বুধবার (২০ মে) দুপুরের পর রাজ্যের দীঘার সমুদ্র সৈকতে আছড়ে পড়তে চলেছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। ওই সময় ঘূর্ণিঝড়ের বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিমি।
পুর্বাভাস অনুযায়ী স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সময় কলকাতায় ঝড়ের সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১৩০ কিমি। ফলে বুধবার কলকাতায় সব বাজার বন্ধ রাখার জন্য অ্যাডভাইসরি জারি করেছে কলকাতা আবহাওয়া দফতর।
অপরদিকে আবহাওয়া দফতরের পুর্বাভাস অনুযায়ী, শেষ ৬ ঘণ্টায় ১৭ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে আম্পান। দিক পরিবর্তন করে উত্তর পূর্ব অভিমুখ অর্থাৎ পশ্চিমবাংলার দিকে ধেয়ে আসছে এই ঝড়। এই মুহূর্তে পারাদ্বীপ থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার, দীঘা থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
এ নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, সাগর, ফ্রেজার গঞ্জ, বাসন্তী, ক্যানিং সহ একাধিক সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় আঘাত হানবে আম্পান। বেশি আঘাত হানতে সক্ষম হবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। ফলে সব রকমভাবে প্রস্তুত আছে রাজ্য সরকার।
সাইক্লোন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব মেনেই চলছে প্রস্তুতির কাজ। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২ লক্ষ, উত্তর ২৪ পরগনায় ৫০ হাজার, পূর্ব মেদিনীপুরে ৪০ হাজার এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে ১০ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার দুপুর ২টা নাগাদ দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরে হিট করবে আম্পান। তাণ্ডব চলবে মধ্যরাত পর্যন্ত। এই ঝড়ের তিনটে অংশ। প্রথমে মাথা হিট করবে। তারপর চোখ হিট করবে। আর শেষ হল টেইল। এই টেলেই সব উড়িয়ে নিয়ে যায়। ঘুর্ণিঝড় ফণীর সময় উড়িষ্যায় এমনটাই হয়েছিল। ফলে আয়লার থেকেও ভয়ঙ্কর হতে পারে আম্পান।
আম্পানে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। ক্ষতিগ্রস্ত হবে উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুরও। আগামীকাল বেলা ১১টা পর থেকে বৃহস্পতিবার সকাল অব্দি বাড়ির বাইরে না বেরোনোর নিষেধ জারি করেছে সরকার।
পাশাপাশি মমতা জানান, যারা ত্রাণ শিবিরে আছেন, তারা ত্রাণ শিবিরের ভেতরেই থাকবেন। প্রশাসন অনুমতি দেওয়ার পর বেরোবেন। রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে আম্পান নিয়ে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে সতর্কও করলেন রাজ্যবাসীকে।
পাশাপাশি মমতা জানান, তিনি নিজেও বুধবার দুপুর থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত নবান্নেই থাকবেন। নবান্নে কন্ট্রোলরুমে উপস্থিত থেকে গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখবেন।
এদিন বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখনও অব্দি মোট ৩ লাখ মানুষকে সরিয়ে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। যেহেতু এই সময় করোনার সংক্রমণের আতঙ্কও রয়েছে, করোনা মোকাবিলায় সমস্ত সাইক্লোন শেল্টারগুলি স্যানিটাইজ করা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পানি ও বেবিফুডের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সকলকে আবেদন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, অহেতুক আতঙ্ক নয়, সজাগ থাকুন।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫৫ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২০
ভিএস/ইউবি