ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ক্রিকেট

দুই স্বপ্নের একটি ছুঁয়েছেন সালমা, অপেক্ষা আরেকটির

মাহমুদুল হাসান বাপ্পি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৬ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২২
দুই স্বপ্নের একটি ছুঁয়েছেন সালমা, অপেক্ষা আরেকটির শনিবার মিরপুরের একাডেমি মাঠে দাঁড়িয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছেন সালমা খাতুন। ছবি : শোয়েব মিথুন

বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সাফল্য কী? জাতীয় দলে নিশ্চয়ই এশিয়া কাপ। সালমা খাতুনের নেতৃত্বে নারী ক্রিকেটারদের কল্যাণে ২০১৮ সালে এসেছিল ওই সাফল্য।

দিনটা মনে করাতেই সালমাকে ফোন করা। তিনি তখন বাইরে কোনো কাজে ব্যস্ত, বললেন ‘কাল তো অনুশীলন আছে, এরপর আসেন। ’

‘কাল’ অর্থাৎ শনিবার সালমার অনুশীলন শুরু হয়েছিল সকাল সাড়ে আটটায়। বেলা এগারোটায় ওই অনুশীলন শেষে একাডেমি মাঠে দাঁড়িয়ে সালমার সঙ্গে শুরু হলো ‘গল্প করা’। সাড়ে তিন ঘণ্টা অনুশীলনের ক্লান্তি নিয়ে সালমা কথা বললেন প্রায় ঘণ্টাখানেক। একাডেমি মাঠের এক পাশে ফুটবলে তখন ব্যস্ত তরুণী ক্রিকেটাররা, আরেক পাশের সবুজ ঘাসে দাঁড়িয়ে সালমা শোনালেন নিজের স্বপ্নপূরণের কথা।

কীভাবে ওঠে এলেন, কেন তার পড়াশোনা থেমে গেল- এক যুগের বেশি সময়ের পার্থক্যে কতটা বদলালো মেয়েদের ক্রিকেট? সালমা জানালেন নিজের ভাবনা। দুটা আইপিএল খেলেছেন, বিশ্বকাপেও গেছেন; বাকিদের সঙ্গে বাংলাদেশের তফাৎটা কী দেখলেন? জবাব দিলেন তার।  

‘মিস মোহামেডান’ কথা বললেন নারীদের ঘরোয়া ক্রিকেটে কেন রান হয় না, ড্রেসিং রুমে তার বদলে যাওয়া ভূমিকা, এশিয়া কাপ জয়, ক্যারিয়ারের গতিপথ, এতদিন টিকে থাকার রহস্য নিয়ে। দেশের নারী ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন সালমার সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট মাহমুদুল হাসান বাপ্পি-

ছবি : শোয়েব মিথুন

বাংলানিউজ : বাংলাদেশে নারী ক্রিকেটের একদম শুরু থেকেই আপনি জড়িয়ে আছেন। এক দশক পেরিয়ে গেছে, এখনও আপনি দলের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। সবকিছুর শুরুটা কীভাবে হলো?

সালমা : এমনিতে ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলতাম। কিন্তু কখনও কল্পনা করিনি বাংলাদেশে কোনো নারী ক্রিকেট দল হবে বা এমন। আমার ইচ্ছে ছিল ক্রিকেট খেলা শেখা, তাই নিজে থেকেই শিখেছি। প্রিয় খেলা বা যা কিছুই বলেন জীবনে, ক্রিকেটই।  

তবে যখন শোনলাম বাংলাদেশে নারীদের নিয়ে ক্রিকেটের জাতীয় দল তৈরি হবে। তখন খুলনায় আমি যাই। আমার এক মামাতো ভাই আছে, ও নিয়ে গিয়েছিল এক বন্ধুর মাধ্যমে। ওখানে ইমতিয়াজ হোসেন পিলু, সালাউদ্দিন, শংকর স্যাররা অনুশীলন শুরু করেন। তখন সুপ্তা, বৈশাখী, জাহানারা ওরা সবাই অনুশীলন করতো ওই জায়গায়।

প্রথম আমি যেদিন যাই, থ্রি পিস পরে গিয়েছিলাম। যাওয়ার পর সালাউদ্দিন স্যার জানতে চাইলো, তুমি কী বল করো? আমি বললাম দুটিই করতে পারি। এরপর তিনটা পেস বল আর তিনটা স্পিন বল করানো হয়। স্যার বলেন তুমি এখন থেকে স্পিন বোলিং করবা। ওখান থেকেই স্পিন বোলিং শুরু।

ব্যাটিং আমি যেটা করি, প্রথম যেদিন অনুশীলন করেছিলাম, ওইদিনই আসলে সবাই বলেছে, ছেলেরাও তো এমন ব্যাটিং করতে পারে না। তখন খুব ভালো লাগতো। প্রশংসা শুনলে এখনও লাগে (হাসি)। এরপর থেকে আস্তে আস্তে দিনের পর দিন অনুশীলন করে নিজের উন্নতি করার চেষ্টা করেছি।

পরে যখন ঢাকায় আসি খেলতে, ১০টা জেলা নিয়ে খেলা হয়। ওখানে আমাদের খুলনা জেলা রানার আপ হয়েছিল। আমি খুব ভালো পারফরম্যান্স করেছিলাম, সেঞ্চুরিও পেয়েছিলাম। এরপর আস্তে আস্তে জাতীয় দলে সুযোগ পেলাম...।

ছোটবেলায় যখন ক্রিকেট খেলা শিখতাম, তখন কখনও মাথায় ছিল না বাংলাদেশ নারীদের ক্রিকেট দল হবে। যখন শোনলাম যে হবে, তখন থেকে পরিকল্পনা এল যে আমি খেলতে চাই সবসময়। বাংলাদেশ দলে যতদিন সম্ভব খেলার চেষ্টা করব এসব।

বাংলানিউজ : ছোটবেলায় তাহলে ক্রিকেটার হতে চাইতেন না! কী স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে ওঠলেন?

সালমা : খেলার বাইরে পরিবার হয়তো চিন্তা করতো, বড় হচ্ছি, বিয়ে দিয়ে দেবে। কিন্তু আমার কখনওই ওই রকম পরিকল্পনা ছিল না। যখন ক্রিকেটে এলাম, তখন স্বপ্ন বের হয়েছে ক্রিকেট নিয়ে। ক্রিকেটে আসার পর দুইটা স্বপ্ন ছিল নিজের, একটা পূরণ হয়েছে, আরেকটা স্বপ্ন আশা করি শিগগিরই পূরণ করতে পারবো।

বাংলানিউজ : স্বপ্নগুলো বলা যাবে?

সালমা : একটা স্বপ্ন ছিল আমার আম্মুকে একটা বাড়ি করে দেবো। ওইটা আমি করতে পেরেছি আলহামদুলিল্লাহ। আরেকটা হচ্ছে- নিজের একটা গাড়ি হবে, এটা এখনও বাকি আছে। আপনারা দোয়া করবেন যেন স্বপ্নটা পূরণ করতে পারি। (হাসি)

বাংলানিউজ : প্রথম যেবার দলে ডাক পেলেন, আপনার নাকি ঠোঁট ফেটে গিয়েছিল? এরপর কীভাবে খেললেন?

সালমা : ২০০৭ সালে যখন জাতীয় দলের প্রথম ক্যাম্প হয়। তখন আমার একটা দুর্ঘটনা ঘটে, অনুশীলনের সময় বল ধরতে গিয়ে ঠোঁট ফেটে যায়, দুইটা সেলাই লেগেছিল। তখনও দল বাছাই করা হয়নি। তিন-চার দিনের বিশ্রাম দিলেন ডাক্তার।

আমার কোচকে আমি বললাম, কোচ আমি প্র্যাক্টিস করবো। উনি বলল না, তোমার করতে হবে না, তুমি বিশ্রাম করো। তখন মনে একটা চিন্তা ঢুকল, এখনও তো দল দেয়নি, আবার বাদ দেয় কি না!  পরে ছয় দিন পর অনুশীলনে নামলাম, সবাইকে বললাম আমি হয়তো থাকবো না।  

পরে দেখি আমাকে দলে রেখেছে। মালেশিয়া যাওয়ার আগে থাইল্যান্ডে গিয়েছিলাম প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে। ওখানে দুইটা ম্যাচেই ২৪ রান করে করেছিলাম। আমরা ওখান থেকে চ্যাম্পিয়নও হয়ে আসি।  

বাংলা নিউজ : প্রথম যেদিন জাতীয় দলের জার্সিটা গায়ে তুললেন, এরপর জাতীয় সংগীত গাইলেন। ওই অনুভূতিটা কেমন?

সালমা : ওই অনুভূতিটা আসলে বলে বোঝা যাবে না। অনেকে হয়তো এই কথাটা প্রায়ই বলে, কিন্তু এই অনুভূতি সত্যিই বলে বোঝানো যাবে না। দেশের জার্সি গায়ে দিয়ে যখন বিদেশে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত শুনি- আমাদের শরীরে সব কিছু অন্যরকম হয়ে যায়। অনুভূতিটা অন্যরকম থাকে, শুধু আমরা না- আমার মনে হয় বাংলাদেশের যারাই থাকে; সবারই ওই রকম অনুভূতি হয়। যখন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত বিদেশের মাটিতে গাই, অনেক ভালো লাগে আসলে।  

বাংলানিউজ : আপনি তো শুধু দেশের প্রতিনিধিত্ব করেননি, অধিনায়কও ছিলেন। আলাদা একটা দায়িত্ব বা ভালো লাগাও তো থাকার কথা...

সালমা : দায়িত্ব বলতে আমি খেলাটাকে এতই ভালোবাসি...মনে হয় না আলাদা কিছু। আমি কখনও কল্পনা করিনি, অধিনায়ক হবো। সবকিছুর অবদান জাতীয় দলের প্রথম কোচ- জাফরুল এহসান স্যারের, উনিই প্রথম অধিনায়কত্ব দিয়েছিলেন আমাকে। আল্লাহকে অনেক ধন্যবাদ জানাই উনাকে আমার পাশে রেখেছেন। এখনও আছেন, আশা করি সামনেও থাকবেন। অবশ্যই উনার জন্য এত দূর আসতে পেরেছি। আমি যতদিন খেলবো। উনার নামটা মনে থাকবে।

আর টস করা বলতে, ওইটার আলাদা তেমন অনুভূতি নাই। টস তো আসলে টসই, খেলারই একটা অংশ। কিন্তু যখন যাই-মনে হয় বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক হিসেবে যাচ্ছি টস করতে- ওইটা একটা ভালো অনুভূতি হয়।  

বাংলানিউজ : পড়াশোনাটা কি ক্রিকেটের ফাঁকেই থেমে গেল?

সালমা : ঠিক এজন্য না আসলে। আমার পরিবার তেমন স্বচ্ছল ছিল না। আমরা চার ভাই-বোনই তখন ছোট ছিলাম। আমার আব্বু-আম্মু ওরকম ভালো কোনো চাকরিও করতো না। যে কারণে পড়াশোনাটা হয়নি। আব্বু-আম্মু এমনিতে চেষ্টা করেছে, এতে যতটুকু এগিয়েছি।

যখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার পর খেলাধুলায় এসে গেলাম। তখন একেবারেই থেমে যায়। কারণ এদিকে সময় দিলে ওদিকে হতো না, তাই আর পড়াশোনাটা চালিয়ে যেতে পারিনি।  

বাংলানিউজ : আপনি এমনিতে বলেছেন, খেলায় আসতে খুব একটা বাধা পাননি। এখন যখন গ্রামে যান, মানুষ নিশ্চয়ই ছবি তুলতে আসে বা আলাদা একটা সম্মান পান, তখন কেমন লাগে?

সালমা : আমি গ্রামে গেলে এখন সবাই এপ্রিশিয়েট করে। সবাই খুব খুশি হয় যে গ্রামের একটা মেয়ে এতটুকু গেছে। আগে যখন খেলতাম, টিজ করতো কি না জানি না। কিন্তু আমার কানে কখনও শুনিনি। ওটাকে কানে নেইওনি।

এখনও যদি কেউ টিজ করে বা কোনো কথা বলে; কানে নেই না। কারণ এটা আমার জীবন। আমি এখানে নিজের যোগ্যতায় এসেছি, আপনার দুই কথায় কিন্তু এখানে আসিনি। আপনি কী বললেন, না বললেন; এতে আমার কিছু যায়-আসে না। আমি কী আছি এটাই গুরুত্বপূর্ণ।  

আমি এখানে কতটা ভালো খেলছি বা দেশকে ঠিকভাবে প্রতিনিধিত্ব করতে পারছি কি না, এটাই আমার কাছে সব। মানুষের কথা যদি কানে নিতাম, হয়তো এখানে আসতে পারতাম না। আমি বলব, শুধু ক্রিকেট না। যেকোনো খেলায় যদি সমর্থন না দিতে পারেন কেউ, দয়া করে বাজে কোনো কথাও বলবেন না।  

বাংলানিউজ : সমর্থনের কথাই যখন বললেন, ২০১৩ তে আপনি একবার আফসোস করেই বলেছিলেন, ছেলেদের ক্রিকেটে মাঠ ভর্তি দর্শক থাকে, আপনাদেরটাতে থাকে না। এখন কী অবস্থাটা বদলেছে? পারিপার্শ্বিক সব দিক বিবেচনা করেই... 

সালমা : অবশ্যই আগের চেয়ে দর্শক আগ্রহ বেড়েছে। বিশেষত ২০১৮তে যখন আমরা এশিয়া কাপ জিতলাম, এরপর আরও বেড়েছে। তবে আমাদের প্রচারটা খুব কম। এজন্য দর্শকও কম থাকে। তবে আল্লাহর রহমতে এখন আগের চেয়ে ভালো। আমরা যত ভালো খেলবো, দর্শক আরও আসবে। দর্শকের মধ্যে খেললে একটা আলাদা ভালো লাগা কাজ করে।  

বাংলানিউজ : ভরা মাঠে ভালো লাগে, ফাঁকা মাঠে কি অস্বস্তি কাজ করে?

সালমা : অস্বস্তি বলতে...দর্শক যখন থাকে, চিৎকার করে, সমর্থন করে আবার কিন্তু টিজও করে। এটাও কিন্তু খেলার একটা অংশ। দর্শক থাকলেও ভালো, না থাকলেও যে খারাপ, এমন না। আমি যখন মাঠে নামি, তখন পেছনে দর্শক আছে কি না সেটা দেখি না।  

কারণ যখন মাঠে থাকি, মনোযোগটা ক্রিকেটের ভেতরই থাকে। আর যখন দর্শক থাকে, তখন কিছুটা মনোযোগ কিন্তু ওখানেও যায়। তবে তারপরও ভালো লাগে। আমি চাই সবসময় খেলায় দর্শক থাকবে।

বাংলানিউজ : এলিসা হিলি একবার বলেছিলেন, প্রথম যেদিন সমালোচনা হলো, সেদিন তিনি এটা ভেবে খুশি হয়েছেন যে তাকে মানুষ অনুসরণ করে। আপনার কখনও কী এমন মনে হয়েছে?

সালমা : আমি তো ২০০৭-০৮ থেকেই জাতীয় দলে আছি। জানি না আমাকে নিয়ে কতটা আলোচনা হয় কিন্তু যতটুুকু মানুষের কাছ থেকে শুনি; আমাকে নিয়ে ভালোই কথা হয়। দর্শকরা তো অবশ্যই আলোচনা করে। সেটা তো অনেকবার দেখেছি, শুনেছিও নিজের কানে। অনেক ভালো লাগে যখন সমর্থন করে।  

কিন্তু আমরা যখন খারাপ খেলি, দর্শকদেরও খারাপ লাগে। কিন্তু তার চেয়ে বেশি খারাপ লাগে যারা আমরা মাঠে থাকি। এটা একটা খেলার অংশ। দর্শক থাকলে সমর্থন দেবে, আবার তারাই দুয়ো দেবে। এটা খেলার অংশ, মেনে নিতে হবে।

বাংলানিউজ : আগে কয়েকবার বলেছেন, ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলাটা আপনার স্বপ্ন। এবার তো সেটা পূরণ হলো, কেমন অভিজ্ঞতা হলো?

সালমা : আমার লক্ষ্য ছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলবো আমরা, সেটা করতে পেরে খুবই আনন্দিত। আমি যাওয়ার আগে বলে গিয়েছিলাম- ১০-এর ভেতর থাকব, বিশ্বকাপে ভালো কিছু করব। আল্লাহর অশেষ রহমত সেরা একাদশে জায়গা পেয়েছি। এখন আবার স্বপ্ন জেগেছে আরেকটা ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলবো। সেটার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আর নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করছি।

বাংলানিউজ : বিশ্বকাপ তো খেললেনই, দুবার আইপিএলেও গিয়েছেন। বাকি দেশগুলোর নারী ক্রিকেটের সঙ্গে বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে বা অন্য তফাৎটা কী দেখলেন?

সালমা : পার্থক্য যে খুব বেশি, এমন কিন্তু না। হয়তো তারা ১৯, আমরা ২০। কিন্তু ওরা যে অনুশীলন করে, আমরাও সেটা করি। হয়তো ওদের দেশের সংস্কৃতিটা একরকম, আমাদেরটা অন্যরকম। এই জায়গায় পার্থক্যটা সবসময়ই আসলে থেকে যাবে।  

আপনি যদি বিশ্বকাপ দেখেন, আমরা যে প্রথমবার গিয়েছি, কোনো দেশই মনে করে নাই আমরা প্রথমবার খেলতে গেছি। আমি সবসময় বলি, বোলিংটা আমাদের শক্তি। আমাদের বিপক্ষে কিন্তু কেউ ২৫০ রানও করতে পারেনি। এর মানে হচ্ছে আমরা খারাপ খেলিনি।

আমি মনে করি প্রথমবার গিয়ে আমরা অনেক ভালো খেলেছি। পিংকি দুইটা ফিফটিও করেছে। এটা আমাদের জন্য বড় পাওয়া। কারণ প্রথমবার খেলতে গিয়ে আমরা কিছু অর্জনও করে এসেছি। অন্য দলগুলোও আমাদের এপ্রিশিয়্টে করেছে।  

আমরা যদি হেরেও থাকি, তাও এপ্রিশিয়েট করেছে। বলেছে, তোমরা প্রথমবার খেলতে এসেই যে এত ভালো করবে আমরা বুঝতেই পারিনি। আমরা চিন্তা করেছি, বাংলাদেশ দল নতুন খেলতে এসেছে, কেমন হবে! কিন্তু ওরা খেলার পর বুঝতে পেরেছে বাংলাদেশ দল কী!

বাংলানিউজ : পরের বিশ্বকাপে খেলতে চান বললেন, ওই বিশ্বকাপ নিয়ে কিন্তু জ্যোতি (নারী দলের ওয়ানডে অধিনায়ক নিগার সুলতানা) বেশ বড় স্বপ্নই দেখিয়েছেন। বলেছেন সেমফাইনালে নিয়ে যেতে চান। আপনার কী মনে হয়, সম্ভব?

সালমা : আমাদের কিন্তু তিন চারটা ম্যাচ অনেক ক্লোজ ছিল, যেগুলো আমরা মিস করেছি। হয়তো এটা অভিজ্ঞতা কম হওয়ার কারণে হয়েছে। কারণ আমরা প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছি। পরেরবার গেলে এই অভিজ্ঞতাগুলো কিন্তু আমরা কাজে লাগাব।  

এবারের বিশ্বকাপে আমাদের মূল ব্যাটাররা রান করতে পারেনি। বোলিংয়ে যেটা করতে পেরেছি, ব্যাটিংয়েও যদি ধারাবাহিকভাবে সবাই একটু একটু করে রান করতে পারি। তাহলে কিন্তু আমাদের দলটা আরেকটু ভালো অবস্থানে যাবে। এই বিশ্বকাপে এটা (ব্যাটারদের রান) সবার হয়নি, দুয়েকজন ছাড়া।

পরেরবার আমি ওভাবে বলব না সেমিফাইনাল খেলবো। তবে যদি দলে থাকি, তাহলে আশা করি ভালো ক্রিকেট খেলবো। দেশকে ভালো একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব। আর যদি দলে থাকি, আমার সেরাটা দেবো।  

চেষ্টা করবো ভালো ক্রিকেট খেলতে। আর ভালো ক্রিকেট যারা খেলবে, তারাই জিতবে। সব ম্যাচের কিন্তু একই নিয়ম, যারা ভালো ক্রিকেট খেলবে, তারা জিতবে। আমি বলব না সেমিফাইনালে যাবো কিন্তু ভালো জায়গায় যেতে চাই।  

বাংলানিউজ : ব্যাটিং ব্যর্থতার কথা বললেন, এটা পুরো বিশ্বকাপজুড়েই তো ভুগিয়েছে। ব্যাটাররা বিগ হিট বা লম্বা ইনিংস খেলতে পারেনি। শারিরীক সামর্থ্যটাই কি এটার সবচেয়ে বড় কারণ?

সালমা : বিগ হিট কিন্তু ওয়ানডে ম্যাচে আসলে খুব কমই হচ্ছে। টি-টোয়েন্টি একরকম ফরম্যাট, ওয়ানডে আরেকরকম। বিগ হিটই যে সবকিছু, এমন না। মাটিতে খেলেও অনেক রান করা যায়, যেটা পিংকি করে দেখিয়েছে। ওটাও করা যায়।  

তবে আকাশে খেলাটাও দরকার আছে। আমি মনে করি শারিরীক সামর্থ্যে না, আমরা যেগুলো করছি; ছোট ছোট টেকনিক যদি এপ্লাই করতে পারি। আমরাও বড় শট খেলতে পারবো। আমাদের ওই সক্ষমতা আছে বলে বিশ্বাস করি।  

বাংলানিউজ: অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের পর বেথ মণি আপনার তুমুল প্রশংসা করলেন। বললেন, আপনার একই লেন্থে বোলিংয়ের সঙ্গে তারা মানিয়ে নিতে পারছিল না। এটাই কি আপনার বোলিংয়ের মূল শক্তি?

সালমা : আমার বোলিংয়ের লেন্থ...অবশ্যই সব বোলার চায় এক জায়গায় বল করতে। কিন্তু মাঝেমধ্যে কিছু আলাদা করতে হয়। সবসময় এটা করলে তো ব্যাটার বুঝে ফেলবে ওই লেন্থে বল করতেছে। তখন কঠিন হয়ে যায় বল করা।

আমি চেষ্টা করি সবসময় ভালো বলটা করার জন্য। এটাও চেষ্টা করি ছয়টা বল ছয় রকম করার জন্য। যেন ব্যাটার বিব্রত হয়, উইকেট পড়ে। এটা চিন্তা থাকে না ছয় জায়গায় ফেলব। আমি চিন্তা করি সবগুলো বলই গুড লেন্থে ফেলতে। ওটাই আমি ফলো করেছি।  

যখন ওরা আমার বল খেলতে পারছিল না, অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক আউট হলো। ওদের মেয়েরা যখন ক্রিজে আসছিল, তখন বলছিল যে আমাকে সার্ভাইব করার জন্য। এটা আসলে খুব ভালো লেগেছে, ওরাও বুঝেছে যে বাংলাদেশে একটা বোলার আছে যাকে সার্ভাইব করতে হবে।  

ওরা খুব প্রশংসা করেছে আমাদের, খুবই ভালো লাগছে। আমরা হারলেও ওরা আমাদের অনেক প্রশংসা করেছে। এটা দেখেছি, শুনেছিও। খুব ভালো লেগেছে এটা ভেবে ওরা বিশ্বের সেরা দল, আমাদের মতো দল নিয়েও প্রশংসা করছে। এটাও বড় পাওয়া।  

বাংলানিউজ : টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি মেডেন কিন্তু আপনিই করেছেন (১৭টি)। ব্যাটারদের সবচেয়ে বেশি এলবিডব্লিউ করার রেকর্ডও (১৮টি) আপনার। সালমার বলে রান নেওয়া কি অনেক কঠিন?

সালমা : এটা আমি জানি না। চেষ্টা করি আমার জায়গায় বল করার জন্য। ব্যাটার চাইবে আমাকে মারার জন্য, আমি চাইবো তাকে আউট করতে। এটার কম্বিনেশন থাকতে হবে। যখন বোলিংয়ে যাই, ব্যাটারকে রিড করাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ; কোন ব্যাটার কোন দিকে খেলে, কোথায় ব্লক করতে হবে। ওই ধরনের পরিকল্পনা করেই বল করার চেষ্টা করি।  

বাংলানিউজ : বোলিংয়ের ছায়ায় ব্যাটিংটা কি সবসময় অবহেলাতেই থেকে গেল আপনার? নামেনও তো অনেক পরে...

সালমা : না, না, অবহেলা না। এখন তো দলে অনেক ভালো ব্যাটার আছে, উপরে খেলছে। আমি যে খেলতে পারবো না, সেটা না। কিন্তু আমার যেখানে প্রয়োজন দলের জন্য, আমি চেষ্টা করি ওই জায়গাটায় দলকে ও দেশকে কিছু দিতে। আমি কখনও এটা নিয়ে চিন্তা করি না। আমার শুধু লক্ষ্য থাকে ম্যাচ খেলবো, ব্যস। এরপর যেখানেই সুযোগ পাই, সেখানেই ভালো কিছু করব।  
 
বাংলানিউজ : মিতালি রাজ কয়েকদিন আগে অবসর নিল। আপনাকে তার সঙ্গে তুলনা করা হয়। এটাকে কীভাবে দেখেন?

সালমা : আমি পরশু দিন শোনলাম মিতালি অবসর নিয়েছে। সে খুব ভালো খেলোয়াড়, আমার নিজেরও খুব পছন্দের। যেহেতু ও খেলছে না, ভারত হয়তো কিছুটা চাপে পড়বে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে মেয়েদের মধ্যে বিশ্বেই ও সবচেয়ে বেশি রান করেছে।

ওর কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে, হয়তো ওর সঙ্গে আমার এত বেশি কথা হয়নি। কিন্তু যতটুকু কথা হয়েছে, ভালো; খারাপ না। হয়তো একদিন আমিও এমন অবসর নেবো...তার আগে ওর মতো ভালো কিছু করি!

বাংলানিউজ : কাছ থেকে দাঁড়িয়ে যখন দেখেন। ছেলেদের ক্রিকেটে কোটি কোটি টাকা, বিজ্ঞাপন, অনেক জনপ্রিয়তা। কখনও আফসোস হয়?

সালমা : এটা কখনওই খারাপ লাগে না। আল্লাহর কাছে অনেক শুকরিয়া যতটুকু দিয়েছেন। টাকা-পয়সা নিয়ে তেমন কোনো আক্ষেপ নেই।  

বাংলানিউজ : আপনাকে নাকি মিস মোহামেডান বলা হয়? 

পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মোহামেডানের ম্যানেজার ওয়াসিম খান সামনে এলেন। বললেন, এই প্রশ্নের উত্তর আমি দিচ্ছি-  ‘ওকে মিস মোহামেডান বলা হয়, সালমা কিন্তু মোহামেডান ছাড়া আর কোনো দলে খেলে নাই। আমি তো জন্ম লগ্ন থেকেই ওর ক্রিকেটের সঙ্গে। মোহামেডান, আবাহনী একটা প্রতিদ্বন্দ্বী থাকে না...ওরকম। ’

ও মোহামেডানের সব খেলার খবর রাখে। অনেক বড় বড় অফার পেয়েছে, যায় নাই। হৃদয় থেকে মোহামেডান সমর্থন করে!

বাংলানিউজ : অধিনায়কত্ব তো এখন আর নেই, ড্রেসিং রুমে আপনার ভূমিকাটা কেমন থাকে? 

সালমা : ড্রেসিং রুমে একটা ভূমিকা তো থাকেই। যেহেতু অনেকদিন ধরে খেলছি, অধিনায়কত্বও করেছি। মেয়েদের সাহায্য করি, বলি এটা করো না, ওটা কইরো। অনেক বড় একটা ভূমিকা থাকে। অধিনায়ক না থাকলেই যে ভূমিকা থাকবে না, ব্যাপারটা এমন না।

অফিশিয়ালরাও আমাকে ডাকে, বলে তুমি তো এতদিন ধরে খেলছো, ওদের কিছু বলো। আমি চেষ্টা করি সবসময় যেন ড্রেসিং রুমের সবাই ভালো থাকে, সুস্থ থাকে। ভালো কিছু বলে তাদের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করি।

বাংলানিউজ : আপনি তো দেড় দশক আগে খেলা শুরু করেছেন। এখন দলে অনেক জুনিয়র ক্রিকেটার। তাদের সঙ্গে মানিয়ে নেন কীভাবে?

সালমা : জুনিয়ররা আসলে তাদের কাছে টেনে নিতে পছন্দ করি। আমি চাই না ক্রিকেটের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়র ব্যাপারটা থাকুক। কিন্তু ওরাও আমাকে সম্মান করে, আমিও ওদের স্নেহ করি। খুব আদর করি। ওরা সবাই আমার কাছে আসে। আমি সিনিয়র বলে যে আমার কাছে আসবে না এমন না।  

কেউ যদি কোনো সমস্যায় পড়ে, আমার কাছে আসে। আবার আমিই যাই, যদি দেখি কোনো ভালো ক্রিকেটার পারফরর্ম করতে পারছে না, মানসিকভাবে পিছিয়ে যাচ্ছে। গিয়ে তাকে অনুপ্রাণিত করি। যেন ও একটা সমর্থন পায়, যে না আমার কাছে আপু এসেছে।  

এটা আমার দায়িত্ব হিসেবেই দেখি। সবার কাছে যাই, ওরাও আমার কাছে আসে। জুনিয়ররা আমাকে খুব আপন করে নেয়। আমিও ওদের খুব ভালোবাসি ও পছন্দ করি।  

বাংলানিউজ : এবারের ডিপিএলটা নিয়ে বোধ হয় একটু কথা বলা দরকার। ঘরোয়া ক্রিকেটে এবার অনেক কম রান হচ্ছে। এক ম্যাচে সাত-আটটা ডাক মারার ঘটনাও আছে। এতদিনের অভিজ্ঞতা আপনার, এটা কেন হচ্ছে বলে মনে হয়?

সালমা : ঘরোয়া ক্রিকেট তো শেষ দুই বছর করোনার কারণে হয়নি। এখন আবার শুরু হয়েছে। আমরা যারা জাতীয় দলের ক্রিকেটার, তারা একটা ধারাবাহিক অনুশীলনের মধ্যে থাকি। বেশির ভাগ রান কিন্তু আমরাই করছি। যারা সারা বছর অনুশীলন করতে পারেনি, তারা পিছিয়ে গেছে দুই বছর খেলা না হওয়ায়। অনেকে হয়তো চিন্তা করেছে, খেলা হচ্ছে না, পড়াশোনা বা অন্য কাজে মন দিয়েছে। কিন্তু এটা যখন আবার শুরু হয়েছে, আমি আশা করবো আগামী বছর ঠিক হয়ে যাবে।

বাংলানিউজ : আপনার নিজের চোখের সেরা পাঁচ অর্জন যদি বলতে বলি....

সালমা : (অনেক্ষণ ভেবে) আমি প্রথম যখন ২০০৮ সালে অধিনায়ক হই। তখন চট্টগ্রামে একটা টুর্নামেন্ট হয়। ওটা আমার প্রথম অধিনায়কত্ব ছিল। পাঁচটা ওয়ানডে ম্যাচ খেলা হয়, আমরা অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। ওইটা আমার কাছে খুব স্পেশাল।

আরেকটা হচ্ছে প্রথম যখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করি, তখন আমরা চ্যাম্পিয়ন হই। যতগুলো ট্রফি এসেছে, আমার হাতেই বেশির ভাগ আসছে। সবচেয়ে বেশি গর্ববোধ করি, ২০১৮ সালে এশিয়া কাপ আমার নেতৃত্বে জিতেছি।  

বাংলানিউজ : এটা নিয়ে কথা না বললেই না। এশিয়া কাপ জেতার আগেই কি বিশ্বাসটা ছিল? এটার পেছনের গল্পটা যদি একটু বলতেন...

সালমা : এশিয়া কাপের শুরুটা কিন্তু আমাদের ভালো হয়নি। প্রথম ম্যাচেই হেরে গিয়েছিলাম। আমার এমনিতে বিশ্বাস ছিল, আমার যে টিম; ভালো কিছু করব আশা ছিল। প্রথম ম্যাচটা যখন হেরে গেলাম, দল নিয়ে বসে আলোচনা করেছি। বলেছি, আমাদের সক্ষমতা আছে কিছু করার।  

সবাইকে মোটিভেট করলাম। তাদের স্বাধানীতা দিলাম। বলেছি আমার বিশ্বাস তোমরা পারবা। আমার বিশ্বাসটা তোমরা নিজেদের মধ্যেও রাখো। যদি সালমা আপা পারে বলে, আমরা কেন পারবো না; যেহেতু আমি তোমাদের সাহস দিচ্ছি অধিনায়ক হিসেবে।

এরপর দ্বিতীয় ম্যাচ থেকে আমরা ভালো খেলা শুরু করলাম। পাকিস্তানকে হারালাম, ভারতকে হারিয়েছি; এরপর ফাইনালে চলে গেলাম।  

বাংলানিউজ : ফাইনালে যখন গেলেন, দলের প্রতি বার্তাটা কী ছিল?

সালমা : যেদিন ফাইনাল খেলতে গেলাম, আমার একটাই কথা ছিল- আমাদের হারানোর কিছু নাই, ভারতের অনেক কিছু আছে। কারণ শেষ ছয়বারের চ্যাম্পিন ওরা, আমরা একবারও না। আমরা যে ফাইনালে এসেছি, এটা আমাদের জন্য বড় পাওয়া।

প্রথম রাউন্ডে আমরা ভারতকে হারিয়েছি, এর আগে কিন্তু আর কখনো হারাতে পারিনি। এটা বলার পর মেয়েদের মধ্যে এমন একটা শক্তি চলে আসল- সবাই বলল আমরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নামবো, আর জিতব। ওই বিশ্বাসটা নিয়ে নেমেছি, সবার মধ্যে প্রচেষ্টাটা ছিল; দেশের জন্য কিছু করার চিন্তা ছিল। ওই কারণেই ট্রফিটা আসছে।

বাংলানিউজ : আইসিসির এক নম্বর অলরাউন্ডার, বিশ্বকাপও খেললেন, খেলোয়াড় সালমা আর কী চান?

সালমা : যতদিন বাংলাদেশ দলকে সার্ভিস দেবো, চেষ্টা করব ভালো পারফরম্যান্স করার। কতদিন খেলবো জানি না- তবে যতদিনই খেলবো চেষ্টা করব নিজের সেরাটা দেওয়ার। এতদিন যা কিছু দিয়েছি, এর জন্য শুকরিয়া। যতদিন খেলবো, আল্লাহর কাছে চাই যেন সুস্থ রাখে, ভালো রাখে, দেশকে যেন আরও ভালো কিছু এনে দিতে পারি।  

বাংলানিউজ : আরেকটা বিশ্বকাপ খেলবেন বললেন, সেটাই কি ক্যারিয়ারের শেষ?

সালমা : এখনও সিদ্ধান্ত নেইনি। প্রস্তুতি চলছে আগামী বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার। নিজেকে ফিট রাখতে হবে ওটার জন্য। সেটার ওপরই কাজ করছি। যদি সুস্থ থাকি, ভালো থাকি, বাংলাদেশ দলে থাকি, বিশ্বকাপ খেলবো আরেকটা।

বাংলানিউজ : শেষ প্রশ্ন, ক্রিকেট ছেড়ে দিলে কী করবেন?

সালমা : আমি ক্রিকেটের সঙ্গে থাকতে চাই। আশা করি সারাজীবন থাকবো ইন শা আল্লাহ।

এমএইচবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।