ফুটবলসহ অন্যান্য খেলার জগতকে বদলে দেওয়ার পর এবার ক্রিকেট বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করতে চলেছে সৌদি আরব। দীর্ঘদিন ধরে চলা জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মর্যাদাপূর্ণ টি-টোয়েন্টি লিগ, ‘আইএল টি-টোয়েন্টি’র সঙ্গে কৌশলগত জোট গঠন করেছে তেল সমৃদ্ধ দেশটি।
সৌদি অ্যারাবিয়ান ক্রিকেট ফেডারেশন এবং ‘আইএল টি-টোয়েন্টি’র মধ্যে এই অংশীদারিত্বের ফলে শুধু ম্যাচ আয়োজনই নয়, সৌদি আরবে ক্রিকেট প্রতিভা খুঁজে বের করা এবং খেলার মানোন্নয়নের জন্যও একসঙ্গে কাজ করবে দুই পক্ষ।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই চুক্তির আওতায় পুরুষদের পাশাপাশি নারী ক্রিকেটারদের ম্যাচও সৌদি আরবে আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে, যা রক্ষণশীল দেশটিতে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আসন্ন মৌসুম থেকেই এই চুক্তি কার্যকর হবে, যা শুরু হচ্ছে আগামী ২ ডিসেম্বর।
সংযুক্ত আরব আমিরাত লিগের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সৌদি অ্যারাবিয়ান ক্রিকেট ফেডারেশন ডিপি ওয়ার্ল্ড ‘আইএল টি-টোয়েন্টি’ (পুরুষ ও নারী)-কে সৌদি আরবে ম্যাচ আয়োজনের জন্য একটি অফিসিয়াল টি-টোয়েন্টি লিগ হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে। উপসাগরীয় অঞ্চলে ক্রিকেটকে প্রসারিত এবং সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আরেকটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলো, সৌদি আরবের খেলোয়াড়দের জন্য ‘আইএল টি-টোয়েন্টি’-তে খেলার সরাসরি সুযোগ তৈরি হয়েছে। আগামী ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য ‘আইএল টি-টোয়েন্টি’ সিজন ৪-এর নিলামে প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে অবশ্যই সৌদি আরব থেকে কমপক্ষে একজন খেলোয়াড়কে দলে নিতে হবে। আগামী বছরগুলোতে ‘আইএল টি-টোয়েন্টি’র ম্যাচগুলো সৌদি আরবেও আয়োজন করা হবে। ’
এই চুক্তি প্রসঙ্গে সৌদি অ্যারাবিয়ান ক্রিকেট ফেডারেশনের চেয়ারম্যান প্রিন্স সৌদ বিন মিশাল আল-সৌদ বলেন, ‘আইএল টি-টোয়েন্টি’র সঙ্গে অংশীদার হতে পেরে আমরা গর্বিত। এই চুক্তিটি আমাদের দেশে ক্রিকেটের বিকাশে এবং খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন। এটি রাজ্যের মধ্যে ভক্তদের সম্পৃক্ত করার একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে এবং অবকাঠামো ও পর্যটন খাতে খেলাটির বিকাশের নতুন পথ খুলে দেবে। ’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০-এ খেলাধুলা এবং সামাজিক সম্পৃক্ততার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই অংশীদারিত্ব আরও তরুণ-তরুণীকে ক্রিকেট খেলতে অনুপ্রাণিত করবে। ’
‘আইএল টি-টোয়েন্টি’-এর চেয়ারম্যান খালিদ আল জারুনি বলেন, ‘সৌদি অ্যারাবিয়ান ক্রিকেট ফেডারেশনের সঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্ব ঘোষণা করতে পেরে আমরা অত্যন্ত গর্বিত। সৌদি আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং ক্রিকেটের উন্নয়নে তাদের প্রতিশ্রুতি অনুপ্রেরণাদায়ক। এই অংশীদারিত্বের ভিত্তি হলো সীমানা পেরিয়ে খেলাটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমাদের মূল লক্ষ্য। ’
‘আইএল টি-টোয়েন্টি’র সিইও ডেভিড হোয়াইট যোগ করেন, ‘উপসাগরীয় অঞ্চলে ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দেওয়ার আমাদের লক্ষ্যের পথে এটি একটি বড় পদক্ষেপ। আমরা দেখেছি, কীভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের তরুণ খেলোয়াড়রা বিশ্বমানের কোচিং এবং আন্তর্জাতিক তারকাদের সঙ্গে খেলে উপকৃত হয়েছে। খেলাধুলা ও বিনোদনে সৌদি আরবের গতিশীল অগ্রগতির ফলে এই অংশীদারিত্ব সৌদি ক্রিকেটারদের বিকাশের জন্য এক অসাধারণ সুযোগ তৈরি করবে। ’
এমএইচএম