ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

পরিবর্তন, প্রত্যাবর্তন না ত্রিশঙ্কু, কলকাতার হাওয়ায় প্রশ্ন একটাই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৮ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৬
পরিবর্তন, প্রত্যাবর্তন না ত্রিশঙ্কু, কলকাতার হাওয়ায় প্রশ্ন একটাই

কলকাতা:‘প্রশ্ন করব কি! সাংবাদিক বুঝতে পারলে সাধারণ মানুষ উল্টে একগুচ্ছ প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছে। এরকম ভোট আমার কেরিয়ারে আগে দেখিনি!’।

কলকাতার একটি ইংরেজি পত্রিকার এক অগ্রজপ্রতিম সাংবাদিককে ফোন করতে তিনি হাসতে হাসতে এই কথাই জানালেন।

একদমই সত্যি কথা, কলকাতার টালি থেকে টালা কিংবা বালি থেকে বাগবাজার যেখানেই মানুষের সঙ্গে কথা হচ্ছে সেখানেই একটাই প্রশ্ন , ‘কি বুঝছেন বলুন তো?’

অবস্থাটা এমনই যে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার ভোটে কি ফলাফল হতে পারে তার আগাম আভাস দেওয়ার ঝুঁকি নিচ্ছেন না কেউই। একমাত্র সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রবল সমর্থকরা দাবি করে যাচ্ছেন তারাই জিতবেন।

পশ্চিমবঙ্গের ‘বুথ ফেরত সমীক্ষা’ প্রকাশ করে প্রথম সারির প্রায় প্রতিটি সংবাদ মাধ্যম। সেই সমীক্ষাও শেষ । সমীক্ষার ফলাফলও তৈরি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের বিধি মেনে ১৬ মে –এর আগে সেটি প্রকাশ করা যাবে না। কারণ ১৬ মে কেরালার নির্বাচন। কেরালার নির্বাচন শেষ হলেই প্রকাশিত হবে বুথ ফেরত সমীক্ষা।

এদিকে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে জেলাগুলি থেকে রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে। সেই রিপোর্ট ঝাড়াইবাছাই করে তারা একটা সম্ভাবনা বোঝার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ খুব চুপচাপ। ভোট প্রক্রিয়ায় কাজ করার বেশ কিছু বছরের অভিজ্ঞতা আছে এমন কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে নতুন একটি বৈশিষ্ট্য যোগ হয়েছে।

এই নির্বাচনে মানুষ এসেছেন চুপচাপ ভোট দিয়েছেন এবং চলে গেছেন। যেটা পশ্চিমবঙ্গের ভোটের চরিত্র নয়। অন্যান্য নির্বাচনে মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে কথা বলেন, গল্প করেন কিন্তু এই বছর মানুষ ভীষণ ভাবেই চুপচাপ। এর কি প্রতিফল পড়তে পারে? এক দিকে হতে পারে মানুষ খুব ভেবেচিন্তে ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে এসেছেন এবং ভোট দিয়েছেন। তাই যদি হয় তবে ফলাফল হবে একপেশে। অর্থাৎ যে দল জিতবে সে অনেক বেশি আসন নিয়ে জিতবে।

দ্বিতীয়ত হতে পারে মানুষের মনে একটা চাপা উত্তেজনা কাজ করেছে। অর্থাৎ আগে যে দলকে ভোট দিতেন তাকে না দিয়ে অন্য কাউকে দিচ্ছেন। তাই তার ভাবনা যাতে ধরা না পড়ে যায় তাই মানুষ চুপচাপ ভোট দিয়েছে। তৃতীয়ত হতে পারে সাধারণ মানুষ কিছুটা 'কনফিউজড'।

এই চুপচাপ ভাবটা কিন্তু ভোটের পরেও রয়ে গেছে। কেউই পরিষ্কার ভাবে নিজের মত প্রকাশ করতে চাইছেন না। এমন কি খুব ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গায় ছাড়া সাধারণ মানুষ নিজের ধারণার কথাও খুলে বলছেন না। বরং অন্যের মতামত শোনাতেই তাদের আগ্রহ বেশি। এই মানসিকতার জায়গা থেকেই কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষক ত্রিশঙ্কু ফলাফলের আশা করছেন।

তবে একথা স্পষ্ট যে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে প্রবল অনিশ্চয়তা কাজ করছে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মনে। আগামী ১৬ মে তারিখে বুথ ফেরত সমীক্ষার ফলপ্রকাশ হবে। কিন্তু অনেকেই মনে করছেন তাতেও পরিষ্কার ধারণা পাওয়াটা বেশ কঠিন হবে। তাই একমাত্র উপায় ১৯ মে পর্যন্ত অপেক্ষা। তখনই বোঝা যাবে পরিবর্তন,প্রত্যাবর্তন নাকি ত্রিশঙ্কু, কি হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ভোটের ফলাফল।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৭ ঘণ্টা, ১৪ মে, ২০১৬
ভি.এস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।