কলকাতা: ডিসেম্বরের শুরুতেই শীত টের পাচ্ছে কলকাতাবাসী। তবে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন এতোটাই উষ্ণতা ছড়াচ্ছে যে শীতও যেন হার মানছে তার কাছে।
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন কেন্দ্রের জন্যও সব সময় গুরুত্বপূর্ণ। শাসকদল বিজেপি অনেকটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগোচ্ছে বাংলা দখলে। আর টানা তৃতীয়বার ক্ষমতা দখলে মরিয়া মমতা সরকারের। ফলে রাজ্যের সবগুলি দল কোমর বেঁধে নেমেছে ভোটের ময়দানে।
তবে মসনদে বসতে অনেক হোমওয়ার্ক করতে হবে মমতার তৃণমূল কংগ্রেসকে। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি সেচ তথা পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ, শাসকদলের বিধায়ক থাকার পরও তৃণমূল থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করা, শুভেন্দুর ‘দাদার অনুগামী’ বলে অরাজনৈতিক দল তৈরি করা, বিধায়কদের দল ছাড়ার হিড়িক, শাসকদলের ভাঙন ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, গরু পাচার চক্র, কয়লা কেলেঙ্কারি, পরপর জঙ্গি ধরা পড়া- সব মিলিয়ে অনেকটাই কোণঠাসা তৃণমূল।
অপরদিকে, বাম-কংগ্রেস জোট, বিজেপির পালা বদলের আহ্বান, অমিত শাহর মতো কেন্দ্রীয় একাধিক নেতার রাজ্যে ঘন ঘন পদাপর্ণ, ২০০’র বেশি আসন পেয়ে বিজেপির ক্ষমতা দখলের হুংকার- প্রভৃতি মিলিয়ে করোনাকালে ভারতের অর্থনীতি, বেকারত্ব, ভারত-চীন সীমান্ত উষ্ণতা সবকিছুই ছাপিয়ে যেতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন।
মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) সকালে কোচবিহার জেলায় ‘চায়ে পে চর্চা’ অর্থাৎ চা চক্র নামে এক অনুষ্ঠানে সৌমিত্র খাঁ বলেন, আমি বলছি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একজন চোর। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একজন ডাকাত। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একজন কয়লা মাফিয়া, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরি দেবো বলে বেকারদের কাছ থেকে টাকা তুলেছে এলাকায় এলাকায়। আর ওর সঙ্গী বিনয় মিশ্র।
গত রোববার (২৯ নভেম্বর) ডায়মন্ড হারবারের এক সভা থেকে ‘ভাইপো’ বিতর্কে মুখ খুলেছিলেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিন তিনি বলেছিলেন, দলে কে থাকলো আর কে থাকলো না তাতে কিছু এসে যায় না। সূর্যের অপর নাম মমতা বন্দোপাধ্যায়। তার সঙ্গে লাগতে হলে হাত ঝলসে যাবে।
পাশাপাশি তিনি বলেছিলেন, বেশ কিছুদিন ধরে আমাকে ভাইপো-ভাতিজা বলে হেনস্তা করা হচ্ছে। তাদের সাহস থাকলে আমার নাম ধরে ডাকুক। যিনি আমার নাম নিয়ে মিথ্যে কথা বলেছেন, তাকে আমি আদালতের রাস্তা দেখিয়েছি। তাই দম থাকলে আমার নাম নিয়ে বলুন। ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রীরও আমার নাম নিয়ে কথা বলার বুকের পাটা নেই।
‘আমি ভাববাচ্যে বলি না। আমি সরাসরি বলছি কৈলাস বিজয়বর্গীয় বহিরাগত, দিলীপ ঘোষ গুণ্ডা, মাফিয়া। অমিত শাহ বহিরাগত। সুনীল দেওধর বহিরাগত। আকাশ বিজয়বর্গীয় গুণ্ডা। কিন্তু কেউ আমার নাম নিতে পারে না। কারণ আমরা মানুষের হয়ে কাজ করি। ’
সেই চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতেই এদিন সৌমিত্র খাঁ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চোর, ডাকাত ও কয়লা মাফিয়া বলে কটাক্ষ করেছেন। অপরদিকে শুভেন্দুর মতো জাঁদরেল নেতা বিজেপিতে যাবে নাকি অন্যদল তৈরি করবেন তার দিকে তাকিয়ে আছেন রাজনৈতিক দলগুলো থেকে ভোটাররা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০২০
ভিএস/এএ