২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ব্রাজিল জাতীয় দলের সম্ভাব্য নতুন অ্যাওয়ে জার্সির একটি স্কেচ ফাঁস হওয়ার পর দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। এই বিতর্ক কেবল মাঠের খেলা নিয়েই নয়—তা ছড়িয়ে পড়েছে ব্রাজিলের রাজনৈতিক অঙ্গনেও।
বিখ্যাত ফুটবল বিষয়ক ওয়েবসাইট 'ফুটি হেডলাইনস' প্রথম খবরটি প্রকাশ করে, যেখানে দাবি করা হয়—পরবর্তী বিশ্বকাপে ব্রাজিল ঐতিহ্যবাহী নীল অ্যাওয়ে জার্সির পরিবর্তে পরতে পারে একটি লাল জার্সি, যার ডিজাইনে থাকবে কালো রঙের ছোঁয়া। ১৯১৭ থেকে ১৯১৯ সালের মধ্যে জাতীয় দল যে লাল জার্সি পরত, এই নতুন ডিজাইনটি তারই একটি আধুনিক রূপ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সমালোচনার ঝড়, নানান প্রশ্ন
ডিজাইনটি সামনে আসতেই তা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। অনেকেই এমন পরিবর্তনকে ব্রাজিলীয় ফুটবলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন। কারও কারও দৃষ্টিতে এটি নিছক ‘অপ্রয়োজনীয় রঙের রাজনীতি’।
রাজনৈতিক ব্যাখ্যায় রঙ পায় বিতর্ক
বিতর্কটি নতুন মাত্রা পায় যখন ব্রাজিলের রাজনৈতিক মহলেও তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করে। সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো-সমর্থক ও ডানপন্থি রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলো জার্সির লাল রঙকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভার বামপন্থী রাজনৈতিক দর্শনের প্রতীক হিসেবে ব্যাখ্যা করতে শুরু করেন। তাদের ভাষায়, “আমাদের পতাকা কখনো লাল হবে না!”
ডানপন্থি সংসদ সদস্য জে ত্রোভাও এমনকি একটি বিলও প্রস্তাব করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে—ব্রাজিলকে প্রতিনিধিত্বকারী যেকোনো প্রতীক বা পোশাকে কেবল জাতীয় পতাকার রঙ—সবুজ, হলুদ, নীল এবং সাদা—ব্যবহার করা যাবে।
সিবিএফ-এর ব্যাখ্যা ও প্রতিক্রিয়া
সামগ্রিক প্রতিক্রিয়ার মুখে ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন (সিবিএফ) এক বিবৃতিতে জানায়, ফাঁস হওয়া ডিজাইনটি কোনোভাবেই চূড়ান্ত নয়; এটি একটি প্রাথমিক খসড়া মাত্র। নাইকি-এর সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনার পরেই নতুন জার্সির বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।
একবার হয়েছিল ব্যতিক্রমও
২০২৩ সালে ব্রাজিল একটি প্রীতি ম্যাচে গিনির বিপক্ষে কালো জার্সি পরে মাঠে নেমেছিল। সেটি ছিল বর্ণবাদের বিরুদ্ধে একটি প্রতীকী বার্তা, এবং তা এককালীন ব্যতিক্রম হিসেবেই দেখা হয়েছিল। কিন্তু এবার লাল জার্সি আনার বিষয়টি যদি সত্যি হয়, তাহলে সেটি হবে স্থায়ী দ্বিতীয় কিট হিসেবে ব্যবহারের লক্ষ্যে—এবং সেখানেই মূলত সমস্যা দেখছে অনেকেই।
সূত্র- টিওয়াইসি স্পোর্টস
বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২৫
এমএইচএম