ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

রশিদের ঘূর্ণি জাদুতে আফগানিস্তানের প্রতিশোধ

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২১
রশিদের ঘূর্ণি জাদুতে আফগানিস্তানের প্রতিশোধ সংগৃহীত ছবি

শেষ দিনেও জিম্বাবুয়েকে টানছিলেন শন উইলিয়ামস ও ডোনাল্ড তিরিপানো। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ান রশিদ খান।

দুই ইনিংস মিলিয়ে একাই ৯৯.২ ওভার হাত ঘুরিয়েছেন তিনি। তুলে নিয়েছেন ১১ উইকেট। মূলত এই লেগ স্পিনারের জাদুতে ভর করেই জিম্বাবুয়েকে হারাল আফগানিস্তান।  

আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে রোববার সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ৬ উইকেটে জিতেছে আফগানরা। এর আগে সিরিজের প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়েছিল জিম্বাবুয়ে। এবার সেই লজ্জার প্রতিশোধ নিলেন রশিদরা।

দ্বিতীয় টেস্টে আফগানদের জয় অবশ্য সহজে আসেনি। প্রথম ইনিংসে তাদের ৫৪৫ রানের পাহাড়সম ইনিংসের জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৮৭ রানে অলআউট হয়েছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু ফলোঅন করতে নেমে চিত্রটা পাল্টে দিলেন শন উইলিয়ামস।  

চতুর্থ দিনে ১৪২ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়ে বিশাল পরাজয়ের মুখে পড়তে যাচ্ছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু সেখান থেকে ডোনাল্ড তিরিপানোকে নিয়ে শক্ত প্রতিরোধ গড়েন অধিনায়ক উইলিয়ামস। অষ্টম উইকেট জুটিতে তাদের দৃঢ়তায় ম্যাচ পঞ্চম দিনে গড়ায়। চতুর্থ দিনের তৃতীয় সেশনে দুজনে যোগ করেন ৯৬ রান।

পঞ্চম দিন সকালের সেশনে ম্যাচ প্রায় আফগানদের হাত থেকে বের করেই নিচ্ছিলেন উইলিয়ামস ও তিরিপানো। জুটি ভাঙতে মূল ভরসা রশিদের হাতে বল তুলে দেন আফগান অধিনায়ক আসগর আফগান। কিন্তু ১১ ওভার বল ঘুরিয়েও তিরিপানোকে একবার স্লিপে ক্যাচ তুলে দিতে বাধ্য করতে পারেন রশিদ। যদিও বল স্লিপে থাকা রহমত শাহর হাতে পৌঁছায়নি।

টানা বল করতে করতে ক্লান্ত রশিদকে কিছুক্ষণ বিশ্রাম দিতে বাধ্য হন আফগান। এই সুযোগে পুরো সেশন জমিয়ে ব্যাট করেন উইলিয়ামস ও তিরিপানো। কিন্তু বোলিংয়ে ফিরে নিজের প্রথম বলেই আঘাত হানেন রশিদ। তার গুগলিতে বিভ্রান্ত হয়ে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৫ রান দূরে থামেন তিরিপানো। তবে জিম্বাবুয়ের লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান ২৫৮ বলের লম্বা ইনিংস খেলে আফগানদের জয়ের পথে ঠিকই কঠিন করে দিয়ে যান।

তিরিপানোর বিদায়ের পরও ব্লেসিং মুজারাবানিকে নিয়ে লড়াই জারি রাখেন উইলিয়ামস। দুজনে ১২ ওভার নির্বিঘ্নে কাটিয়েও দেন। মুজারাবানিকে বিদায় করে বাঁহাতি স্পিনার আমির হামজা এই লড়াইয়ের ইতি টানেন। পরের ওভারেই ১৫০ রান পূর্ণ করেন উইলিয়ামস। কিন্তু রশিদ খান খুব দ্রুতই তার সঙ্গী ভিক্টর নিয়াউচিকে বিদায় করে ইনিংসে নিজের সপ্তম ও ম্যাচে ১১তম উইকেট তুলে নেন।  

জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় ৩৬৫ রানে। আফগানদের লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ১০৮ রান। কিন্তু প্রথম ওভারেই আফগানিস্তানের ওপেনার জাবেদ আহমেদিকে বিদায় করে রোমাঞ্চ ছড়ান মুজারাবানি। কিন্তু রহমত শাহ ও ইব্রাহীম জাদরান সাবধানী ব্যাটিংয়ে ক্রমেই জিম্বাবুয়ের আশার আলো নিভিয়ে দেন। লক্ষ্যের প্রায় অর্ধেকটা তারা দুজনেই তুলে ফেলেন।

চা বিরতির পর রহমত শাহ কিছুটা আগ্রাসী হয়ে ওঠেন। অভিষিক্ত নিয়াউচির এক ওভারেই তিন বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। শেষ সেশনে বাঁহাতি স্পিনার উইলিয়ামসের ওভারেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটান তিনি। রায়ান বার্ল অবশ্য দুই সেট ব্যাটসম্যানকে বিদায় করে উত্তেজনা ফিরিয়েছিলেন। মুজারাবানিও শহিদুল্লাহ কামালকে বিদায় করেন। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। ৬ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আফগানরা।

ম্যান অব দা ম্যাচ: হাশমতউল্লাহ শাহিদি।

ম্যান অব দা সিরিজ: শন উইলিয়ামস।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২১
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।