ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাড়তি শুল্ক প্রস্তাবে সংকটে পড়বে সিমেন্ট শিল্প: বিসিএমএ

সিনিয়র করেসপেন্ডন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৩ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩
বাড়তি শুল্ক প্রস্তাবে সংকটে পড়বে সিমেন্ট শিল্প: বিসিএমএ

ঢাকা: প্রস্তাবিত বাজেটে সিমেন্টের প্রধান কাঁচামাল ক্লিংকার আমদানিতে টন প্রতি শুল্ক ২০০ টাকা বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করা হয়েছে, যা আমদানি মূল্যের ১২ থেকে ১৩ শতাংশ। বাড়তি এ শুল্ক সিমেন্টের উৎপাদন খরচ বাড়াবে।

ফলে উদীয়মান ও সম্ভাবনাময় সিমেন্ট খাত নতুন সংকটে পড়বে বলে মনে করছে বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ)।

সোমবার (১২ জুন) দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলের হোটেল পূর্বানীতে বিসিএমএ আয়োজিত ‘অতিরিক্ত করের চাপসহ নানাবিধ সংকট শিল্পে’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি মো. আলমগীর কবির এ কথা বলেন।

আলমগীর কবির বলেন, সিমেন্ট শিল্প পুরোপুরি কাঁচামাল আমদানি নির্ভর। এ শিল্পে ক্লিংকার, স্লাগ, লা্ইমস্কেটান, ফ্লাইএ্যাশ এবং জিপশান আমদানি করতে হয়। বর্তমানে ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রতি ব্যাগ সিমেন্টের উৎপাদন খরচ বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ। আগে শূন্য বা সামান্য মার্জিনে এলসি খোলা গেলেও এখন শতভাগ মার্জিন দেওয়া লাগছে। তারপরও এলসি খুলতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কমিশনের হার বাড়িয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, প্রয়োজন ও সময় মতো ডলার পাওয়া যায় না। দাম বেশি দিতে চাইলে ডলার পাওয়া যায়। তারপরও আবার এলসি নিষ্পত্তির সময় ডলারের দাম বৃদ্ধি করে। ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত দামের বেশি দাম নিচ্ছে। শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে প্রতিকার চাইলেও কোনো কাজ হয়নি। ব্যাংকগুলোর ওপর কারও নিয়ন্ত্রণ নেই।

সিমেন্টের কাঁচামাল পরিবহনে বেশি ভাড়া নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সিমেন্টের উৎপাদনকারী সমিতির এই সভাপতি। তিনি বলেন,  জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় ১০ শতাংশ হারে পরিবহন ভাড়া বাড়ানোর কথা থাকলেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। বিশেষ করে লাইটার জাহাজের মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে দেশের ভেতরে বিভিন্ন কারখানায় কাঁচামাল নেওয়ার সময় এই ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

প্রায় দুই বছরে বড় প্রকল্পে সিমেন্টের ব্যবহার কমে গেছে। জ্বালানি ও পরিবহন খরচ বাড়ার কারণে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এর ফলে সিমেন্টের দাম বেড়েছে। আর দাম বাড়ার ফলে এক বছরে সিমেন্টের ব্যবহার কমেছে পাঁচ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে বাড়তি শুল্কের কারণে নতুন করে খরচ বাড়বে, এতে মানুষ সিমেন্টের ব্যবহার আরও কমাবে। এর ফলে কর্মসংস্থান কমে যাওয়ার পাশাপাশি ঝুঁকিতে পড়বে সিমেন্ট শিল্প।

তিনি বলেন, মোট সিমেন্টের চারভাগ বিদেশে রপ্তানি হয়। অন্যান্য শিল্পের মতো সিমেন্টেও প্রণোদনা দিলে রপ্তানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

সিমেন্টের কাঁচামাল আমদানি পর্যায়ে দশমিক পাঁচ শতাংশ ও বিক্রয় পর্যায়ে দুই শতাংশ হারে এআইটি নেওয়া হয়। উভয় ক্ষেত্রে দশমিক পাঁচ শতাংশ এআইটি ধার্য করার প্রস্তাব করে সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, এআইটিকে চূড়ান্ত দায় হিসেবে গণ্য করার ফলে শিল্পে সংকট তৈরি হয়েছে। এক্ষেত্রে এআইটি সমন্বয় করতে হবে। পাশাপাশি ক্লিংকারে নতুন করে শুল্ক না বাড়িয়ে ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ২০০ টাকা করার করার দাবি জানাচ্ছি। যাতে সিমেন্ট শিল্প বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে সৃষ্ট অভিঘাত মোকাবিলা করে অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২১ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩
জেডএ/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।