ঈদ গেছে কয়দিন হলো। লকডাউনের চতুর্থ দফাতেও দোকানপাট ছিল বন্ধ।
করোনার কারণে মলে জামা কাপড়ের ট্রায়াল বন্ধ। শাহীদদের মতো ক্রেতাদের কিনতে হলে ভরসা রাখতে হবে চোখের আন্দাজে। তবে ছুঁয়ে দেখা যাবে কাপড়। কিন্তু, দাম একবার চুকে গেলে এক্সচেঞ্জ চলবে না। ব্যাগবন্দি জিনিস সংস্থার গেটের বাইরে চলে গেলে শোরুম আর তা ফেরত নেবে না। করোনাকালের ক্রেতারদের ক্ষোভ থেকে বাঁচতে, হাসি মুখে দোকানিদের একটাই কথা, ‘একটু মানিয়ে নিন স্যার, এছাড়া তো এখন তো কোনো গতি নেই। ’
শিয়ালদহর ওই শপিংমলটির দায়িত্বে থাকা এক কর্তা বলেন, মানুষকে সুস্থ রেখে ব্যবসা চালাতে এই অবলম্বন নেওয়া হয়েছে। মলের ভেতরের দোকানগুলোতে এ বিষয়ে নোটিশ দেওয়া আছে। ট্রায়াল রুম সিল করা হয়েছে। এছাড়াও বিলিংয়ের সময় ক্রেতাদের আরও একবার নো এক্সচেঞ্জ নীতির কথা মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গ্রাহক রাজি হলে তবেই বেচাকেনা।
শুধু বিগ বাজার কেন, শহরের বিভিন্ন বড় শপিংমল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যাচ্ছে, সুরক্ষায় জোর দেওয়াটাই এখন সবার মূলমন্ত্র। তা সে ক্রেতা-বিক্রেতা হোক, বা শপিংমলের কর্মী। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে বন্ধ রাখা হয়েছে জামাকাপড়ের ট্র্যায়াল, করা যাবে না এক্সচেঞ্জও। তবে ট্রায়াল বন্ধ বলে মলগুলোর অনেক দোকান এখনো বন্ধ রয়েছে।
যেমন পার্কসার্কাসের ‘কোয়েস্ট মলে’ গিয়ে দেখা গেলো, প্রবেশপথেই চলছে থার্মাল স্ক্রিনিং। শরীরের তাপমাত্রা, যন্ত্র অনুযায়ী সঠিক হলেই তবে ভেতরে যাওয়ার ছাড়পত্র মিলছে। মানিব্যাগ ছাড়া অন্য কিছু হাতে নিয়ে প্রবেশের অনুমতি মিলছে না। তাদের রীতিমতো হান্ড স্যানিটাইজ করে ভেতরে ঢুকতে হচ্ছে।
একই চিত্র দক্ষিণ কলকাতার ‘সাউথ সিটি মল’-এ। ওই মলের এক পদস্থ কর্মচারী বলেন, সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই কিন্তু এত সব ব্যবস্থা। কর্মীদের জন্যও আমরা হ্যান্ড স্যানিটাইজার, গ্লাভস এবং মাস্ক বাধ্যতামূলক করেছি। এমনকী, নির্দিষ্ট সময় পরে শপিং মলগুলোর প্রত্যেকটা ফ্লোর ক্লিনিং হচ্ছে।
সোমবার (০৮ জুন) থেকে শপিংমল খুলেছে। চোখে পড়ার মতো লোকজন এখনো আসছে না মলগুলোয়। বর্তমানে যারা আসছেন তাদের মতে, এখনই একটু ফাঁকা থাকবে। এরপর ভিড় বাড়বে। শপিংমল কর্তৃপক্ষদের কথায় ২০ শতাংশেরও কম মানুষ মলে পা রাখছেন। বুধবারও (১০ জুন) ছবিটা প্রায় একই।
তবে উদ্দেশ্য সৎ হলেও মন ভরছে না ক্রেতাদের। শাহীদের মতে এখনকার যা পরিস্থিতি, তাতে এই ব্যবস্থার দরকার আছে। তবে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে মলগুলোয়। ট্রায়াল বন্ধ মানা যায়, কিন্তু এক্সচেঞ্জও হবে না! দামী একটা ব্র্যান্ড কিনে বাড়ি গিয়ে যদি দেখি ফিট হলো না, তাহলে পুরো টাকাটাই জলে যাবে। তার থেকে অনলাইন ভালো। অন্তত এক্সচেঞ্জটা তো করা যাবে!
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২০
ভিএস/এইচএডি/