ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

শিক্ষা

শাবিপ্রবিতে আসছেন শিক্ষামন্ত্রী: মুখিয়ে শিক্ষার্থীরা

শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২২
শাবিপ্রবিতে আসছেন শিক্ষামন্ত্রী: মুখিয়ে শিক্ষার্থীরা

শাবিপ্রবি (সিলেট): শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে  আলোচনা করতে শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ক্যাম্পাসে আসছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এতে শিক্ষামন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে তার সঙ্গে  আলোচনা করতে মুখিয়ে  আছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে শিক্ষামন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা ১৬ জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। এ কালো দিবসে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি এই উপাচার্য তো মেনে নেয়নি। শিক্ষার্থীদের ওপর যে পুলিশী হামলার ঘটনার অবতারণা করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে তা নজিরবিহীন। হামলার পরপর গণমাধ্যমে এসে মিথ্যাচার করে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করে হল খালি করার নির্দেশ দেন।

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সজল কুণ্ডু তার সমস্ত দেহে ৮৩টি ধাতব স্প্লিন্টার বহন করছেন। ঢাকায় তার চিকিৎসা চলছে এবং দীর্ঘ অপারেশনের পর দেশের খ্যাতনামা ডাক্তাররা তার একটা হাত থেকে কেবল ৪টি স্প্লিন্টার বের করে আনতে সক্ষম হয়েছেন। শিক্ষার্থীরা জানতে চায় সজলের মতো অমিতসম্ভাবনাময় জীবন এভাবে ধ্বংস করে দেওয়ার অধিকার ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে কে দিয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো বহু শিক্ষার্থী দেহে একাধিক স্প্লিন্টার বহন করে বেড়াচ্ছে।

এরমধ্যে গত ১৯শে জানুয়ারি থেকে আমাদের ২৪ জন শিক্ষার্থী উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন। দীর্ঘ ১৬৩ ঘণ্টা অনশনের পর ২৬ জানুয়ারি শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নেওয়ার বার্তা নিয়ে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক ইয়াসমিন হককে সরকার দূত হিসেবে প্রেরণ করলে শিক্ষার্থী তাদের মরণপণ অনশন ভেঙে সরকারের সদিচ্ছায় সাড়া দেয়।

অথচ হতাশার সঙ্গে আমরা দেখছি যে শিক্ষার্থীদের ওপর দায়েরকৃত দুইটি হয়রানিমূলক মামলা এখনও তুলে নেওয়া হচ্ছে না, এবং ক্রমান্বয়ে নানা অযুহাতে মামলা তুলে নেওয়া পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ২৫০-র বেশি শিক্ষার্থীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বিকাশ, নগদ অ্যাকাউন্ট বিনা নোটিশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। মামলা তুলে নেওয়ার এবং এসব অ্যাকাউন্ট সচল করার ওয়াদা দেওয়ার পর ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত এ হয়রানি কমানোর ব্যাপারে কোনো প্রকার পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের আন্দোলনের শুরু থেকেই মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী সরাসরি আমাদের সঙ্গে ফোনে ও ভিডিও কলের মাধ্যমে আন্তরিকভাবে কথা বলেছেন। আমরা আশা করব, একই রকম আন্তরিকতার সঙ্গে তিনি আমাদের দাবিগুলো সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরে অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের এই হয়রানি ও মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করার পদক্ষেপ নেবেন।  

বর্তমানে ভিসির ক্ষমতার দম্ভ, অপরিণামদর্শীতা ও ভুল সিদ্ধান্তের কারণে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন স্থবির হয়ে আছে। যেখানে কোভিডের প্রকোপ বৃদ্ধির এই সময়ে বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ও ক্ষেত্র বিশেষে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে অফলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা চলছে, সেখানে আমরা শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা বড় সেশনজটের আশঙ্কায় দিন পার করছি।

তারা বলেন, ২৬ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী যখন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এক অভূতপূর্ব সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন, তা শাবিপ্রবিসহ সমগ্র বাংলাদেশেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক সুদিনের পয়গাম হিসেবে আদৃত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি শাবিপ্রবির ব্যর্থ ও অযোগ্য উপাচার্যসহ প্রশাসনিক অন্যান্য দায়িত্ব পালনে অকৃতকার্য ব্যক্তিদের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে এই সংস্কারের শুভসূচনা হবে।

শিক্ষামন্ত্রীকে আমরা এ বার্তা দিতে চাই যে, বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে আমরা নিজেদের সম্পূর্ণরূপে নিয়োজিত করেছি। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আপামর জনগণের দীর্ঘপ্রত্যাশিত সংস্কারের যে মহাপরিকল্পনার ডাক তিনি দিয়েছেন তাতে সর্বতভাবে সাহায্য ও সহযোগিতার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে আমরা শুক্রবার আমাদের ক্যাম্পাসে শিক্ষামন্ত্রীর আগমনকে স্বাগত জানাচ্ছি।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২২
এসআইএস
 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।