ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল কলকাতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪
শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল কলকাতা

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে ফের শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে কলকাতার রাস্তায় চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ২০২২ সালে প্রাথমিক শিক্ষক (টেট) উত্তীর্ণ প্রার্থী।

অপরদিকে, রাজ্যের নবম থেকে দ্বাদশ (এসএসসি) চাকরিপ্রার্থীদের হুমকি, আগামী সাতদিনের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু না হলে চাকরিপ্রত্যাশীরা আত্মহত্যার পথ বেছে নেবেন। আর এ নিয়ে ভোটের আগে আরও একবার সরগরম রাজ্যের রাজনীতি।

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট অঞ্চলের সন্দেশখালি এলাকায় রেশন দুর্নীতি এবং নারী লাঞ্ছনা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি এতটাই উত্তেজিত যে, অনেকটাই ব্যাকফুটে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল। ভোটের মাঠে এর যে প্রতিফলন পড়বে এবং শাসকের বিপক্ষে যাচ্ছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এর মধ্যে ফের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অশান্ত হয়ে উঠল কলকাতা।

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সল্টলেক করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ডে বিক্ষোভ করেন ২০২২ সালে টেট উত্তীর্ণরা। তাদের দাবি, বছর পেরিয়ে গেলেও ইন্টারভিউর বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। তারা এদিন হাতে প্ল্যাকার্ডসহ বিক্ষোভ করতে থাকেন। সড়কেই বসে পড়েন অসংখ্য চাকরিপ্রার্থী। পরিস্থিতি সামাল দিতে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। নামানো হয় র‍্যাফ বাহিনী। চাকরিপ্রার্থীদের টেনে হিঁচড়ে রাস্তা থেকে পুলিশ তুলতে চেষ্টা করে। শুরু হয় বচসা। পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তিতে কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী অসুস্থও হয়ে পড়েন।

এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, রাজ্যের সরকার ভীত। লুট, চুরি, তোলাবাজি যাদের ভিত্তি, দুষ্কৃতকারীরা যাদের পরিচালনা করে তারা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে খণ্ডিত করবে এটাই স্বাভাবিক। পরীক্ষায় পাস করা কেউ চাকরি পাবে না, সাদা খাতায় টাকা জমা দিলে চাকরি। তাই তো প্রতিবাদকে ভয় পাচ্ছে। সরকার পুলিশকে লেলিয়ে দিচ্ছে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, মানুষের অধিকারের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে।

বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেছেন, চাকরিপ্রার্থীরা যেভাবে ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছেন, তা উল্লেখযোগ্য। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তারা আন্দোলন করছেন আর পুলিশ দিয়ে তা দমনের চেষ্টা চলছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা করি, ধিক্কার জানাই।

অন্যদিকে, রাজ্যের নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা ‘এসএসসি যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ’ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু না হলে তারা এবার আত্মহত্যার পথ বেছে নেবেন। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) কলকাতার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তাদের ধরনা এক হাজার একশো দিন পার করেছে।

সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে ‘এসএসসি যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ’র রাজ্য কোঅর্ডিনেটর সুদীপ মণ্ডল বলেছেন, সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পর বৈঠক হচ্ছে। কিন্তু সমাধান বেরোচ্ছে না। সংসদ (লোকসভা) ভোটের আগেই আমরা স্কুলে চাকরি চাই। তাই দরকার, দ্রুত কাউন্সেলিং। কিছুদিন পরেই ভোটের তফসিল ঘোষণা হবে। তখন আদর্শ আচরণবিধির অজুহাত আমরা শুনব না। কারণ, এই নিয়োগ দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে।

মঞ্চের সভাপতি মইদুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাতদিনের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু না করলে এবার তারা আত্মহননের পথ বেছে নেবেন।

এ প্রসঙ্গে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, আত্মহননের হুমকি আন্দোলনের কোনো পথ নয়। আলোচনাই পথ। আন্দোলনের সঙ্গে চাকরির কোনো সম্পর্ক নেই। একটা জট হয়ে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে তা ছাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। একটা প্রক্রিয়া চলছে। আইনি বিষয় রয়েছে সবটাতেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।