ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বইমেলা

বইমেলায় দশ দিনে ১৪০৩ বই

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৯
বইমেলায় দশ দিনে ১৪০৩ বই .

গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ থেকে: অমর একুশে গ্রন্থমেলার প্রথম ১০দিন শেষ হয়েছে। এ কদিনে মেলায় নতুন বই এসেছে মোট এক হাজার ৪০৩টি। এসব বইয়ের মধ্যে প্রকাশে এগিয়ে কবিতার বই। আর পিছিয়ে আছে রচনাবলী, অভিধান, রাজনীতি, অনুবাদ, নাটক, স্বাস্থ্য বিষয়ক ও রম্য রচনা।

রোববার (১০ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে।

বিভাগ সূত্র তথ্যমতে, মেলার প্রথম দশ দিনের বইয়ের মধ্যে গল্প ২২০টি, উপন্যাস ২২৯টি, প্রবন্ধ ৮০টি, কবিতা ৩৯৬টি, গবেষণা ২৬টি, ছড়া ৩৫টি, শিশোতোষ ৪৬টি, জীবনী ৪৪টি, রচনাবলী চারটি, মুক্তিযুদ্ধ ৪২টি, নাটক ১৩টি, বিজ্ঞান বিষয়ক ২৬টি, ভ্রমণ ৩০টি, ইতিহাস ২৫টি, রাজনীতি ১২টি, স্বাস্থ্য বিষয়ক ১১টি, কম্পিউটার বিষয়ক তিনটি, রম্য রচনা ১৪টি, ধর্মীয় আটটি, অনুবাদ পাঁচটি, অভিধান একটি, সায়েন্স ফিকশন ২১টি এবং অন্যান্য ১১২টি।

এদিকে মেলার দশম দিনে মোট নতুন বই এসেছে ৯০টি। এরমধ্যে কথা প্রকাশ এনেছে ইমদাদুল হক মিলনের ‘আমার প্রেমের উপন্যাস’, পার্ল পাবলিকেশন্স এনেছে আনিসুল হকের ‘নিষিদ্ধ কৌতুক’, ঐতিহ্য এনেছে আলতাফ পাভেজের ‘বার্মা জাতিগত সংঘাতের সাত দশক’, হাওলাদার প্রকাশনী এনেছে সুদীপ্ত হাননানের গবেষণা গ্রন্থ ‘আহমদ ছফা চর্চা’, কলি প্রকাশন এনেছে আমীরুল খসরুর বাংলার লোক গল্প নিয়ে ‘বাংলার গল্প বাঙালির গল্প’, ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন এনেছে ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইটের অটিজম বিষয়ে গবেষণা গ্রন্থ ‘অটিস্টিক শিশুরা বোঝা নয়’, হাওলাদার প্রকাশনী এনেছে নেহাল করিমের বাঙালি ‘জাতীয়তাবাদ ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়’, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র এনেছে শবনম মুশতারীর ‘তালিম হোসেন জন্মশতবর্ষ ২০১৮’, প্রত্যয়ন এনেছে রাশেদ রউফের ‘বাবারা কি মায়ের মতো হয়’, কলি প্রকাশনী এনেছে দীপু মাহবুবের সায়েন্স ফিকশন ‘ফোরফিফটিটুবি’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।  

বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘কথাশিল্পী অমিয়ভূষণ মজুমদার: জন্মশতবর্ষ শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক আলোচনা সভা। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মহীবুল আজিজ। আলোচনায় অংশ নেন হোসেনউদ্দীন হোসেন, মাহবুব সদিক এবং হরিশংকর জলদাস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সেলিনা হোসেন।  

প্রাবন্ধিক বলেন, এক প্রবল দায়বদ্ধ লেখক অমিয়ভূষণ মজুমদার। আদিতে ছিলেন পূর্ববঙ্গের পাবনার মানুষ, স্থিত হলেন উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে। রাজনীতির নিয়তি নির্দিষ্ট অধিকাংশের মতন কলকাতারও নয়, হয়ে পড়েন কলকাতা ছাড়িয়ে আরও দূরের জন। আর সেখান থেকেই দারুণ দার্ঢ্য নিয়ে অধিষ্ঠিত হন কেন্দ্রে, পরিণত হন বাংলা সাহিত্যের অনিবার্য লেখক। তার সাহিত্য-বিচারের ক্ষেত্রে কেন্দ্রিকতা-প্রান্তিকতা প্রভৃতি হিসেবকে সম্পূর্ণ বাইরে রাখতে হয় যখন তিনি কলকাতাকে অভিহিত করেন ‘ঔপনিবেশিক শহর’ রূপে। সুদীর্ঘ অতিক্রান্ত কালের পরেও সে-শহর ঔপনিবেশিক শক্তিসৃষ্ট শহর শুধু নয় তা উপনিবেশিত দৃষ্টিভঙ্গির অতিরেক বৃহত্তর মূল্যে উত্তীর্ণ হতে না পারায় তাকে সংকীর্ণ চৌহদ্দি বলে মনে করতেন অমিয়ভূষণ।  

সভার আলোচকরা বলেন, অমিয়ভূষণ মজুমদারের উপন্যাসের একটা বড় পরিপ্রেক্ষিত হলো নর-নারীর সম্পর্কের জটিলতা। কিন্তু সে জটিলতার সামাজিক ব্যাকরণটিকে বাদ দেন না তিনি। বাংলা কথাসাহিত্যের অসামান্য অধীশ্বর অমিয়ভূষণ মজুমদারের ‘হিসাব-নিকাশ উলটেপালটে দেওয়া’ মানুষদের জীবনের ইতিহাসের হিসাব ঠিক-ঠিক লিপিবদ্ধ করে রেখে গেছেন; সে কারণেই তিনি স্মরণীয়।  

সভাপতির বক্তব্যে সেলিনা হোসেন বলেন, জন্মশতবর্ষে অমিয়ভূষণ মজুমদারকে স্মরণ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রান্তবর্তী মানুষের অন্তর্গত বেদনা, সংগ্রাম ও সংকল্পের দায় তিনি তার কলমের সঙ্গে অঙ্গীকৃত করে নিয়েছেন। বাংলা সাহিত্যের ভিন্ন ধারার কথাশিল্পী হিসেবে অমিয়ভূষণ মজুমদার পাঠকের কাছে অনাগতকালে উপস্থাপিত হবেন ভিন্নতর ব্যঞ্জনায়।  

আলোচনা শেষে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন মুহম্মদ নূরুল হুদা এবং সঞ্জীব পুরোহিত। আবৃত্তি পরিবেশন করেন মীর মাসরুর জামান রনি এবং লাবণ্য শিল্পী। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী আলম দেওয়ান, রণজিত দাস বাউল, মমতা দাসী বাউল, লতিফ শাহ এবং মো. আনোয়ার হোসেন।

আগামীকাল সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১১তম দিন। এদিন মেলা চলবে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘নৃত্যাচার্য বুলবুল চৌধুরী: জন্মশতবর্ষ শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক আলোচনা সভা। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অনুপম হায়াৎ। আলোচনায় অংশ নেবেন আমানুল হক, লুভা নাহিদ চৌধুরী এবং শিবলী মহম্মদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কামাল লোহানী। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৯
এইচএমএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।