ঢাকা, সোমবার, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ শাবান ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

জার্মান চ্যান্সেলর হতে যাওয়া কে এই ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫
জার্মান চ্যান্সেলর হতে যাওয়া কে এই ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস? ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস

জার্মানির পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।  এরইমধ্যে বুথ ফেরত জরিপের ফল আসা শুরু হয়েছে।

 এতে দেখা যাচ্ছে, শীর্ষে রয়েছে রক্ষণশীল দুই দলের জোট সিডিইউ/সিএসইউ।  

রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় শুরু হয় ভোট, চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।  এখন চলছে গণনা।  সোমবার সকাল নাগাদ শেষ হতে পারে ভোট গণনা।

বুথ ফেরত জরিপ থেকে নির্বাচনের ফল সম্পর্কে কিছুটা আভাস পাওয়া যাচ্ছে।  এতে দেখা যাচ্ছে, রক্ষণশীল দল সিডিইউ ২৯ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছে।

দ্বিতীয়তে রয়েছে কট্টর ডানপন্থী দল এএফডি।  তারা পেয়েছে ১৯ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট।  আর বর্তমান জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বাধীন এসপিডি রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে।  দলটি ১৬ শতাংশ ভোট পেয়েছে।

সব ঠিক থাকলে সিডিইউ প্রার্থী ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস হতে পারেন জার্মানির পরবর্তী চ্যান্সেলর।  তার দল এসপিডি বা গ্রিনের সঙ্গে জোট সরকার গঠন করতে পারে।

কট্টর অবস্থানের কারণে এএফডিকে এড়িয়ে চলছে জার্মানির সবকটি রাজনৈতিক দল।  তাই জোট সরকারে তাদের দেখা না যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি।  

জার্মানিতে ভোটার প্রায় ছয় কোটি।  ধারণা করা হচ্ছে এবারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে ৮৩ থেকে ৮৪ শতাংশ ভোট পড়েছে।  

২০২৪ সালের নভেম্বরে এসপিডির নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ভেঙে যায়।  এতে জার্মানিতে নির্ধারিত সময়ের আগেই পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

কে এই ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস 

ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস একজন সাবেক ব্যাংকার। কখনো জার্মান সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেননি। তবে তিনি প্রায় নিশ্চিতভাবেই জার্মানির পরবর্তী চ্যান্সেলর হতে চলেছেন। নির্বাচনে তার নেতৃত্বাধীন রক্ষণশীল সিডিইউ/সিএসইউ জোট সর্বাধিক ভোট পেতে যাচ্ছে।

নির্বাচনী প্রচারের সময়, পার্লামেন্টে ভোট জিততে চরম ডানপন্থীদের সমর্থন নেওয়ার সিদ্ধান্ত ম্যার্ৎসের জন্য একটি বড় বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। যদিও তিনি পরে বলেছেন, অভিবাসনবিরোধী দল এএফডির সঙ্গে তিনি কখনো জোট করবেন না এবং জার্মানির রাজনৈতিক সীমারেখা অক্ষুণ্ন রাখবেন।  

দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কঠিন হলেও ম্যার্ৎসের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলো আসতে পারে জার্মানির বাইর থেকে। এক সময় করনীতিকে সহজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনপ্রিয় হয়েছিলেন। তবে সেটি থেকে বাস্তবতা এখন অনেক বেশি জটিল।

তিন সন্তানের বাবা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস উড়োজাহাজ চালনায় আগ্রহী, কিন্তু তার স্ত্রী শর্ত দিয়েছিলেন— সন্তানেরা বাড়ি ছাড়ার আগে তিনি ব্যক্তিগত জেট কিনতে পারবেন না। এখন শোনা যায়, তার দুটি জেট রয়েছে। ক্ষমতায় এসে তিনি শুরু থেকেই নিজের অবস্থান দৃঢ় করতে চাইবেন। তবে তার সামনে রয়েছে বিশাল চ্যালেঞ্জ।

নির্বাচনী প্রচারের শুরুতে ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস নিজেকে আত্মবিশ্বাসী ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে তুলে ধরেছিলেন, যিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি চুক্তি করতে পারবেন। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি অবস্থান বদলাতে বাধ্য হন, যখন ট্রাম্প রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন নিয়ে হঠাৎ নীতি পরিবর্তন করেন।

একসময় আশাবাদী ট্রান্সআটলান্টিক নীতির সমর্থক ম্যার্ৎস শীর্ষ পদে পৌঁছানোর আগেই বাস্তব রাজনীতির প্রথম ধাক্কা খান। এতে তার আত্মবিশ্বাসী ভাবমূর্তি বদলে গিয়ে তাকে চিন্তিত ও গম্ভীর বাস্তববাদী নেতায় পরিণত করে, আর তার বক্তব্যেও দ্রুত পরিবর্তন আসে।

ট্রাম্প যখন ইউক্রেনকে যুদ্ধের জন্য দোষারোপ করলেন, তখন ম্যার্ৎস তার হতবাক হওয়ার অনুভূতি লুকানোর চেষ্টা করেননি। তিনি বিষয়টিকে ‘দোষী-ভুক্তভোগী সম্পর্ক উল্টে দেওয়ার ক্লাসিক উদাহরণ’ বলে আখ্যা দেন।

বাংলাদেশ সময়: ০০০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫
আরএইচ 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।