বইমেলা থেকে: প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে বইমেলা নিয়ে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে বেশ।
মেলা কর্তৃপক্ষ, প্রকাশক সমিতি বা সরকার পক্ষ, কোনো জায়গা থেকেই এখনো পাওয়া যায়নি মেলা বন্ধের নির্দিষ্ট তথ্য। তবে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মাসব্যাপী বইমেলার শেষ দিনটি পর্যন্ত মেলা গড়াবে কিনা, তা নিয়েও জানা যায়নি কিছু।
এ বিয়ষে সোমবার (২৯ মার্চ) রাতে মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. জালাল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, মেলা বন্ধের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বা এ ধরনের কোনো বিষয় সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের এখনো জানানো হয়নি। তবে, আমরা আশা রাখছি মেলা চলমান রাখার।
তিনি বলেন, যেহেতু এবার অনেক বড় স্পেস এবং করোনা পরিস্থিতিতে মানুষও আসছে কম, সেহেতু মেলার মাঠেও সবাই স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারছেন। সবাই খোলামেলা পরিবেশে নির্দিষ্ট দূরত্বে ঘোরাফেরা করছেন। এছাড়া সবাই মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করছেন। ফলে এখান থেকে খুব একটা সমস্যা হবে বলে মনে হয় না। তবে, এটা তো বাংলা একাডেমির একার সিদ্ধান্ত নয়, প্রকাশক সমিতি, সরকার এবং বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে যৌথভাবে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, আমরা সেটিই পালন করবো।
এদিকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও পাওয়া যায়নি মেলা বন্ধ হওয়ার নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তের কথা। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, যেহেতু করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মেলায় যারা প্রকাশক আছেন তাদের ব্যবসাও ভালো না। সেক্ষেত্রে বন্ধ হতেও পারে বইমেলা। আবার যেহেতু অনেক বড় স্পেস এবং মানুষও আসছে কম, এবং সবাই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন, মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করছেন, নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখছেন, সেহেতু মেলা বন্ধ নাও হতে পারে। তবে মেলা বন্ধের বিষয়ে এখনো কোনো নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত হয়নি।
এর আগে করোনা পরিস্থিতি বাড়ায় নতুন নির্দেশনা দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রাণালয়।
এ সময় চলমান একুশের বইমেলা নিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সেটা (বইমেলা) করতে হবে। করেনা প্রতিরোধ করতে পারি যদি মাস্ক পরি, শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে পারি এবং হাত ধুই। এটি কিন্তু অজানা কিছু না। আমাদের এখন অনেক অভিজ্ঞতা।
এদিকে বইমেলাকে বাঙালির সর্ববৃহৎ সাংস্কৃতিক আয়োজন হিসেবে দেখে মাসব্যাপী নিতে পালেই প্রাপ্তি সম্পূর্ণ হবে বলে মনে করছেন প্রকাশকরা।
তাদের মতে, বইমেলা শুধু একটি মেলা নয়, এখন এটি বাঙালির সর্ববৃহৎ সাংস্কৃতিক আয়োজন। মেলায় এখন লোকজন কম, সবাই মাস্ক ব্যবহার করছে, স্বাস্থ্যবিধি মানছে; সর্বোপরি এটি যে হচ্ছে এবং তা এই করোনা পরিস্থিতিতেও ভালোভাবে চলছে, এটা অবশ্যয় ভালো বিষয়। তবে আমাদের প্রাপ্তিটা তখনই সম্পূর্ণ হবে, যখন আমরা এটিকে মাসব্যাপী নিয়ে যেতে পারবো।
বিকেলে বইমেলা ঘুরে দেখা যায়, বইমেলায় এবার ক্রেতার তুলনায় দর্শনার্থীই বেশি। যারা আসছেন, উন্মুক্ত পরিবেশে খোলামেলাভাবে ঘুরছেন মেলার এমাথা থেকে ওমাথা। কেউ কেউ বই দেখছেন এবং কিনছেন। তবে তার সংখ্যা অনেক কম। কিন্তু বৃহৎ পরিসরে বইমেলা হওয়ায় তা উপভোগ করছেন অনেকেই।
সোমবার অমর একুশে বইমেলার ১২তম দিনে নতুন বই এসেছে ১০৮টি। এরমধ্যে গল্প-১২টি, উপন্যাস-১৮, প্রবন্ধ-১০, কবিতা-৪৪, গবেষণা-২, শিশুসাহিত্য-২, জীবনী-১, মুক্তিযুদ্ধ-১, ভ্রমণ-১, বঙ্গবন্ধু-২, ধর্মীয়-১, অনুবাদ-১, সায়েন্স ফিকশন-২টি এবং অন্যান্য-১১টি বই।
বিকেলে লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন রেজাউদ্দিন স্টালিন, জাকির তালুকদার এবং মোজাম্মেল বিশ্বাস। আগামীকাল মঙ্গলবার অমর একুশে বইমেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায়।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২১
এইচএমএস/এএটি