এশিয়া কাপের সুপার ফোরে ২১ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত পাকিস্তানের দুই ক্রিকেটার হারিস রউফ ও সাহিবজাদা ফারহানকে তিরস্কার করেছে আইসিসি। শুনানিতে দুজনকেই খেলোয়াড় আচরণবিধির লেভেল-১ ভাঙার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
‘ক্রিকবাজ’ জানিয়েছে, পেসার রউফ ম্যাচ চলাকালে ‘বিমান ভূপাতিত করার’ অঙ্গভঙ্গি করার কারণে ম্যাচ ফি থেকে জরিমানা গুনতে হয়েছে। তাকে ‘খেলার মানহানি’ ঘটানোর জন্যও কড়া তিরস্কার করা হয়েছে। তবে জরিমানার সঠিক অঙ্ক প্রকাশ করা হয়নি।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের ওপেনার সাহিবজাদা ফারহানও একই অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। অর্ধশতক পূর্ণ করার পর তিনি ব্যাটকে বন্দুকের মতো চালিয়ে উদযাপন করেছিলেন। আইসিসি কর্মকর্তারা সেটিকে ‘রাজনৈতিক প্রতীকী বার্তা’ হিসেবে দেখছেন। তাই ফারহানকে আনুষ্ঠানিকভাবে তিরস্কার করা হয়েছে। ওই ম্যাচে ফারহান ৪৫ বলে ৫৮ রান করেছিলেন, তবে পাকিস্তান হেরেছিল ৬ উইকেটে।
এই অভিযোগগুলো উত্থাপন করেছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। তাদের দাবি ছিল, মাঠে রাজনৈতিক অঙ্গভঙ্গি করে দুই পাকিস্তানি ক্রিকেটার আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন, তাই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
শুনানি পরিচালনা করেন আইসিসির রিচি রিচার্ডসন ও স্যালি হিগিন্স। এ সময় পাকিস্তান দলের ম্যানেজার নাবিদ চিমাও উপস্থিত ছিলেন। একাধিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, শুনানিতে রউফকে তার ‘৬-০’ হাতের ইশারা এবং ভারতীয় দর্শকদের সামনে জেট-ক্র্যাশ ধরনের উদযাপন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি অভিযোগের ভিত্তি নিয়েই পাল্টা প্রশ্ন তোলেন। ম্যাচ রেফারিকে তিনি সরাসরি জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনিই বলুন ৬-০ মানে কী?’
প্রতিবেদনে বলা হয়, রউফের এই প্রশ্নে ম্যাচ রেফারি চুপ হয়ে যান এবং কোনো উত্তর দিতে পারেননি।
রউফ তার লিখিত জবাবেও নিজের অবস্থানে অটল থেকে বলেন, ‘অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। ’
যখন ম্যাচ রেফারি বলেন যে রউফের অঙ্গভঙ্গি ‘হয়তো অন্য কিছুর দিকে ইঙ্গিত করছিল’, তখন এই ফাস্ট বোলার পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আপনিই বলুন আমি কিসের দিকে ইঙ্গিত করছিলাম?’
রউফ জোর দিয়ে বলেন, তিনি বারবার যা করেছেন তা শুধুমাত্র ‘ভক্তদের উদ্দেশ্যেই ছিল, অন্য কিছু নয়’
অন্যদিকে, অর্ধশতক করার পর ‘গান-ফায়ার’ উদযাপনের জন্য অভিযুক্ত সাহিবজাদা ফারহান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ এবং এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন।
তিনি নিজের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘এই উদযাপন রাজনৈতিক প্রকৃতির ছিল না; আমি ভারতকে লক্ষ্য করে এই উদযাপন করিনি। ’ তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন যে এই ধরনের উদযাপন পশতুন সংস্কৃতির একটি ঐতিহ্য। কিন্তু তাদের জবাব আইসিসির পছন্দ হয়নি। যে কারণে শাস্তি দিল ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
অন্য এক শুনানিতে ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবকেও তিরস্কার করেছে আইসিসি। ১৪ সেপ্টেম্বরের ম্যাচ শেষে তিনি পহেলগাঁও হামলার শিকারদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ভারতীয় সেনার প্রশংসা করেছিলেন। আইসিসি তাকে রাজনৈতিক মন্তব্য থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান প্রতিদ্বন্দ্বিতা আগেই ছিল উত্তেজনাপূর্ণ। টানা দুই ম্যাচে ভারত জয় পাওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার পারদ আরও চড়েছে। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) ফাইনালে তৃতীয়বারের মতো মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী।
এমএইচএম