ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বইমেলা

দুই সপ্তাহ স্থগিত বইমেলা: সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২২
দুই সপ্তাহ স্থগিত বইমেলা: সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা: আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে অমর একুশে বইমেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় তা দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। দুই সপ্তাহ পর কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

রোববার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে বাংলানিউজকে তিনি এ কথা জানান। এর আগে সকাল থেকেই বইমেলা পেছানোর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল।

কোভিডের কারণে গত বছর বইমেলা তেমন না জমলেও আশা করা হচ্ছিল যে এবারের বইমেলা জমজমাটভাবেই পালিত হবে। বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষও সেভাবেই প্রস্তুতি গ্রহণ করছিল। আশা করা হচ্ছিল সবকিছু ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন প্রধানমন্ত্রী বইমেলা উদ্বোধন করবেন। আর করোনার সংক্রমণ বেশি হলে স্বাভাবিকভাবেই স্বাস্থ্যবিধি আরও কঠোরভাবে প্রতিপালন করা হবে।

এছাড়া করোনা সংক্রমণ যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তখন সরকার বইমেলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছিল বাংলা একাডেমি। তবে একুশে বইমেলার জন্য স্টল নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। সেইসঙ্গে মেলায় বিভিন্ন মঞ্চ ও কেন্দ্র নির্মাণসহ বিভিন্ন চত্বর সাজানোর কাজও চলছে বেশ জোরেসোরে।

এদিকে করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছরে যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের প্রকাশনা শিল্প। এ সময়ে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কোনো ধরনের বই বিক্রি হয়নি। বিগত বইমেলাতেও ক্ষতি নিয়েই মেলার মাঠ ছেড়েছেন প্রায় সব প্রকাশক। সরকারের পক্ষ থেকে সেভাবে দেওয়া হয়নি কোনো প্রণোদনাও। এমন অবস্থায় আবারও শুরু হতে যাচ্ছিল অমর একুশে বইমেলা। আর এ বইমেলা নিয়ে ১০ দফা সুপারিশ ও প্রস্তাবনাও রেখেছেন বিভিন্ন লেখক-পাঠক-প্রকাশক। বিশেষ করে এবারের বইমেলা স্বল্প পরিসরে আয়োজন করে ১৫ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করা যায় কিনা তা বিবেচনা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা। শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বইবাড়ি রিসোর্টের উদ্যোগে শাহবাগের পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রে ‘কেমন চাই অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২২’ লেখক-পাঠক-প্রকাশক আড্ডার আয়োজনে উঠে আসে এ বিষয়গুলো। এ সময় তারা ১০ দফা সুপারিশও জানান বইমেলা নিয়ে।

করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন প্রকাশকও বইমেলা নিয়ে চিন্তিত। এ বিষয়ে সম্প্রতি আগামী প্রকাশনীর প্রকাশক ওসমান গণি বাংলানিউজকে বলেন, গত বছর প্রকাশকরা বইমেলা থেকে তাদের খরচও ওঠাতে পারেননি। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিও জটিল। এমন অবস্থায় মেলা করে খুব একটা লাভ হবে তা ভাবার নেই। মেলা নিয়ে প্রকাশকদের ভাবা উচিত। এ অবস্থায় মেলা না করাই ভালো এবং গতবারের মতো টাকা না ওঠার বিষয় আছে। পরপর দু’বছর প্রকাশকদের এভাবে ক্ষতির মুখে ঠেলে দেওয়া উচিত না। বিশেষ করে মেলা হওয়ার পর বিভিন্ন নির্দেশনা যেমন- আজ ৪টা পর্যন্ত, আজ ৩টা পর্যন্ত নিয়ম বেঁধে দেওয়া সুখকর নয়। আমাদের পার্শ্ববর্তী ভারতে কলকাতা বইমেলাও একবার বন্ধ ছিল, তাতে খুব বড় ক্ষতি হয়নি এ বিষয়গুলো আমাদের ভাবা উচিত।

প্রতিবছর ১ ফেব্রুয়ারি বইমেলা শুরু হলেও গত বছর করোনার কারণে ১৮ মার্চ শুরু হয়েছিল অমর একুশে বইমেলা। বিভিন্ন নিয়ম-কানুনের মধ্য দিয়ে সেই মেলা চলার কথা ছিল ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। কিন্তু করোনার প্রকোপে নির্ধারিত সময়ের দুদিন আগেই শেষ হয় বইমেলা। এবারও সেই করোনা পরিস্থিতির জন্যই দুই সপ্তাহ স্থগিত হয়েছে বইমেলা।

আরও পড়ুন...
** দুই সপ্তাহ পিছিয়ে যাচ্ছে বইমেলা!
** বইমেলা নিয়ে লেখক-প্রকাশকদের ১০ সুপারিশ

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২২, আপডেট: ১৪৩৩ ঘণ্টা
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।