ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ভর্তি জালিয়াতিতে সোচ্চার হওয়ায় বেরোবি শিক্ষককে অপসারণ!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৮
ভর্তি জালিয়াতিতে সোচ্চার হওয়ায় বেরোবি শিক্ষককে অপসারণ!

বেরোবি (রংপুর): রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) ১ম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি বিতর্ক যেন থামছেই না। এবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করা হলেও ভর্তি জালিয়াতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ব্যক্তিদের প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তির ঘটনা উন্মোচনকারী দুই শিক্ষককে ভর্তি কার্যক্রম থেকে বাদ দেওয়ার রেশ না কাটতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মুখতার এলাহী হলের প্রভোস্ট পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ভর্তি জালিয়াতির বিরুদ্ধে সোচ্চার বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও নীল দলের সভাপতি ড.শফিক আশরাফকে।

রোববার (৭ জানুয়ারি)এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তার স্থলে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয় মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক ফেরদৌস রহমানকে।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষকের অভিযোগ,  সহকারী প্রক্টর হিসেবে ভর্তি জালিয়াতি চক্র ধরায়

বিশেষ ভূমিকা রাখায় এ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করছি। কেননা অব্যাহতি পত্রে এ ব্যাপারে স্পষ্ট কারণ উল্লেখ নেই।

তিনি বলেন, শিক্ষকদের একটি গ্রুপ চায় না ভর্তি জালিয়াতরা ধরা পড়ুক। তাই কৌশলে আমাকে সরিয়ে দেওয়া হলো।

এর আগে জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তির ঘটনা উন্মোচনকারী দুই শিক্ষককে ভর্তি কার্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অব্যাহতি পাওয়া লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মণ্ডল। অন্য শিক্ষক হলেন একই বিভাগের প্রভাষক সামান্থা তামরিন।

‘বি’ ইউনিটের সাক্ষাৎকার বোর্ডে থাকা এই দুই শিক্ষকই ভুয়া পরীক্ষার্থী ও ভর্তি পরীক্ষার ওএমআর শিট পরিবর্তনের ঘটনাটি উন্মোচন করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে গত ২৬ থেকে ২৯ নভেম্বর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার ও ভর্তির জন্য ১৭ ডিসেম্বর নির্ধারিত দিন ছিল। ওইদিন মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে ছয় শিক্ষার্থীর আচরণ সন্দেহজনক মনে হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির কথা স্বীকার করেন শিক্ষার্থীরা।

এরপর তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এই ছয়জন হলেন- ‘বি’ ইউনিটের শামস বিন শাহরিয়ার, রিফাত সরকার ও সাদ আহমেদ, ‘সি’ ইউনিটের আহসান হাবীব ও শাহরিয়ার আল সানি এবং ‘এফ’ ইউনিটের রোকসান উজ্জামান।

একই দিন ক্যাম্পাসে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরার সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকেও আটক করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর(চলতি দায়িত্ব) আবু কালাম মো. ফরিদ উল ইসলাম কোতোয়ালি থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

আটক শিক্ষার্থীদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী রাহেল চৌধুরী পিন্টুকে গ্রেপ্তার করা হয়।

‘বি’ ইউনিটের সাক্ষাৎকার বোর্ড থেকে অব্যাহতি পাওয়া দুই শিক্ষকের একজন লোকপ্রশাসন বিভাগের আসাদুজ্জামান মণ্ডল।

তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে ওএমআর শিট পরিবর্তন করে ‘বি’ ইউনিটের শামস বিন শাহরিয়ার। তিনি জালিয়াতির কথাও অকপটে স্বীকার করলো। অথচ উল্টো আমাদেরই কোনো কারণ উল্লেখ ছাড়া পরবর্তী সাক্ষাৎকার বোর্ড থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

কথা বলতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৮
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।