বৃষ্টিস্নাত দিন হওয়ায় মেলার শুরুতেই বৃষ্টির পানি থেকে বই রক্ষার লড়াইয়ে নামতে হয় স্টল মালিকদের। কিন্তু যতো যাই হোক বৃষ্টিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে মাথায় ছাতা ধরে হলেও মেলায় ভিড় জমান অনেক বইপ্রেমী।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ফলে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায়; সিলেট, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝ'ড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে এ ধরনের বৃষ্টির হাত থেকে বইমেলা সুরক্ষিত রাখার প্রস্তুতি বিষয়ে মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা আগেই প্রকাশকদের সতর্ক করে দিয়েছি বৃষ্টির বিষয়ে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা তাদের জানিয়েছি। তারা যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানি। বৃষ্টি হলে মেলার মাঠ থেকে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের প্রস্তুতি আমাদের নেওয়া আছে।
মঙ্গলবারের বৃষ্টি থেকে বই রক্ষায় প্রায় সব স্টলেই প্রাথমিক প্রস্তুতি ছিল। স্টলগুলোর সামনের বইগুলো ঢাকা ছিল পলিথিনে। কিন্তু পাঠকের চাহিদার মুখে গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মধ্যেও সে সব বই উন্মুক্ত করে দিতে হয়েছে।
বৃষ্টি মাথায় করে মেলায় ঘুরতে যাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী আশনা রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বন্ধুদের সঙ্গে আগেই পরিকল্পনা ছিল মঙ্গলবার বই কিনতে আসবো। সকালে বৃষ্টি হওয়ায় মন খারাপ ছিল। পরে বৃষ্টির মধ্যেই বই কিনতে বেরিয়েছি। ভালোই লাগছে। বৃষ্টির কারণে ভিড়টাও অনেক কম। স্বস্তিতে বই দেখা ও কেনা যাচ্ছে।
বৃষ্টিস্নাত দিনে বইয়ের বেচাকেনা প্রসঙ্গে তাম্রলিপি’র স্বত্বাধিকারী এ কে এম তারিকুল ইসলাম রনি বাংলানিউজকে বলেন, এখন আসলে বই বিক্রির সময়। বই দেখার দিন পার হয়ে গেছে। এমন সময় বৃষ্টি হলে বেচাবিক্রিতে বেশ প্রভাব পড়ে। তবে বৃষ্টি উপেক্ষা করেও অনেক বইপ্রেমীই বই কিনতে এসেছেন। এটাই আসলে বইয়ের প্রতি মানুষের ভালোবাসা।
মঙ্গলবার মেলায় নতুন বই এসেছে ৯১টি। এদিন বাংলা একাদডেমির ‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে যার যার নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন সালমা বাণী, রফিকুর রশীদ, সাদ কামালী ও নওশাদ জামিল।
এর আগে গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ ভারী বর্ষণের ফলে বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টায় বন্ধ হয়ে যায় বইমেলা। সেবার মেলা কর্তৃপক্ষ বা স্টল মালিকদের সে রকম প্রস্তুতি না থাকায় বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়। বৃষ্টির শিকার হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সেবার মেলার সময়সীমা দুই দিন বাড়ানো হয়। ২০১৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারিতেও বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে বইমেলা।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০
ডিএন/এইচজে