙ্খল মুক্ত হওয়ার বিদ্রোহের ইতিহাস।
বর্তমান প্রজন্মকে সে পাঠ থেকে বিমুখ বলেই মনে হচ্ছে। অমর একুশে গ্রন্থমেলায় সে বিদ্রোহের ইতিহাস কিংবা রাজনীতির বইগুলোতে তেমন আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়নি।
সেই বিখ্যাত তেভাগা আন্দোলন, ফকির বিদ্রোহ, সিপাহী বিদ্রোহ, সাঁওতাল বিদ্রোহ, টঙ্ক আন্দোলন ইত্যাদির চেয়ে যেন সকলে গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, অনুবাদ, ভ্রমণকাহিনী নিয়েই পড়ে আছে।
প্রকাশনী সংস্থাগুলোও বলছে, তাদের বইগুলোর তেমন পাঠক নেই। ফলে নতুন প্রজন্ম ইলা মিত্র, তিতুমীর, হাজী শরিয়ত উল্লাহ, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন, বিপ্লবী নলিনী দাসদের সংগ্রামের কথা জানতেই পারছে না।
হুসনে আরা নাজনীন নামের এক শিক্ষিকা বলেন, একজন ভাল পাঠককে সব ধরনের বই পড়া উচিত। আর দেশপ্রেমিক হতে হলে অবশ্যই তার ইতিহাস, রাজনীতি, সংগ্রাম সম্পর্কে জানতে হবে। কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা পরিবার থেকে ওইসব বই পড়ার প্রতি উৎসাহিত হচ্ছে না। ফলে সমগ্র প্রজন্ম প্রযুক্তি নির্ভর শেকড়হীন হয়ে উঠছে।
বিপ্লবীদের কথা নামের এক প্রকাশনী সংস্থার ম্যানেজার লাবণী মণ্ডল বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের বইয়ের তো পাঠকই নেই বলা চলে। কেমন আর বিক্রি হবে। এবার ছয়টি বই তারা নতুন এনেছে। এর মধ্যে আহমদ রফিক'র ইলা-রমেন কথা বইটির প্রতি অনেকের আগ্রহ রয়েছে। বাকিগুলো তেমন আগ্রহ নেই। তবে যারা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের বই পড়তে চান, কেবল তারাই সাড়া দিচ্ছেন।
স্টলটির সামনে কথা হয় অবসর প্রাপ্ত অধ্যাপক সাইদ ইকবালের সঙ্গে। তিনি বলেন, একটা সময় এমন হবে যে, প্রজন্ম জানবেই না লড়াই-সংগ্রামের কত গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। এটা তো আমাদের শেকড়। তা জানলে জাতি এগুবে কি করে। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পরিবার থেকেই এসব জানার জন্য প্রেরণা দিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৮
ইইউডি/এসএইচ