ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

আর্থিক সহায়তা পেলেন রানী সরকার

বিপুল হাসান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৬ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১১

আমাদের দেশের অনেক শিল্পীই বার্ধ্যক্যে পৌঁছে প্রচন্ড আর্থিক অনটনে পড়ে যান। অনেক সময় চিকিৎসা খরচ যোগানোই সহায়-সম্বলহীন শিল্পীর জন্য কঠিন হয়ে যায়।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ষাট ও সত্তর দশকের ডাকসাইটে অভিনেত্রী রানী সরকার এমনই একজন। আর্থিক অসামর্থ্যরে কারণে অসুস্থাবস্থায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করানো তার পক্ষে হয়ে উঠে দুঃসাধ্য। চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির উদ্যোগে ঢাকার মেয়রের চিকিৎসা তহবিল থেকে রানী সরকার পেলেন আর্থিক সহায়তা।

গত দুই মাস আগে বর্ষিয়ান চলচ্চিত্রাভিনেত্রী রানী সরকারের গলব্লাডারে পাথর ধরা পড়ে। আর্থিক অসামর্থ্যে কারণে তার পক্ষে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ হয়ে উঠে অসম্ভব।   অসুস্থ শরীরেই তিনি দিনযাপন করছিলেন। এ অবস্থায় চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সাবেক সভাপতি বরেণ্য চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলাম, বর্তমান সভাপতি মহম্মদ হাননান ও মহাসচিব এফ আই মানিক উদ্যোগে ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকার চিকিৎসা তহবিল থেকে রানী সরকারের জন্য আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়।

এফডিসিতে পরিচালক সমিতির অফিসে গত ৯ জুন বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকার মেয়রের পক্ষ থেকে রানী সরকারের হাতে নগদ এককালীন ৫০ হাজার টাকা অর্থ-সাহায্য তুলে দেন সমিতির সভাপতি মহম্মদ হাননান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক সিবি জামান, নূর মোহাম্মদ মনি, মোহাম্মদ সাফি, আলম ফিরোজ, মুশফিকুর রহমান গুলজার, আহমেদ ইলিয়াস ভুঁইয়া, সাংবাদিক ও কাহিনীকার আহমদ জামান চৌধুরীসহ আরো অনেকে।


এক সময়ের দুর্দান্ত খল-অভিনেত্রী রানী সরকার বাংলানিউজের কাছে  নিজের মনের অনুভূতির কথা জানিয়ে বলেন, সামাজিক অবস্থানের কারণে একজন শিল্পীর পক্ষে আর্থিক অসামর্থ্যের কথা প্রকাশ করা অনেক সময় সম্ভব হয় না। তাই শেষ বয়সে কর্মহীন অবস্থায় অভাব-অনটনের মধ্যে শিল্পীকে দিন কাটাতে হয়। জীবনের শেষপ্রান্তে পৌঁছে আমার অবস্থাও এমন শোচনীয় হয়ে উঠে।   অসুস্থতার মধ্যে জরুরী ওসুধপত্র কিনতে আমি হয়ে পড়ি অক্ষম। অসুস্থ শরীরে বিছানায় শুয়ে শুয়ে মৃত্যুর প্রহর গোনা ছাড়া আমার আর করার কিছু ছিল না। এ অবস্থায় পরিচালক সমিতি আমার চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা সংগ্রহে এগিয়ে আসে। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। কৃতজ্ঞতা জানাই ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকাকে।

রানী সরকার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি একজন শিল্পী। জীবনের সোনালী সময়গুলো আমি চলচ্চিত্রের পিছনে ব্যয় করেছি। নিজের ভবিষ্যতের কথা ভাবিনি। আমার চরম সংকটে যেখানে শিল্পী সমিতির এগিয়ে কথা, সেখানে তারা আমার কোনো খোঁজই রাখে নি। এটি দুঃখজনক। দুঃস্থ শিল্পীদের সহযোগিতার দায়িত্ব শিল্পী সমিতিরই পালন করার কথা। এক্ষেত্রে পরিচালক সমিতি আমাকে আর্থিকভাবে সাহায্যের উদ্যোগ নিয়ে তাদের উদারতার পরিচয় দিয়েছে। আমি আশা করছি, পরিচালক সমিতির এই উদ্যোগ থেকে শিল্পী সমিতির শিক্ষা গ্রহণ করবে এবং অসহায় শিল্পীদের পাশে দাঁড়াবে।

রানী সরকার বাংলা নিউজকে জানালেন, চিকিৎসক তাকে গলব্লাডারে পাথর সরানোর জন্য অপারেশনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। অপারেশন করানোর খরচ ছিল না বলেই এতোদিন তাকে তীব্র শারীরিক কষ্ট বহন করতে হয়েছে। এবার গলব্লাডারের অপারেশনটা শিগগিরই তিনি করাতে পারবেন।

বাংলাদেশ সময় ২১৩০, জুন ১০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।