ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

শিক্ষা

কবে ক্লাসে ফিরতে পারবো- প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৬
কবে ক্লাসে ফিরতে পারবো- প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের

ঢাকা: শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতিতে ক্লাস না হওয়ায় অনিশ্চয়তায় পড়েছেন অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। সময়মত ক্লাস শেষ না হলে ঠিক সময়ে পরীক্ষাও হবে না, এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।


 
শিক্ষকদের আন্দোলনের অষ্টম দিন সোমবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার এলাকায় শিক্ষার্থীরা এমনটাই জানিয়েছেন।
 
যে করেই হোক, এখন তারা দ্রুত ক্লাসে ফিরতে চান, অন্যথায় দীর্ঘ সেশনজটেরও আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থীরা।
 
কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সমাজ বিজ্ঞানের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করে বাংলানিউজকে বলেন, আগামী ৩১ জানুয়ারি সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার সূচি, অথচ এখনও ক্লাস শেষ হয়নি। মিডটার্ম পরীক্ষা কখন হবে, আর ক্লাস কখন শেষ হবে- কিছুই বুঝতে পারছি না।
 
মর্যাদা ও বেতন প্রশ্নে বিভিন্ন পর্যায়ে আন্দোলনের পর গত ১১ জানুয়ারি থেকে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করে আসছেন দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। ক্লাস না হওয়ায় শিক্ষাজীবনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থীরা।
 
ক্লাস না থাকায় শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে স্ট্যাডি, কেউ কলাভবনের সামনে গ্রুপ স্ট্যাডি আবার কেউ নিজেদের মধ্যে আড্ডায় মেতে রয়েছেন।  
 
কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সমাজ বিজ্ঞানের মাস্টার্সের আরেক শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে ছিলেন মলিন মুখে। তার ভাষ্য, শিক্ষকরা সবার উপরে, তবে তারা যেনো শুধুই শিক্ষার্থীদের জন্য নিবেদিত থাকে সে বিষয়টি দেখতে হবে।
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সোমবার বিকেল সাড়ে চারটায় সাক্ষাতের ডাক পেয়েছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। সুধীজনদের নিয়ে পিঠা উৎসবের পর প্রধানমন্ত্রী শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান শিক্ষক নেতারা।
 
সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাতের পর শিক্ষকদের সমস্যার বিষয়গুলো সমাধান হবে আশা করে ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগের সদ্য মাস্টার্স শেষ করা রেদোয়ান বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষকরা এতোদিন ধরে আন্দোলন করছেন, উচ্চশিক্ষা ‘কলাপস’ হয়ে আছে, বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই বিবেচনায় নেবেন।
 
অষ্টম বেতন কাঠামোতে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল করায় শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেলে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি অধ্যাপকদের পদ ‘অবনমন’ হয়েছে।
 
সপ্তম বেতন কাঠামোতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গ্রেড-১ থেকে গ্রেড-৩ এ উন্নীত হওয়াসহ যে সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসতেন তা বহাল রাখা, গ্রেড-১ থেকে কিছু সংখ্যাক শিক্ষককে সিনিয়র সচিবের পদমর্যাদা প্রদানের জন্য রোববার শিক্ষাসচিবের কাছে প্রস্তাব জমা দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।
 
এছাড়া কিছু সংখ্যক শিক্ষককে সিনিয়রিটির ভিত্তিতে ‘বিশিষ্ট অধ্যাপক’ করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়।   
 
শিক্ষাসচিবের সঙ্গে আলোচনায় তরুণ শিক্ষকদের উচ্চতর শিক্ষার জন্য বৃত্তি চালু ও গবেষণার ব্যবস্থা করার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে বলেও জানান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।
 
ফেডারেশনের একটি সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রস্তাবগুলো অর্থ মন্ত্রণালয় পাঠাবে, সেখান থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে ভেটিংয়ের জন্য, এপর চূড়ান্ত হবে।
 
আবার এমনও হতে পারে যে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের সঙ্গে সাক্ষাতে তাৎক্ষণিকভাবে সমস্যাগুলো মিটিয়ে দিতে পারেন।
 
ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক এএসএম ড. মাকসুদ কামাল বাংলানিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে আলোচনা হলেই সব সমস্যা মিটে যাবে।
 
দাবি পূরণ হলে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সাপ্তাহিক ছুটির দিনও ক্লাস নেওয়া হবে বলে জানান মাকসুদ কামাল।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৬
এমআইএইচ/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।