তিনি বলেছেন, এখন আমাদের জন্য সবসময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া।
শুক্রবার (১০ এপ্রিল) বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বাংলানিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন ডা. মোশতাক হোসেন।
ডা. মোশতাক বলেন, আগামী এক-দুই সপ্তাহ বা এপ্রিল মাস করানোর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ আমরা (epidemiologist) এমন কথা কোনো সময় বলি না। আমরা বলি সবসময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। বাংলাদেশে যখন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়নি, তখনও আমরা বলেছি বাংলাদেশে শতভাগ ঝুঁকি রয়েছে। শনাক্ত হওয়ার পরেও বলেছি, চূড়ান্ত পর্যায়ে সামাজিক সংক্রমণের আশঙ্কা আছে।
‘যারা সাত দিন বা ১৪ দিন ঝুঁকিপূর্ণ বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন, তারা সম্ভবত এপিডেমোলোজিস্ট না। তারা অন্য বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হতে পারেন। তবে রোগতত্ত্ব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নন। আসলে এভাবে কথা বললে মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। বাংলাদেশের করোনা আক্রান্ত সর্বশেষ রোগী সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত ঝুঁকি থেকে যায়। এটার পরেও তিন সপ্তাহ আমাদের পর্যবেক্ষণ করতে হবে নতুন কেউ করোনায় আক্রান্ত হয় কি-না। এরপরে আবার বিশ্বের অন্যান্য দেশে করোনা মহামারি থাকলে সেখান থেকে আমাদের দেশে সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যায়। ’
আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের চলাচল সীমিত করতে হবে। সারাদেশে জরুরি কাজগুলো চলবে। তবে আমাদের পদ্ধতি খুঁজে বের করতে হবে কীভাবে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে এ জাতীয় জরুরি সেবাগুলো চালু রাখা যায়। দেশের হাসপাতালগুলো চালু রয়েছে। সেখানে ডাক্তার, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছেন। সাংবাদিকরা কাজ করছেন দেশের মানুষকে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে। আমাদের এই কাজগুলো কীভাবে আরও বেশি সুরক্ষার সঙ্গে নিরাপদে করা যায়, সে বিষয়ে ভাবতে হবে।
তিনি বলেন, অসতর্কভাবে রাস্তাঘাটে চলাচল করলে আমরা নিজেরাও বিপদে পড়ব। দেশের অন্যান্য মানুষকেও বিপদে ফেলব। তাই আমাদের কষ্ট হলেও বাসায় থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে জয়ী হতে হলে আমাদের নিজেদের সচেতনতা যেমন জরুরি, তেমনি সামাজিক সচেতনতা ও সমর্থনও অত্যন্ত জরুরি।
করোনা পরিস্থিতিতে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করার তাগিদ দিয়ে ডা. মোশতাক হোসেন বলেন, এ রোগের উৎস খোঁজার জন্য স্বেচ্ছাসেবকদের প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। তারা খোঁজখবর নেবে কারও খাবারের কোনো সমস্যা রয়েছে কি-না। কারও কিছু প্রয়োজন আছে কি-না। পাশাপাশি কারও স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা রয়েছে কি-না। এছাড়া করোনা রোগের উৎসগুলো যদি আমরা শনাক্ত করতে পারি এবং তাদের যদি কোয়ারেন্টিন করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারি, তাহলে অবশ্যই করোনা আক্রান্ত সংখ্যা কমে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২০
আরকেআর/টিএ