অমর একুশে গ্রন্থমেলায় হাতে বানানো এমন বাহারি সব বই নিয়ে হাজির হয়েছে নালন্দা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আর এসব বইয়ে ঠাঁই পেয়েছে তাদের গল্প-কবিতা।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বইমেলার শিশু চত্বরে প্রদর্শন করা হয় এ বইগুলো। নালন্দা বিদ্যালয়ের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা একক ও দলগতভাবে নিজেদের হাতে তৈরী করেছে এসব বই।
এমন ব্যাতিক্রমী কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে নালন্দা বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শেখ ফাবিহা হক বলে, আমরা নিজেদের ভাবনা চিন্তা থেকেই এই বইগুলো তৈরি করি। বইয়ের পাতায় পাতায় লিখি নিজেদের গল্প, কবিতা, রিসার্চ বা ভালো লাগার যে কোনো বিষয়। তারপর নিজেদের মতো করে লেখার সঙ্গে মানিয়ে যোগ করি ছবি, কাভার, অলংকরণ।
দশম শ্রেণীর আরেক শিক্ষার্থী সুহৃদ সৌম্যদীপ বলে, আমরা যখন এ বইগুলো বানাই তখন আমাদের ছোটরাও অনুপ্রাণিত হয়। তারাও নিজেদের মতো করে বই তৈরি করে। আমরা আমাদের পাঠ্য বইয়ের বিভিন্ন বিষয়কে আলাদা আলাদা ভাগ করে স্টাডি করি, পরে নিজেদের মতো করে সেসব উপস্থাপন করি বইগুলোতে।
শিখার্থীদের নিয়ে এ ধরনের ভিন্ন মাত্রারর আয়োজন প্রসঙ্গে কথা হয় কথাসাহিত্যিক আলী ইমাম মজুমদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, এই যে শিশুরা এভাবে একটি বই করছে নিজের মতো করে, এর থেকে সুন্দর বই আর হয় না। এখানে শিশুটি যেভাবে তার বিষয়কে উপস্থাপন করতে চাইছে, ঠিক সেভাবেই করছে। এতে তার নিজের মতামত প্রকাশ বা সৃজনী শক্তি আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা শিশুদের জন্য অনেক বড় ব্যাপার।
শিশুদের এ ধরনের বইয়ের ব্যাপারে অভিমত জানতে চাওয়া হয় মেলায় অংশ নেওয়া উৎস প্রকাশনের প্রকাশক মোস্তফা সেলিমের কাছে। তিনি বলেন, আমরা বড় বড় লেখকদের লেখাগুলো যখন হাতে পাই, তখন সেগুলো অনেকটাই এলোমেলো থাকে। পরের কাজগুলো আমাদেরই করতে হয়। কিন্তু এখানে শিশুরাই বই বানিয়েছে নিজেদের হাতে, লিখেছে, প্রতিটি পৃষ্ঠায় এঁকেছে। এমন গোছানো জিনিস বিরল। এই শিশুরা আসলে শুধু লেখক না, একেকজন প্রকাশকও।
শিক্ষার্থীদের নিয়ে এমন কার্যক্রমের ব্যাপারে জানতে চাইলে নালন্দা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শিরিন জাহান তানিয়া বলেন, বিদ্যালয়ের শিশুরা নিজেদের কল্পনা থেকে নানান বিষয়ে লিখে একেকটি বই বানিয়ে ফেলে। এ ক্ষেত্রে কোনোভাবেই তাদের প্রভাবিত করা হয় না। বন্ধুদের মাধ্যমে উৎসাহিত হয়েই এগুলো তৈরি করে তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২০
এইচএমএস/এইচজে