শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বইমেলার শেষ সপ্তাহের শুরুতেই জমে উঠে শিশুপ্রহর। সকাল ১১টায় দ্বার খোলার সঙ্গেসঙ্গেই বাবা-মা’র হাত ধরে বইমেলায় চলে এসেছে ছোট ছোট শিশুরা।
বাবা-মা’র কাছে নতুন বইয়ের বায়না ধরছে কেউ। কেউ খেলছে লুকোচুরি। অনেকে আবার রূপকথার গল্পের মতো একে অপরের গলা জড়িয়ে দুলেদুলে গান গাইছে।
বইমেলার শিশু কর্নারের এই আনন্দমেলায় কথা হয় কয়েকজন শিশুর সঙ্গে। মেলা কেমন লাগছে জানতে চাইলে মিরপুর থেকে আসা ৩ বছর বয়সী দীপা বলে, অনেক মজা হচ্ছে মেলায়। বই কিনেছ? এ প্রশ্নের উত্তরে বলে, ভূতের বই কিনেছি। ঠিক তখন পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লামিয়া ভয় দেখানোর অভিনয় করে চিৎকার দিয়ে বলে ওঠে, ওরে বাবা ভূত!
শিশুদের এ আনন্দে খুশি অভিভাবকরাও। তারাও চায় শিশুদের বইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার ধারণা দিতে।
মোহাম্মদপুর থেকে আসা ইসমাইল হোসেন বলেন, ওদের মধ্যে যেন সৃষ্টিশীলতার ব্যাপারটি তৈরি হয়, সেই চেষ্টা করছি। সেজন্য এ বয়সেই বইয়ের জগতের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই।
শিশু প্রহর সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি অবশ্যই বইমেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এখানে শিশুরা একে অপরের সঙ্গে মিশতে পারে। আগামী শিশু প্রহরে বাচ্চাদের জন্য সংরক্ষিত স্থান আরও বাড়ানোর অনুরোধ রইলো।
রৌদ্রজ্জ্বল দিনে ধীরে ধীরে আরও বেশি সরগরম হয় বইমেলা। নানান সাজ-পোশাকে মেলায় প্রবেশ করতে থাকে আরও শিশু। তাদের ছোট ছোট পায়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভিড়ে যোগ দেয় বড় বড় পা’গুলোও।
বটতলায় একসময় সিসিমপুরের টুকটুকি আর হালুমেরা আসে। তাদের দেখে শিশুদের চোখের পলক যেন পড়ে না। দূর থেকে বাকিরা দেখে বাবার কাঁধে চড়ে। বইমেলার শিশুপ্রহরে এই সিসিমপুর শিশুদের অন্যরকম এক আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।
সিসিমপুরের বন্ধুদের সঙ্গে বন্ধুত্ব শেষে ব্যাগভর্তি করে বই নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা গেল অনেক শিশুকে। কাউকে কাউকে আবার আগামীকাল আসার জন্য বায়না ধরতে দেখা গেল।
শিশুপ্রহর আজ শেষ হলেও শিশু চত্বর খোলা থাকবে মেলার শেষ দিন পর্যন্ত। সন্তানদের বইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে শিশুপ্রহর খুবই চমৎকার একটি উদ্যোগ, জানালেন অভিভাবকদের অনেকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৮
এইচএমএস/এনএইচটি