ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদের নেতৃত্বে এক পরীক্ষার্থীকে মারধর ও তিন শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম।
লাঞ্ছিত শিক্ষকরা হলেন- গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের (একাংশের) সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. পূর্বা ইসলাম, সহকারী প্রক্টর প্রফেসর আফরিনা মোস্তারিন, পপি খাতুন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গতকাল বিকেলে ভেটেরিনারি অনুষদের লেভেল ৪ এর সেমিস্টার ২ এর পরীক্ষা চলছিল। এ সময় পরীক্ষা দিতে আসা আফতাব দূর্বার নামে এক ছাত্রকে শত্রুতার জেরে ছাত্রলীগ সভাপতি রিয়াদ ও তার লোকজন মারধর করতে উদ্যত হয়।
এতে পরীক্ষায় দায়িত্ব পালনকারী একজন শিক্ষক বিষয়টি ওই বিভাগের শিক্ষক গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের একাংশের সাধারণ সম্পাদক পূর্বা ইসলামকে জানান।
এ সময় পূর্বা ইসলাম দ্রুত বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দায়িত্বপাপ্ত শিক্ষকদের জানালে কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রক্টর ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ঘটনাস্থলে আসেন। এরই মাঝে আফতাব দূর্বার নামের ওই শিক্ষার্থী পূর্বা ইসলামের কক্ষে গিয়ে আশ্রয় নেন।
কিন্তু প্রক্টর বিষয়টি সমাধান না করেই পূর্বা ইসলামের কক্ষ থেকে চলে যান এবং প্রক্টর চলে যাওয়ার পরপর ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতির নেতৃত্বে তার লোকজন পূর্বা ইসলামের কক্ষে জোরপূর্বক প্রবেশ করে আফতাব দূর্বারকে মারধর করতে থাকে।
এসময় পূর্বা ইসলাম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আফরিনা মুস্তারি আফতাবকে রক্ষা করতে চাইলে খন্দকার তায়েফুরের নেতৃত্বে
তার লোকজন ওই দুই শিক্ষকসহ মোট তিনজনকে লাঞ্ছিত করে।
প্রফেসর ড. মনিরুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে এ ঘটনা ঘটেছে বলে আমি মনে করি। কারণ এ ঘটনার পর এখন পযর্ন্ত কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সহমর্মিতা প্রকাশ বা কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সহকারী প্রক্টর আফরিনা মোস্তারিন জানান, এর আগে ছাত্রলীগ সভাপতি রিয়াদ আমাকে লাঞ্ছিত করেছে। কিন্তু তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের একাংশের সভাপতি এমএএম ইয়াহিয়া খন্দকার ও সহকারী প্রক্টর আফরিনা মুস্তারিসহ গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের একাংশের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ মহির উদ্দিনের নাম্বারে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
তবে ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ বলেন, আফতাব দূর্বারের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। তাই সে পরীক্ষা দিতে আসার খবর পেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে মারধর করতে যায়। তবে আমার উপস্থিতিতে কোনো শিক্ষার্থী বা কোনো শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা হয়নি।
এদিকে এ ঘটনার জেরে ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদকে কেন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার উপযুক্ত কারণসহ সাত দিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
মঙ্গলবার রাতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৩
আরএ